Business News

Displaying 101-110 of 172 results.

মংলা বন্দর আমদানিনির্ভর

Picture

রপ্তানি নয়, আমদানি পণ্যেই সচল দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মংলার কার্যক্রম। এই বন্দর দিয়ে বছরে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে, তার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি আমদানি। ফলে এ বন্দরের কার্যক্রম মূলত আমদানিনির্ভর।
আবার এই আমদানির অর্ধেকই সরকারি পণ্য। অর্থাৎ সরকারিভাবে পণ্য আমদানি না থাকলে বা কম থাকলে মংলা বন্দরে কার্যত তেমন কর্মব্যস্ততা থাকত না।
মংলা বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এবং বন্দর সরেজমিনে পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এ চালচিত্র পাওয়া গেছে।
এ বন্দর দিয়ে ১০ প্রকারেরও বেশি পণ্য আমদানি হলেও রপ্তানি হয় মাত্র তিন ধরনের পণ্য।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরের মংলা বন্দর দিয়ে প্রায় সাড়ে ২৯ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করা হয়। তার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র দুই লাখ মেট্রিক টন পণ্য। সেই হিসাবে বছরটিতে বন্দর কার্যক্রমের প্রায় ৯৩ শতাংশই ছিল আমদানিনির্ভর।
এ ছাড়া চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে এই বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে প্রায় ১১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৫৯ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। অর্থাৎ চার মাসে বন্দর কার্যক্রমের প্রায় ৯৫ শতাংশ ছিল আমদানিনির্ভর। আবার এই আমদানির মধ্যে চার লাখ মেট্রিক টনই ছিল সরকারি গম ও সার।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এমনিতেই বাংলাদেশে রপ্তানির চেয়ে আমদানির পরিমাণ বেশি। তার মধ্যে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয় তার সিংহভাগই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। তবে আমদানিনির্ভরতা বেশি হলেও এ ক্ষেত্রে মংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ নেই বেসরকারি আমদানিকারকদের। অবকাঠামোগত ঘাটতিই এর প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মংলা বন্দরকে সচল করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য ও সারের আমদানির ৪০ শতাংশ মংলা বন্দরের মাধ্যমে খালাসের নির্দেশ জারি করে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮-০৯ সালে মংলা বন্দরে আমদানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে পাঁচ লাখ ও নয় লাখ মেট্রিক টন। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে তা ২৫ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়েছে।
জানতে চাইলে বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মাহবুবুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মংলা বন্দর ব্যবহারে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ কম। তাই এ বন্দরে কার্যক্রম বৃদ্ধিতে বর্তমান সরকার বিশেষ উদ্যোগ নেয়। তবে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত যেন এই বন্দর ব্যবহারে এগিয়ে আসে, সেই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ’
এদিকে বেসরকারি আমদানিকারকেরা বলছেন, সমুদ্রপথে বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে বন্দরে আধুনিক যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার তা মংলা বন্দরে নেই। অবকাঠামোর পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
বন্দর সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, খাদ্যশস্য ও সার ছাড়া এই বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া অন্যান্য পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সিমেন্ট তৈরির বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল।
মংলা বন্দরসংলগ্ন এলাকায় স্থাপিত কিছু সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এই বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানি করে থাকে। এছাড়া রিকন্ডিশন্ড গাড়িও আসছে।
রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে মংলা বন্দর পাট, পাটজাত পণ্য ও চিংড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর মধ্যে পাট ও চিংড়ির প্রায় পুরোটাই বেসরকারি খাতের রপ্তানিকারকেরা করে থাকে। দেশের রপ্তানি পণ্যের অন্যতম চিংড়ির উৎপাদন দক্ষিণাঞ্চলকেন্দ্রিক। তাই ওই অঞ্চলের পণ্য রপ্তানিতে মংলা বন্দরকে ব্যবহার করেন রপ্তানিকারকেরা।
খুলনার শিল্পোদ্যোক্তা ও হ্যামকো গ্রুপের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘মংলা বন্দরকে একটি পূর্ণ বন্দরে রূপ দিতে হলে এ অঞ্চলে শিল্পোন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।’

http://www.prothom-alo.com/economy/article/83557


সূচকের উন্নতিতে পুঁজিবাজারের টানা তৃতীয় দিন

মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে সিমেন্ট ও জ্বালানি খাত

সূচকের উন্নতি দিয়ে পুঁজিবাজারে শুরু হয়েছে নতুন সপ্তাহ। এর আগে গত সপ্তাহের শেষ দুই দিনসহ গতকাল পুঁজিবাজারগুলো সূচকের উন্নতিতে পার করল টানা তৃতীয় দিন। খুব বেশি উল্লেখযোগ্য না হলেও বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সূচকের সামান্য উন্নতিকেও ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও ফান্ডগুলোর বেশির ভাগের মূল্যবৃদ্ধিও সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিকসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এনে দিচ্ছে স্বস্তি। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারই দিনের লেনদেন শেষ করে সূচকের উন্নতি দিয়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ডিএসইএক্স সূচকটি দিনশেষে ১৪ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ডিএসই-৩০ সূচকের উন্নতি ঘটে ১৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট। অপর দিকে চট্টগ্রাম স্টকে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের যথাক্রমে ৫৫ দশমিক ৬৭ ও ৪৬ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট উন্নতি ঘটে। লেনদেনও ছিল দুই বাজারের শেষ কার্যদিবষের মতোই। ঢাকায় কিছুটা কমে ৪৯৮ কোটি টাকায় নামলেও চট্টগ্রামে তা ৫২ কোটি টাকায় স্থির থাকে। এ দিকে সূচকের বড় ধরনের উন্নতি না হলেও বাজারগুলো লেনদেনের গতি ধরে রাখায় দুই বাজারের বিনিয়োগকারীরা বেশ স্বস্তিতে। তাদের মতে, প্রতিদিন সূচকের বড় ধরনের উন্নতির চেয়ে বড় কথা এর ধারাবাহিকতা। পরে সংশোধন। আর এভাবেই এক সময় স্থিতিশীলতায় ফিরবে বাজার। হঠাৎ সূচকের মাত্রাতিরিক্ত উন্নতি ও পরদিনই আবার একই রকম দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে তা প্রকারান্তরে বাজারে অস্থিতিশীলতার জন্ম দেয়। এ অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি চান তারা। বরং বাজার সূচকের সামান্য উন্নতি ধরে রাখার পাশাপাশি লেনদেনের অগ্রগতিকেই এখন স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজনীয় মনে করছেন তারা। বরাবরের মতোই গতকাল সকালে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়ই দুই বাজারের লেনদেন শুরু হয়। প্রথম আধঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচকটি উন্নতি ঘটে প্রায় ২২ পয়েন্ট। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ করা ডিএসই সূচকটির চার হাজার ২৪১ পয়েন্ট থেকে লেনদেন শুরু করে বেলা ১১টায় সূচকটি পৌঁছে যায় চার হাজার ২৬৩ পয়েন্টে। কিন্তু পরবর্তী আধঘণ্টার বিক্রয়চাপ সূচককে আবার নি¤œমুখী করলে বেলা পৌনে ১২টার দিকে সূচকটি আবার নেমে আসে চার হাজার ২৩৩ পয়েন্টে। লেনদেনের এ পর্যায়ে ফের ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার সূচক। মাঝে মধ্যে সূচকের ওঠানামা সত্ত্বেও এ সময় সূচকের আবারো উন্নতি ঘটে। বেলা দেড়টার দিকে সূচকটি দিনের সর্বোচ্চ চার হাজার ২৭১ পয়েন্টে পৌঁছে যায়। দিনের সমন্বয় শেষ হলে চার হাজার ২৫৬ পয়েন্টে স্থির হয় ডিএসই সূচক। বিগত সপ্তাহটির প্রায় পুরোটাই ব্যাংকিং খাত মূল্যবৃদ্ধি ধরে রাখলেও গতকাল দুই বাজারের চিত্র তার বিপরীত। ব্যাংকিং খাতের বেশির ভাগ কোম্পানিই গতকাল দরপতনের শিকার হয়। একই অবস্থা ছিল মিউচুয়াল ফান্ডেরও। ক’দিন মূল্যবৃদ্ধির পর গতকাল এ খাতেও বেশ সংশোধন হয়। তবে এগিয়ে যায় সিমেন্ট ও জ্বালানি খাত। এ দুই খাতের শত ভাগ কোম্পানিরই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। এ ছাড়া এ ক’দিন দরপতনের শিকার প্রকৌশল, সিরামিকস, টেক্সটাইল ও বীমা খাতেও ভালো মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে দেখা যায়। বাজার আচরণের এ পরিবর্তনকেও স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কোনো খাতের মূল্যবৃদ্ধির পর যথাসময়ে তার সংশোধন ঘটলে অন্য খাতগুলোয় মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়। বাজারের সাম্প্রতিক প্রবণতা সেদিকেই যাচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এক দিকে বাজারগুলোর লেনদেনে ভারসাম্য ফিরে আসবে, অন্য দিকে স্থিতিশীলতা ত্বরান্বিত হবে। গতকাল দুই বাজারে লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগই মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসে। ঢাকায় লেনদেন হওয়া ২৮৫টি সিকিউরিটিজের মধ্যে দাম বাড়ে ১৮৪টির। ৭৬টি সিকিউরিটিজ দর হারায়। অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২১৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে ১২৬টির দাম বাড়লেও দর হারায় ৭৩টি। ১৮টি সিকিউরিটিজ এ বাজারে দর হারায়। গতকালও ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষস্থানটি দখলে ছিল জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন্সের। এ নিয়ে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে টানা চতুর্থ দিন পার করল কোম্পানিটি। গতকাল ২৯ কোটি ৮২ লাখ টাকায় ৯৩ লাখ ৭৪ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় কোম্পানিটির। ২০ কোটি ১১ লাখ টাকা লেনদেন করে দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রাখে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। ডিএসইর শীর্ষ দশে আরো ছিল আর এন স্পিনিং, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, ঢাকা ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। দিনের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস। ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম বাড়ে প্রকৌশল খাতের সর্বশেষ তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির। এ ছাড়া দেশ গার্মেন্টস ৯.৮৮, বিডি অটোকার ৯.৬৭, সেন্ট্রাল ফার্মা ৯.৩৬, জিবিবি পাওয়ার ৮.৫৭ ও সায়হাম টেক্সটাইলের ৮.০৮ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অপর দিকে দিনের সর্বোচ্চ দর হারায় টেক্সটাইল খাতের আনলিমা ইয়ার্ন। রেকর্ড-পরবর্তী মূল্য সমন্বয়ে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি। এ ছাড়া ডেল্টা লাইফ হারায় ৮.১৬ শতাংশ দর।

http://www.dailynayadiganta.com/welcome/post/31549



শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে হবে

Picture

পোশাকশিল্পের মালিক ও শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে নিশা দেশাইর বৈঠক

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উন্নয়নে কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এসব কাজের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশ বিশ্বের ১ নম্বর তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হতে পারে।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল রোববার দুপুরে তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতাদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় নিশা দেশাই এসব কথা বলেন। বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে নিসা বিসওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের শ্রম অবস্থার উন্নতি করতে শিল্প উদ্যোক্তা, শ্রমিক, সরকার, সুশীলসমাজসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একযোগে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রসরমান অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে এ ধরনের একযোগে কাজ করাকে স্বাগত জানাই।’
অন্যদিকে আতিকুল ইসলাম জানান, বিজিএমই শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধাই চায়নি, জিএসপিসুবিধা পুনর্বিবেচনার অনুরোধও করেছে। এ ছাড়া বৈঠকে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর বিষয়টিও সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। সমিতির সভাপতি পোশাক কিনতে ন্যায্য মূল্য প্রদানের জন্য মার্কিন এই মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বৈঠকে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় রপ্তানি কার্যক্রম কীভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেই বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তিনি জানান, শুল্কমুক্ত বাজার কিংবা জিএসপিসুবিধা পুনর্বিবেচনার দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন নিশা বিসওয়াল।
বৈঠকে উপস্থিত সমিতির নেতারা জানান, বৈঠকে নিশা দেশাই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের সার্বিক অবস্থা জানতে চান। এই অঞ্চলে বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার যে দৃষ্টিভঙ্গি তা আলোচনায় তুলে ধরেন তিনি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে শিল্পটিতে ইউনিয়নভিত্তিক শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শিল্পে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম ও রিয়াজ-বিন-মাহমুদ, সমিতির কয়েকজন পরিচালক ও মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়: এর আগে বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে সকালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নিশা দেশাই।
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটি (বিসিডব্লিউএস) সাধারণ সম্পাদক কল্পনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কর্মপরিবেশের উন্নয়ন ও শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার ও মালিকপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে নিশা দেশাই জানতে চেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা কী কী সে সম্পর্কে তিনি খোঁজ নেন।
রানা প্লাজা ধস ও যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি বাতিলের পর তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার দেওয়া হয়েছে। বাস্তবে শ্রমিকেরা এ অধিকার কতটা পাচ্ছেন জানতে চান সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় শ্রমিকনেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের এ অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। অথচ এখানে ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে একধরনের অদৃশ্য চাপের মধ্যে রয়েছেন শ্রমিকেরা। এ ছাড়া রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ট্রেড ইউনিয়ন না থাকায় এক দেশে দুই আইন চলছে এমন অভিমত দেন শ্রমিকনেতারা।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/75874/


এক দশকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র দ্বিগুণ

এক দশকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র দ্বিগুণ

এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে ৮০ লাখ ৭৫ হাজাার ৭০৪টি খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে এসব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ২০০৩ সালে এর সংখ্যা ছিল ৩৭ লাখ আট হাজার ১৪৪টি খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩-এর প্রাথমিক ফলাফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এই শুমারি পরিচালনা করেছে। উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৮৬, ২০০১ ও ২০০৩ সালে অর্থনৈতিক শুমারি হয়েছিল।
গতকাল রোববার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের প্রাথমিক ফলাফল বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আঞ্চলিক বৈষম্য এখনো বিদ্যমান। তবে আঞ্চলিক পর্যায়ে ব্যবসা ও শিল্পায়নে ভারসাম্যপূর্ণ অগ্রগতি হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে উচ্চমাত্রার প্রবৃদ্ধি গ্রামীণ অর্থনীতিকে বিকশিত করেছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়া দেশের অর্থনীতি ক্রমশ প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে মত দেওয়া হয় এই শুমারিতে।
আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে অর্থনৈতিক শুমারির প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান হয়। এতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, অন্য খাতগুলো এগিয়ে গেলেও তুলনামূলকভাবে শিল্পোৎপাদন খাত পিছিয়ে আছে। এই নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে হবে।

প্রাথমিক ফলাফল
২০১৩ সালের অর্থনৈতিক শুমারিতে দেখা গেছে, এক দশকের ব্যবধানে অর্থনৈতিক ইউনিট বৃদ্ধির হার ১১৮ ভাগ।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আঞ্চলিক বৈষম্যের চিত্র হিসেবে শুমারির ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭২টি খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৭টি, রাজশাহীতে ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৩টি, রংপুরে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৫টি, খুলনায় ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮১টি, বরিশালে তিন লাখ ৮৫ হাজার ২৩৩টি খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম তিন লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৩টি খানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এ ছাড়া ব্যবসা ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ অগ্রগতি রয়েছে বলে শুমারির ফলাফলে বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ১৯৮৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বরাবরের মতো শীর্ষ স্থানে রয়েছে। তবে অন্য বিভাগগুলোয় অর্থনৈতিক ইউনিট বৃদ্ধির হার সমানুপাতিক হারে হয়েছে। বিগত তিন দশকে সব বিভাগেই প্রায় সমান ও ঊর্ধ্বগামী প্রবণতা বহাল রয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফলে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে, প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে। স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সময়ের ব্যবধানে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৮৬ সালে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৯। আর ২০১৩ সালে এসে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬।
দেশে খানা বা পরিবারভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। ২০১৩ সালে খানাভিত্তিক অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৯৮টি। ২০০৩ সালে ছিল মাত্র তিন লাখ ৮১ হাজার ৫৫টি।
এ ছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে দরিদ্রপীড়িত রংপুর বিভাগে ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে। এ বিভাগে ১৯৮৬ সালে অর্থনৈতিক ইউনিট ছিল দুই লাখ আট হাজার ১৩৫টি, যা বেড়ে ২০১৩ সালে হয়েছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৫টি।

আলোচনা
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির আয়তন বেড়েছে। অর্থনীতির অফুরন্ত সম্ভাবনার সঙ্গে বাস্তব অর্জনও অনেক। সেবা খাতে অনেক সম্প্রসারণ হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা এখন শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, ‘পরিসংখ্যান নিয়ে অনেক সময় আমরা ঝগড়া করি। কিন্তু আমাদের দেখা উচিত, পরিসংখ্যানের গতিধারা কেমন।’
পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুস সামাদ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব নজিবুর রহমান, বিবিএস মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল ও প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/75865/


মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক কোটি ছাড়িয়েছে

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক কোটি ছাড়িয়েছে

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা এক কোটি পেরিয়েছে। গ্রাহক সংখ্যা ৬ মাসের ব্যবধানে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত সোমবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ২ লাখ ৩৫ হাজার। গত এপ্রিল মাসে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৫০ লাখের কাছকাছি। মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে গ্রাহক সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। দেশে ২০১০ সালে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস তথা মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয়। বর্তমানে ১৯টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। আরও ৯টি ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং করার অনুমোদন রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের সহযোহী প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’ এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস সাফল্য পেয়েছে। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত উপকারভোগীদের কাছে দ্রুততম সময়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তবে সময়ের ব্যবধানে এ সেবার ব্যাপ্তি বেড়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বর্তমানে টাকা পাঠানো, জমা ও উত্তোলন, বেতন-ভাতা পরিশোধ, গ্যাস-বিদ্যুত্সহ ইউটিলিটি বিল পরিশোধ ইত্যাদি সম্ভব হচ্ছে।
পরিসংখ্যান অনুসারে গত অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই হাজার ১৬৪ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে। ব্যাংক থেকে উঠানো হয়েছে এক হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা এবং এক হিসাব থেকে অন্য হিসাবে স্থানান্তর হয়েছে ৭৭৮ কোটি টাকা।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/14/224465


নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য শিল্পপার্ক স্থাপনের দাবি ডিসিসিআই’র

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য শিল্পপার্ক স্থাপনের দাবি ডিসিসিআই’র

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য শিল্পপার্ক স্থাপনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)। গতকাল বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ দাবি জানান। ২ হাজার নতুন উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে বিসিক কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবসার করিম চৌধুরী, বিসিক চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডিসিসিআই পরিচালক এম আবু হোরায়রা, হোসেন এ সিকদার, আব্দুস সালাম এবং মো. শোয়েব চৌধুরী এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবসার করিম চৌধুরী বলেন, বেকারত্ব সমস্যা দূর করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে উদ্যোক্তা তৈরির বিকল্প নেই। তিনি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পজাত পণ্যের বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণে বিসিকিকে আরও কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ঢাকা চেম্বার ও বিসিক যৌথভাবে একটি শিল্পপার্ক স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই পরিচালক আলহাজ আব্দুস সালাম পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের জন্য এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জে নির্ধারিত শিল্প এলাকার উন্নয়নের কাজ আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার আহ্বান জানান।
বিসিক চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ডিসিসিআই গৃহীত ২ হাজার নতুন উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্পকে যুগোপযুগী আখ্যায়িত করে এসব নতুন উদ্যোক্তাকে বিসিক শিল্পনগরীতে শিল্প প্লট পেতে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তিনি আরও জানান, বিসিক শিল্পনগরীতে আলাদা মুদ্রণ শিল্প এলাকা তৈরির কাজ চলছে। তিনি বলেন, আমাদের হস্তশিল্পের পণ্য বিশ্ববাজারে অনেক চাহিদা রয়েছে আর এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে একটি হস্তশিল্প নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।
মতবিনিময় সভায় বিসিকের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা, পরিচালক (অর্থ) মো. মনসুর রেজা চৌধুরী, পরিচালক পাতিত পবন বৈদ্য, মিসেস রামা রানী রায় এবং বিসিক সচিব মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/14/224463


পোশাকশ্রমিকেরা ৫৩০০ টাকাই মজুরি পাচ্ছেন

পোশাকশ্রমিকেরা ৫৩০০ টাকাই মজুরি পাচ্ছেন

পোশাকশিল্পের মালিকদের উৎসে কর হ্রাসসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রস্তাবিত মজুরিকাঠামোতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে। একই সঙ্গে শ্রমিকদের বার্ষিক প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও বাড়বে।

এসব বিষয় নিয়ে গতকাল বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রম মন্ত্রণালয়, পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পোশাক কারখানার মালিকেরা ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা দিতে রাজি হয়েছেন। অন্যদিকে মালিকেরা যেসব দাবি করেছেন, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এসে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা মজুরি বোর্ডের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। বিষয়টি শ্রমসচিব মিকাইল শিপারও নিশ্চিত করেছেন।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এর আগে বিজিএমইএ শ্রম মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিল যে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবিত পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা মজুরি দিতে রাজি আছে, যদি তাদের তিনটি সুবিধা দেওয়া হয়। এর একটি হচ্ছে উৎসে কর হ্রাস। বর্তমানে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ হারে উৎসে কর দিলেও এখন মালিকপক্ষ দিতে চাইছে মাত্র শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া ব্যাংকঋণের সুদের হার কমানো এবং ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডার বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ২ শতাংশ নগদ সহায়তার দাবি জানানো হয়েছে।

পুরো বিষয়টি জানাতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ৫৫টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছে শ্রম মন্ত্রণালয়। মজুরি নিয়ে আশুলিয়া ও গাজীপুর এলাকায় কয়েক দিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ হচ্ছে।

জানা গেছে, নতুন মজুরিকাঠামো মেনে নেওয়ার বিষয়টি পোশাক খাতের নেতারা আজ সংবাদ সম্মেলন করে জানাবেন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিম্নতম মজুরি বোর্ড শ্রমিকদের যে মজুরি প্রস্তাব করেছে, তাতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে। মাসিক মূল মজুরি কমিয়ে খাদ্য ভর্তুকি বাড়ানো হবে। এ ক্ষেত্রে একজন শ্রমিক যাতে কমপক্ষে ২৫ টাকা খাদ্যভাতা পান, সে হিসেবে খাদ্য ভর্তুকি ৩০০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করা হবে। তবে সর্বনিম্ন মূল মজুরি তিন হাজার ২০০ টাকা থেকে কমিয়ে তিন হাজার টাকা করা হতে পারে। এ ছাড়া ওপরের ছয় গ্রেডের মূল মজুরি কমানো হতে পারে।

জানতে চাইলে মজুরি বোর্ডের শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা প্রতিদিন দুই থেকে চার ঘণ্টা ওভারটাইম করেন। এখন মূল মজুরি কমিয়ে দিলে শ্রমিকেরা ওভারটাইমের জন্য কম টাকা পাবেন। শ্রমিকদের ঠকাতে এটা মালিকপক্ষের পুরোনো কৌশল।

নিম্নতম মজুরি বোর্ড যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা থেকে সরে এলে আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে বিবেচনায় মালিকদের সুবিধা দিয়ে হলেও শ্রমিকদের পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা মজুরি নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/73720


২১ নভেম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ : শ্রমমন্ত্রী

২১ নভেম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ : শ্রমমন্ত্রী

আগামী ২১ নভেম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। তিনি বলেছেন, শ্রমিক ও মালিকপক্ষ উভয়ের জন্য একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত আসবে। মালিকদের কাছ থেকে শুধু নিয়ে যাওয়া নয়, তাদেরও তো কিছু দিতে হবে।
গতকাল সচিবালয়ে এক ব্রিফিংকালে শ্রমমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ। শ্রমমন্ত্রী বলেন, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তে মালিকপক্ষ রাজি হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়। আশা করছি ২১ নভেম্বরের মধ্যেই মজুরি বোর্ডের ঘোষণা আসবে। তিনি বলেন, হরতাল ও শ্রম অসন্তোষের কারণে বিশ্বে শ্রমবাজার হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ৪২ লাখ শ্রমিক এই খাতে কাজ করে। তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকদের অবস্থা শোচনীয় হবে বলেও মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আনিসুল হক, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি টিপু মুন্সি, আবদুস সালাম মুর্শেদী, আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী পারভেজ, বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান ও শ্রমসচিব মিকাইল শিপার।
গত ৪ নভেম্বর পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করে মজুরি বোর্ড। এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা সভা থেকে বেরিয়ে যান। পরেরদিন সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এবং ১২টি শ্রমিক সংগঠন।
শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণে মজুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে কারখানা বন্ধের হুমকি দেয় পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি ধরে বেতন দেয়া সম্ভব নয়। সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের দাবি জানায় সংগঠন দুটি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মজুরি বোর্ডকে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়। এ সময় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না হলে সারাদেশে একযোগে সব কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণাও দেয়া হয়।
অপরদিকে ন্যূনতম ৮ হাজার ১১৪ টাকা মজুরি করার দাবি জানিয়ে দু’সপ্তাহের আলটিমেটাম দেয় ১২টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১৮ নভেম্বর থেকে ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেয়া হয় শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কার্যালয়ে শ্রমিকদের ১২টি সংগঠনের নেতাদের বৈঠকের পর এ সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়।

www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/12/224249

 

 


৫০৮ কোটি টাকার লেনদেন : দেড় মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন

৫০৮ কোটি টাকার লেনদেন : দেড় মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন

হরতালে ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি কম হলেও দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন বাড়ছে। গতকাল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৫০৮ কোটি টাকা। গত দেড় মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইর সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে সর্বোচ্চ ৫২৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
বিশ্লেষকরা জানান, হরতালের কারণে বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি কম হলেও ফোনের মাধ্যমে লেনদেনে অংশ নিচ্ছেন তারা। বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউসে অনলাইন ট্রেডিং সুবিধা চালু রয়েছে। ফলে লেনদেনে অংশ নেয়ার জন্য এখন আর আগের মতো ব্রোকারেজ হাউসে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হয় না। গত কয়েকদিন ধরে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়ে যাওয়ার কারণে বিকল্প উপায়ে বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে অংশ নিচ্ছেন। উপরন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বাজারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এ কারণে শেয়ারবাজারে লেনদেন বাড়ছে। তবে, সাময়িকভাবে কিছুটা গতি ফিরে এলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজমান অস্থিরতা দূর না হলে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না বলে তারা মনে করছেন।
এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে দরবৃদ্ধির পর সূচক কমেছে। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দরবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা বেশি হলেও মূলত ব্যাংকিং খাতের অধিকাংশ কোম্পানির দর কমে যাওয়ায় দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক (ডিএসইএক্স) ৪৬ পয়েন্ট কমেছে। দিনশেষে সূচক ৪ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৪৮টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৪টি কোম্পানির দর এবং অপরিবর্তিত ছিল ২০টি কোম্পানির দর। আগের দিনে দর বৃদ্ধি ও লেনদেনে ব্যাংকিং খাতের প্রাধান্য থাকলেও গতকাল দরবৃদ্ধিতে বস্ত্র খাতের প্রাধান্য ছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকালে সূচকের বৃদ্ধি দিয়ে লেনদেন শুরুর পর থেকেই ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর দর বাড়তে থাকে। কিন্তু এক পর্যায়ে খাতটির বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে থাকে। ফলে দিনশেষে খাতটির তিনটি ছাড়া সবকটিরই দর কমেছে। মূলত খাতটির দরপতনের কারণেই সূচক ব্যাপক ওঠানামা করতে থাকে। দিনশেষে ডিএসইর সাধারণ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে। মোট ১ শতাংশ হারে সূচক কমেছে। মূল সূচক কমলেও সেখানকার বাছাই সূচকের কোনো পতন ঘটেনি। ডিএসই-৩০ সূচকটি আগের দিনের ১ হাজার ৪৩৬ পয়েন্টেই রয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো : আর এন স্পিনিং, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড এয়ার, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, আইএফআইসি, আর্গন ডেনিমস এবং সিটি ব্যাংক।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/12/224248#


বাংলাদেশের পোশাকশিল্প সংস্কারে প্রভাব খাটানোর আহ্বান

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সর্বদলীয় কমিটির প্রতিবেদন

বাংলাদেশের পোশাকশিল্প সংস্কারে প্রভাব খাটানোর আহ্বান

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এখন এক সন্ধিক্ষণে বলে অভিহিত করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সর্বদলীয় এক কমিটি বলেছে, দুর্বল অবকাঠামো এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা এই শিল্পের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনা বাংলাদেশে ব্যবসার মানবিক মূল্য কতটা, তা প্রকাশ করে দিয়েছে উল্লেখ করে ব্রিটিশ এসব এমপি শ্রমিকদের অধিকার, ন্যূনতম মজুরি, আইন প্রয়োগ এবং সম্প্রতি সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার পূর্ণ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের ওপর প্রভাব খাটানোর জন্য পাশ্চাত্যের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শিল্প দুর্ঘটনার ইতিহাসের অন্যতম সবচেয়ে প্রাণঘাতী ট্র্যাজেডি রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক লোকের প্রাণহানির পর ব্রিটিশ এমপিদের এই দল বাংলাদেশে এক তথ্য অনুসন্ধানমূলক সফর করেন। সফরের সময় ও তারপর এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সর্বদলীয় কমিটি যে প্রতিবেদন তৈরি করে, তাতে এই শিল্পের গুরুত্ব এবং বিভিন্ন দুর্বলতার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়ে তাঁরা প্রায় ২৮টি সুপারিশ করেছেন।
সোমবার বিকেলে হাউস অব কমন্সের একটি কমিটি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের ৪৮ জন সদস্য বাংলাদেশ-বিষয়ক সর্বদলীয় কমিটির সদস্য। এঁদের মধ্যে কমিটির চেয়ার, টোরি পার্টির এমপি অ্যান মেইনসহ ছয়জন বাংলাদেশ সফর করেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অ্যান মেইন।

এসব সুপারিশের মধ্যে বাংলাদেশের সরকার, পাশ্চাত্যের বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্র্যান্ড, নির্মাণশিল্প এবং কারখানাসমূহে সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।

ব্রিটিশ এমপিরা অবশ্য একই সঙ্গে বলেছেন, এর পরিণতিতে দেশটি যাতে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে দিকটিও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একটি বৃহৎ বাজার এবং প্রধান দাতাদেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি দেশটির পোশাকশিল্পের সংস্কারে সহায়তার আহ্বান জানানো হয় এ প্রতিবেদনে। সর্বদলীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ফল হবে ক্ষতিকর। এ প্রসঙ্গে তাঁরা বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষার তথ্য উল্লেখ করেন, যাতে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন জিএসপি (শুল্কমুক্ত আমদানি) সুবিধা প্রত্যাহার করে নিলে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি ৪ থেকে ৮ শতাংশ পরিমাণে কমে যাবে।

সর্বদলীয় এই কমিটির প্রতিবেদনে রানা প্লাজা ধসের পর এই খাতে সংস্কারের বিষয়ে যে গতি সঞ্চার হয়েছে, তা বজায় রাখার মাধ্যমে খাতটির জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়। আগুন ও নির্মাণ কাঠামোর বিষয়ে যে জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কর্মপরিকল্পনা (এনটিএবি) স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের বর্তমান এবং নির্বাচনোত্তর সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা, দুর্যোগ, ত্রাণ এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার পরিকল্পনা এবং সে ক্ষেত্রে একজন মন্ত্রীর দায়িত্বে পর্যাপ্ত তহবিলের ব্যবস্থার কথাও এসব সুপারিশে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে তাঁরা বস্ত্রখাতসহ অর্থনীতির সব খাতে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা করে তাঁদের জীবনমান উন্নয়নে ন্যয়সংগত মজুরি নির্ধারণের জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ড প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।

ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বা ব্যান্ডগুলোকে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে কারখানায় কাজের রীতিনীতি, ব্যবস্থাপনার কৌশল এবং শ্রমিকদের প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে ব্রিটিশ এমপিরা বলেছেন, কারখানাগুলোতে সহযোগিতামূলক শিল্পসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচালনা কাঠামোতে শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো প্রয়োজন।

ভবনসমূহের নিরাপত্তা এবং কাঠামোগত ভিত্তি যাতে অটুট থাকে, সে জন্য বাংলাদেশের ইমারত নির্মাণ খাতে সংস্কারেরও কয়েকটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে আছে ভবনের নকশা তৈরি ও নির্মাণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্বাধীন, অরাজনৈতিক ও পেশাদার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আহ্বান। নির্মাণ প্রকৌশলীদের জন্য একটি জাতীয় অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড প্রতিষ্ঠা, একটি জাতীয় নির্মাণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং ভবন-সম্পর্কিত বিভিন্ন নকশা, নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, আইন লঙ্ঘন এবং সাজা ইত্যাদি সম্পর্কে একটি জাতীয় ডাটাবেইজ বা তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সরবরাহব্যবস্থা বা সাপ্লাই চেইনে স্বচ্ছ্বতা এবং জবাবদিহির অভাবের কথা উল্লেখ করে সর্বদলীয় কমিটি বলেছে, সাব-কন্ট্রাক্টিং ব্যবস্থা একটা সমস্যার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ব্রান্ডগুলোকে তাদের ক্রয় নীতিমালার ক্ষেত্রে ব্যবসার নৈতিক দিক এবং মানবাধিকারের বিষয়গুলোতে নজর দেওয়ার জন্যও এ প্রতিবেদনে আহ্বান জানানো হয়।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/71899