Business News

Displaying 51-60 of 172 results.

মূল্যছাড়ে বাড়তি আগ্রহ হোম টেক্সটাইলে

Picture

শেষ সময়ে এসে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। শুরুর দিকে কেবল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও এখন প্রতিদিনই দুপুর থেকে মেলায় মানুষের ঢল নামছে। মেলায় আগতদের মধ্যে একটি বড় অংশই ঢুঁ দিচ্ছেন হোম টেক্সটাইল সামগ্রীর বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টলে।
মেলায় অংশ নেওয়া হোম টেক্সটাইল সামগ্রী উৎপাদন ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নকশার বিছানার চাদর, লেপ ও কম্বলের বিকল্প হিসেবে কমফোর্টার, জানালা-দরজার পর্দা, কুশন কভার, বালিশ ইত্যাদি নিয়ে এসেছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছে তারা। ফলে এসব পণ্যের প্যাভিলিয়ন ও স্টলে সারাক্ষণ কম-বেশিই ভিড় লেগে থাকছে। গতকাল বুধবার মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
এবারের মেলায় সাড়ে তিন শ নকশার বিছানার চাদর নিয়ে এসেছে ক্লাসিক্যাল হোম টেক্স। তাদের চাদরের মূল্য ৬৫০ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। বিভিন্ন নকশার জানালা-দরজার পর্দা ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকা। তাদের প্রতিটি কমফোর্টারের দাম ১ হাজার ৯০০ থেকে ৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া বাচ্চাদের পুতুল, টাওয়েল ও গৃহসজ্জার পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছে হোম টেক্স। মেলা উপলক্ষে সব পণ্যে ক্রেতাদের ১০ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) আল আমিন বলেন, ‘বিছানার চাদর দিয়ে ৩৪ বছর আগে হোম টেক্সের যাত্রা শুরু হয়। আমরা সব ধরনের ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে পণ্য তৈরি করি। তাই ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দিতে বেগ পেতে হয় না।’ তিনি জানান, মেলায় তাদের নিজস্ব প্যাভিলিয়ন ছাড়াও দুটি ডিলার হোম টেক্সের পণ্য বিক্রি করছে।
কেমন সাড়া মিলল—এই প্রশ্নের উত্তরে আল আমিন বললেন, ‘বাণিজ্য মেলায় আমরা মূলত পণ্যের প্রচারের জন্য আসি। সারা দেশে হোম টেক্সের ৩৫০ ডিলার আছে। কিন্তু তারা একসঙ্গে সব ধরনের পণ্য নেয় না। ফলে ক্রেতারা সব পণ্য দেখতেও পান না। বাণিজ্য মেলায় একসঙ্গে সব পণ্য ক্রেতাদের সামনে প্রদর্শনের বিরাট সুযোগ মেলে। সেই হিসেবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি।’ তিনি জানান, ঢাকার গুলশান, বসুন্ধরা সিটি, ওয়ারী, উত্তরা ও যমুনা ফিউচার পার্কে হোম টেক্সের নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র আছে।
হোম টেক্সের মতো বিভিন্ন ধরনের বিছানার চাদর নিয়ে এসেছে পাকিজা হোম কালেকশন। প্রতিষ্ঠানটির চাদরের দাম ৬৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। ১০টি নকশার কমফোর্টারের দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা। পর্দা মিলবে ৫৫০ টাকায়। এ ছাড়া কুশন ও বালিশের কভার পাওয়া যাবে ২৫০ টাকায়। প্রতিটি পণ্যেই ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
পাকিজার প্যাভিলিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কর্মকর্তা মো. নাছির ও মো. ইব্রাহিম জানালেন, বাণিজ্য মেলায় ভালো বিক্রি-বাট্টা হয়েছে তাঁদের। তবে প্যাভিলিয়নের অবস্থান মেলা প্রাঙ্গণের একটু ভেতরের দিকে হওয়ায় অনেক ক্রেতার নজরে পড়ছে না।
প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হচ্ছে বেঙ্গল। তারাও হোম টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। অংশ নিয়েছে বাণিজ্য মেলায়। প্রতিষ্ঠানটির বিছানার চাদর ৪৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। তবে মেলায় ২৫ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে তারা। কমফোর্টারের দাম ২ হাজার ৭৫০ টাকা, আছে ৩৫ শতাংশ মূল্যছাড়ের সুবিধা। এ ছাড়া কুশন, টাওয়েল, কোল বালিশ, বালিশও নিয়ে এসেছে বেঙ্গল জানালেন বিক্রয়কর্মী তুনাজ জিনা।
কুষ্টিয়া থেকে নবমবারের মতো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছে কুষ্টিয়া হস্তশিল্প। প্রতিষ্ঠানটির বিছানার চাদরের দাম ৬০০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা। তবে মফস্বলের এই প্রতিষ্ঠানটি নজর কাড়ছে মাছ, সূর্যমুখী ফুল, টমেটো, স্ট্রবেরি, কাঁচামরিচ, গোলাপ ফুল আকৃতির কুশন দিয়ে। দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এ ছাড়া লুঙ্গি ও গামছা বিক্রি করছে তারা।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মনির হোসেন বলেন, ‘দর্শনার্থী অনেক থাকলেও এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। এ ছাড়া আগের প্রায় প্রতি মেলাতেই ব্যবসায়ী ক্রেতাদের পাওয়া গেলেও এবার পাইনি।’ তিনি জানান, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে তাঁদের নিজস্ব কারখানায় পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হয়। আর ঢাকার মৌচাকে নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র আছে।
এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও মেলার সময়সীমা কয়েক দিন বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে মেলার যৌথ আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা মেলা বাড়ছে না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে দায়দায়িত্ব নিয়ে কেউই স্পষ্ট করে কথাটি বলতে চাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে মেলার সদস্যসচিব রেজাউল করিম গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, আগামী রোববার মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হবে। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র অতিথিদের কাছে পাঠানো শুরু করেছে ইপিবি। ফলে মেলার সময়সীমা এবার আর বাড়ছে না বলেই মনে হচ্ছে।

তথ্যসূত্র : প্রথমআলো

ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার নির্বাচনে কমিশন গঠন

Picture

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ট্রেক বা শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচন করার জন্য কমিশন গঠন করেছে পরিচালনা পর্ষদ। মঙ্গলবার ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিমিউচুয়ালাইজেশনের (স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করা) শর্ত অনুসারে প্রথম বছর চারজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচিত হবেন। এর মধ্য পরের বছর একজন বিদায় নিবেন; তার বিপরীতে একজন পরিচালক নির্বাচিত হয়ে পর্ষদে যুক্ত হবেন। দ্বিতীয় বছর তিন জন থেকে একজন পরিচালক অবসরে যাবেন। তার বিপরীতে একজন নতুন পরিচালক আসবেন নির্বাচনের মাধ্যমে। শর্ত অনুযায়ী এবার একজন পরিচালক অবসরে যাবেন। তার বিপরীতে নির্বাচনের মাধ্যমে এক পরিচালক পর্ষদে যুক্ত হবেন।

সূত্র মতে, ডিএসইর নির্বাচন বিষয়ে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আব্দুস সামাদ। নির্বাচন কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন- হারুন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুন-উর-রশিদ এবং এম অ্যান্ড জেড সিকিউরিটিজ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মনজুর উদ্দিন আহমেদ। গঠিত কমিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।

এদিকে, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আলোচনার এক পর্যায়ে বলা হয়, যারা পুঁজিবাজার নিয়ে কথা বলছেন; তাদের অনেকের এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই। এটি কোনো জুয়ার বোর্ড নয়, বিনিয়োগের জায়গা।

পর্ষদের মতে, যদি পুরো সংবাদটি তথ্যনির্ভর নয়। এ ধরনের সংবাদের ফলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী, স্বতন্ত্র পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার পরিচালক সবাই মিলে একত্রে কাজ করবেন। যদি সবার মধ্যে ঐক্য না থাকে তাহলে স্টক এক্সচেঞ্জের কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

সূত্র মতে, ২০১০ সালের পর পুঁজিবাজারে অনেক সংস্কার হয়েছে। বাজার ভালো করার জন্য কাজ চলছে। একজনের পরিবর্তন হলেই বাজার ভালো হয়ে যাবে- এমন ধারণা ঠিক নয়।

ডিএসই মনে করে, পুঁজিবাজারে আস্থা নেই- এ কথাটিও সত্য নয়। আস্থা আছে, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে এ আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে।

সম্প্রতি বিনিয়োগ সম্মেলনে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদ পুঁজিবাজারকে জুয়ার কোট হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি খুবই খারাপ। বর্তমান বাজার মোটেই দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত নয়। স্বল্প মেয়াদে জুয়া ও গুজবনির্ভর মুনাফার জন্য হয়তো এখানকার বাজার ঠিক আছে।

এই বক্তব্যের সূত্র ধরে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

তথ্যসূত্র : অর্থসূচক

খাতভিত্তিক টার্নওভারে সেরা জ্বালানি

Picture

২০১৫ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) খাতভিত্তিক টার্নওভারে সেরা অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। খাতটি ২০১৪ সালের মতোই গত বছর সেরা পারফর্মেন্স করেছে। আলোচিত বছরে এই খাত মোট টার্নওভারের ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ লেনদেন করেছে। তবে এবারও তলানির মুখে ব্যাংক খাত।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ব্যাংক খাতের লেনদেন কমেছে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। আলোচিত সময়ে মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ ছিল ব্যাংক খাতের। ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ১৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকার। ২০১৫ সালে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ হাজার ১৫ কোটি ২২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার প্রবণতা, খাত নিয়ে সরকারের সদিচ্ছা জ্বালানি খাতকে এগিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, মন্দ ঋণ, অলস টাকার বিপরীতে বিনিয়োগ কম, বড় পেইড আপের শেয়ার হওয়ায় কেনাবেচা কম হয়েছে।

এ খাতের ১৮টি কোম্পানি পুরো বছরে লেনদেন করেছে ১৭ হাজার ৩৭ কোটি ৫৫ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৩ টাকার শেয়ার। পুরো বছরে খাতটির ২১৩ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৯৮১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

২০১৪ সালে মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ ছিল জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের। ওই বছর খাতটিতে লেনদেন হয় ১৭ হাজার ৬৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬২ টাকার। আর শেয়ারের অংকে যার পরিমাণ ছিল ১৯৪ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ৮২টি।

খাতভিত্তিক অবদানের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদের সঙ্গে। তিনি ব্যাংক খাত নিয়ে বলেন, ব্যাংক মূলত ইক্যুয়িটি বেইজ শেয়ার। এ খাতের কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন অনেক বেশি। তাই চাইলে এটা নিয়ে ‘জুয়া খেলা’ যায় না। তাছাড়া বিনিয়োগকারীদের মাঝে ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তো আছেই।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মুছা। তিনি বলেন, গত বছর ব্যাংকের নিট মুনাফা বাড়েনি, তারল্য বেড়েছে। বিপুল অলস টাকা পড়ে থাকার কারণে বছরজুড়ে ব্যাংক খাতের কোনো ইতিবাচক খবর বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। এর ফলে ভলিউম কম হয়েছে। আর্থিকখাতেও এমন সমস্যার কারণে ভালো করেনি বলে মনে করেন তিনি।

সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা  মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আসলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিগুলো বেশিরভাগ সময়ে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। বড় কথা হলো জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে মনোভাব ছিল ইতিবাচক। ফলে এ খাতের শেয়ার লেনদেনে আগ্রহী ছিল বেশি।

তবে ব্যাংকের ক্ষেত্রে অলস টাকা পড়ে রয়েছে। মানুষের মাঝে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ অনেকটাই কম ছিল। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দর কম ছিল। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের খুব বেশি আগ্রহ দেখা দেখা যায়নি।

গত বছরে লেনদেনের ভিত্তিতে ডিএসইতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৯৫ শতাংশই ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলোর।

গত বছর লেনদেনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবদান ছিল ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। যা এর আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত বছর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ২৭৬ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর শেয়ারের অংকে যার পরিমাণ ১৭৭ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার।

এছাড়া প্রকৌশল খাতে লেনদেনের অবদান ১৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষাঙ্গিকখাতের অবদান ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ, পাট খাতের দশমিক ১৫ শতাংশ, বস্ত্রখাতের ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রন খাতের দশমিক ৩৭ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতের ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, সিমেন্ট খাতের ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ, তথ্য প্রযুক্তিখাতের ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ, ট্যানারি খাতের দশমিক ৯৫ শতাংশ, সিরামিক খাতের ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, বিমাখাতের ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ভ্রমণ ও পর্যটন খাতের ২ দশমিক ২৪ শতাংশ, যোগাযোগ খাতের ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ ও বিবিধ খাতের ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ অবদান ছিল।

তথ্যসূত্র : অর্থসূচক

আসবাবের নতুন নতুন পণ্য পাশাপাশি আছে মূল্যছাড়

Picture

ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা এবার ভালো সাড়া মিলবে

ঝাঁ চকচকে প্যাভিলিয়নে ঢুকতেই খাট, সোফা সেট, ডাইনিং বা খাবার টেবিল, আরাম কেদারার মতো নানা ধরনের দৃষ্টিনন্দন আসবাব নজর কাড়বে। সবকিছুই পরিপাটি করে সাজানো-গোছানো। এসব পণ্য কেনায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ৫ থেকে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় (ডিআইটিএফ) হাতিলের প্যাভিলিয়নে পাওয়া চিত্র এটি। আবার পিছিয়ে নেই আকতার, নাভানা, রিগাল, পারটেক্স, ব্রাদার্স, নাদিয়া, হাই-টেক, লিগ্যাসি ফার্নিচার প্রভৃতি ব্র্যান্ডও। মেলায় সব প্রতিষ্ঠানই আকর্ষণীয় প্যাভিলিয়ন তৈরি করেছে। নিয়ে এসেছে নতুন নতুন পণ্য। পাশাপাশি পুরোনো পণ্যও প্রদর্শন করছে। ক্রেতাদের জন্য আছে মূল্যছাড়। এই সুবিধা মেলার বাইরে দেশের যে প্রান্তে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র কিংবা ডিলার আছে, সেখান থেকেও দেওয়া হচ্ছে।
বাণিজ্য মেলার তৃতীয় দিন গতকাল রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, ক্রেতা-দর্শনার্থীর আনাগোনা কম। আসবাব প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি প্যাভিলিয়ন মেলার মূল ফটকের সামনে ও বাকিগুলো একটু ভেতরে। তবে সব কটি প্যাভিলিয়নই বৈচিত্র্যময় ও দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় সবার চোখে পড়ছে। ফলে ক্রেতাদের অধিকাংশই ঢুঁ মারছেন। খোঁজখবর নিচ্ছেন বিভিন্ন আসবাবের। কম-বেশি বিক্রিবাট্টাও হচ্ছে।
হাতিল এবারের মেলায় নতুন নকশার ১৩টি বেডরুম সেট, ৬টি সোফা ও ৬টি ডাইনিং সেট নিয়ে এসেছে। এসব আসবাব কানাডা থেকে আমদানি করা ওক ও বিচ কাঠের তৈরি। টেবিল, চেয়ার, ক্যাবিনেটসহ বিভিন্ন ধরনের অফিস ফার্নিচার ও জার্মানির ব্র্যান্ড নলতের কিচেন ক্যাবিনেট, বেডরুম সেট ও ওয়ার্ডরোব এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
হাতিলের খাট ২৫ হাজার থেকে ৪৭ হাজার, সোফা সেট ৬৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার, খাবার টেবিলের সেট ৫৬ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় মিলবে। খাট, ওয়ার্ডরোব ও ড্রেসিং টেবিল নিয়ে কম্বো প্যাকেজ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। মেলা উপলক্ষে তারা ৫-২০ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে। তবে কম্বো প্যাকেজ কিনলে বাড়তি ৭ শতাংশ মূল্যছাড় রয়েছে। মেলার বাইরে প্রতিষ্ঠানটির ৬৩টি বিক্রয়কেন্দ্রেও মূল্যছাড়ের সুবিধাটি মিলবে।
এসব তথ্য দিলেন হাতিলের কর্মকর্তা অরুণ মজুমদার। বললেন, ‘বছরের অধিকাংশ নতুন পণ্যই আমরা বাণিজ্য মেলাকে কেন্দ্র করে নিয়ে আসি।’ তাঁর প্রত্যাশা, গতবারের মতো এবার রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় ক্রেতাদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাবে।
এদিকে নাভানা ফার্নিচারে ২০-৬০ হাজার টাকায় খাট, ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় সোফা সেট, ৩০-৮০ হাজার টাকায় খাবার টেবিলের সেট এবং ২৯-৫০ হাজার টাকায় আলমারি পাওয়া যাচ্ছে। মেলা উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি সাতটি নতুন নকশার বেডরুম সেট এনেছে। এতে খাট, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি ও ক্যাবিনেট থাকছে। দাম ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়া নতুন নকশার ৫টি সোফাসেট ও ৫টি খাবারের টেবিল সেট নিয়ে এসেছে তারা। প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ পণ্যই মেহগনি কাঠের তৈরি।
নাভানার জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক সীমা রায় জানালেন, মেলায় তাঁরা আসবাব ভেদে ৭ থেকে ১৫ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছেন। মেলার বাইরে নাভানার ৫টি নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র ও ৬৪টি ডিলার প্রতিষ্ঠানেও পুরো মাসজুড়ে একই হারে মূল্যছাড় মিলবে।
১৯৭৬ সাল থেকে আসবাব ব্যবসায় আছে আকতার ফার্নিশার্স। মূলত সেগুন ও মেহগনি কাঠ দিয়ে আসবাব তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। তারা ২১-৭৬ হাজার টাকায় খাট, ৫৯ হাজার থেকে ২ লাখ টাকায় সোফাসেট এবং ৩৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় খাবার টেবিল সেট বিক্রি করছে। মেলায় নতুন নকশার ৪টি বেডরুম সেট, ২টি খাবার টেবিল সেট, ৩টি সোফাসেটসহ অফিসে ব্যবহারযোগ্য টেবিল, চেয়ার, সোফা, ক্যাবিনেট ও র্যা ক নিয়ে এসেছে।
মেলা উপলক্ষে হোম ফার্নিচারে ১৫ শতাংশ ও অফিস ফার্নিচারে ১০ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে আকতার ফার্নিশার্স। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় আকতারের ২৫টি বিক্রয়কেন্দ্র থেকেও ক্রেতারা মেলা চলাকালে এই সুবিধা পাবেন। আকতারের প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ দুলাল রায় এসব তথ্যই জানান।
দুলাল রায় বলেন, ‘মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমরা মূলত প্রচারের জন্যই বাণিজ্য মেলায় আসি। তারপরও যে খরচ হয় সেটি বিক্রির মাধ্যমে ওঠানোর একটি চেষ্টা থাকে। দেশে এখন ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। তাই আশা করছি, শেষ পর্যন্ত ভালোই হবে।’
আসবাবের জগতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বয়স প্রায় তিন বছর। গ্রুপের প্রতিষ্ঠান রিগাল ফার্নিচার মেলায় নতুন নকশার খাট, সোফা, ডাইনিং টেবিল, ওয়ার্ডরোব ইত্যাদি নিয়ে এসেছে। রিগালের খাট ১০-২৯ হাজার, ডাইনিং টেবিল ৯ হাজার থেকে সাড়ে ৪৭ হাজার ও আলমারি ১০ হাজার ৭০০ থেকে ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেলায় ১৫ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। মেলার বাইরে রিগালের ১৫টি বিক্রয়কেন্দ্র থেকেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
রিগালের প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘গতবার মেলার শুরুতে যে সাড়া পাওয়া গিয়েছিল এবার তার চেয়ে বেশি পাচ্ছি। আশা করছি, এবারের বাণিজ্য মেলা সব ব্যবসায়ীর জন্যই ভালো সংবাদ নিয়ে আসবে।’
এ ছাড়া মেলা উপলক্ষে পারটেক্স ফার্নিচার ২০ শতাংশ, ব্রাদার্স ফার্নিচার ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ও লিগ্যাসি ২৫ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে।
মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা। মেলায় প্রবেশের টিকিটের মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৩০ টাকা ও শিশুদের জন্য ২০ টাকা।

তথ্যসূত্র : প্রথমআলো

পোশাকপল্লি স্থাপনে চসিক ও বিজিএমইএর চুক্তি

Picture

চট্টগ্রামের কালুরঘাটে পোশাকপল্লি স্থাপনে তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার পাশে ১০ দশমিক ৩৬ একর জায়গায় এই শিল্পপল্লি স্থাপন করা হবে। বিদেশি ক্রেতাদের জোটের বিধি ও শর্ত মেনে ওই পল্লিতে অবকাঠামো নির্মাণ করবে সিটি করপোরেশন। পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুৎ ও পানি-সংযোগও নিশ্চিত করবে করপোরেশন। আর পরবর্তী সময়ে নির্মাণ খরচ বাবদ বরাদ্দপ্রাপ্ত কারখানা মালিকদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হবে।
বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গতকালের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ছাড়াও শ্রমসচিব মিকাইল শিপার, বিজিএমইএর সহসভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাছির, প্রথম সহসভাপতি মঈনউদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বিদেশি ক্রেতাদের জোটগুলোর শর্ত মেনেই পোশাকপল্লিতে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। অনেক ঝুঁকি নিয়ে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এই পোশাকপল্লি হচ্ছে। এ রকম সুবিধা শহরের কোথাও পাওয়া যাবে না।
শ্রমসচিব মিকাইল শিপার বলেন, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের শর্ত না মানায় সারা দেশে ৩৮টি পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে মাত্র ১১টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। তবে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও শেয়ারড ভবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা আছে, যারা বিজিএমইএ বা বিকেএমইএর সদস্য নয়। এসব কারখানা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও তারা তোয়াক্কা করছে না। অথচ এসব কারখানা ভবনে কোনো দুর্ঘটনা হলে বিজিএমইএর ওপর দায় এসে পড়বে। এ জন্য বিজিএমইএসহ সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চুক্তির কিছু শর্তের সঙ্গে আমি একমত নই। তারপরও যেহেতু চসিক প্রথমবারের মতো এ ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, সেহেতু এটিকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তাই আমাদের অনুরোধ, প্রকল্পের নির্মাণ খরচের অর্ধেক সিটি করপোরেশন বহন করুক আর অর্ধেক বরাদ্দপ্রাপ্ত কারখানা মালিকেরা দেবেন।’
চুক্তি অনুযায়ী, পোশাকপল্লিটিতে ১০-১১টি ভবন নির্মিত হবে। প্রতিটি ভবনের প্রতিটি মেঝের আয়তন হবে ২০ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ভবনে ৮ ফুট চওড়া চারটি সিঁড়ি ও চারটি লিফট থাকবে। কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) থাকবে। ভবনগুলোর প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ১০ টাকা হারে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর ৫ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়বে।
সিটি করপোরেশন, বিজিএমইএ ও বরাদ্দ গ্রহীতার মধ্যে ১০ বছরের চুক্তি হবে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হবে। কমপক্ষে ৪০ বছর পর্যন্ত এ ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বলবৎ থাকবে।

তথ্যসূত্র : প্রথমআলো

ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪৩.৭১%

Picture

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের সঙ্গে কমেছে সব ধরনের মূল্য সূচক। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আগের সপ্তাহের চেয়ে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৯৪৭ কোটি ৫৮ টাকা। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৬৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার।

সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ।

এদিকে, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ৬২ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বা ২১ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ১৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৮টি কোম্পানির; দর কমেছে ২৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। আর লেনদেন হয়নি ৪টি কোম্পানির শেয়ার।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫১টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টি কোম্পানির শেয়ার।

সূত্র : অর্থসূচক

বাণিজ্য আস্থা সূচকের শীর্ষে বাংলাদেশ

Picture

বাণিজ্য আস্থা সূচকের শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য আস্থা বিষয়ে এইচএসবিসি পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যে স্বল্প পরিসরে পূর্বাভাস পাওয়ার জন্য এ জরিপ চালানো হয়। এইচএসবিসির পক্ষে জরিপটি পরিচালনা করেছে টিএনএস নামে একটি সংস্থা। এতে ছোট থেকে বৃহৎ পরিসরের ৬ হাজার ৩০০ করপোরেশনের আগামী ছয় মাসের বাণিজ্য প্রত্যাশার ভিত্তিতে তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পছন্দের তালিকায় থাকা ২৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাণিজ্য আস্থা বেড়ে ১৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

এইচএসবিসির সমীক্ষায় ব্যবসায়ীদের আগ্রহের কারণ হিসেবে ইউরোপের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্যের পরিমাণ এবং অবকাঠামোগত ও কাঁচামালের নিম্ন খরচের কথা বলা হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতি ও শক্তিশালী দেশজ উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির বিনির্মাণের একটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিনির্মাণ ভবিষ্যতে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণে সহায়ক হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ মুদ্রা এবং ইউরোপের বাজারের উদারীকরণ ঘটলে ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রফতানি গড়ে ১০ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছার আশা আছে। তৈরি পোশাক শিল্প থেকে বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের এক-চতুর্থাংশ আসে। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে বাকি প্রধান আটটি পণ্যের সাতটির রফতানিই ১০ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেদনে ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কারণে বাংলাদেশের জিডিপি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে হওয়ার প্রত্যাশা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যোগাযোগ ও জ্বালানি খাতে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ায় আরো বেশি বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে। তবে এসব কিছু অর্জনে বাংলাদেশকে অবশ্যই তৈরি পোশাক খাতে তার বর্তমান অবস্থানকে ধরে রাখতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সমীক্ষায় ১১টি মার্কেটের ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্যকে ব্যবহার করা হয়েছে। এ ১১টি মার্কেটের মধ্যে রয়েছে— অস্ট্রেলিয়া, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ম্যাক্সিকো, পোল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

তথ্যসূত্র : বণিক বার্তা

পর্দা উঠার অপেক্ষায় ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো

Picture

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা উঠছে ৩ দিনব্যাপী পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মিলন মেলা ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৫ এর। সময়ের হিসেবে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরই ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি, অডিট ফার্ম এবং পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিসহ বিনিয়োগকারীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠবে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) সম্মেলন কেন্দ্র।

বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গনের সব আয়োজন প্রায় শেষ হয়েছে। ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোও অপেক্ষা করে আছে প্রায় ৭০টি স্টলে  তাদের সেবা-পণ্য প্রদর্শনের জন্য।

দেশের প্রথম অনলাইন বিজনেস নিউজপোর্টাল অর্থসূচক ডটকম আয়োজিত এই এক্সপোর  উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম. শেফাক আহমেদ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জনাব আবুল কাশেম।

তিন দিনের এই মেলার দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে বিভিন্ন সেমিনারে অতিথি থাকবেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ব্যাংকিং ও আর্থিক বিভাগের সচিব ড. আসলাম আলম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার মো. আরিফ খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী প্রমুখ।

এছাড়া অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকারসহ পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরাও ৩ দিনব্যাপী এই এক্সপোর আলোচনায় অংশ নেবেন।

মেলার আয়োজক সংস্থা অর্থসূচক ডটকমের সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, পুঁজিবাজার সম্পর্কে যথেষ্ট বিভ্রান্তি রয়েছে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো জানা না থাকাতেই এমন ভুল ভাবনার জন্ম হয়। সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে এই ভুল ধারণা ভেঙ্গে দেওয়ার লক্ষ্যে, পুঁজিবাজারের ব্র্যান্ডিং এবং সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোর আয়োজন করা হয়েছে।

জিয়াউর রহমান জানান, এক্সপোর দর্শনার্থীদের জন্য র‌্যাফেল ড্রর আয়োজন করা হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা, ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটের বিমান টিকেট (প্রতিদিন ঊভয় রুটে একটি করে), ল্যাপটপ (প্রতিদিন ১টি), স্মার্ট ফোনসহ (প্রতিদিন ৫টি করে) আকর্ষণীয় অনেক পুরস্কার থাকবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো ২০১৫ এর সহযোগী হিসেবে রয়েছে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম), দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশ (আইসিএবি), দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএমএবি), ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি)।

এক্সপোতে টেলিভিশন পার্টনার হিসেবে একুশে টেলিভিশন (ইটিভি), নিউজপেপার পার্টনার হিসেবে সমকাল ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, রেডিও পার্টনার হিসেবে ঢাকা এফএম, পিআর পার্টনার হিসেবে ইমপেক্ট পিআর, ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে মেকার এক্সপো, নেটওয়ার্ক পার্টনার হিসেবে থাকছে আম্বার আইটি, আইটি পার্টনার হিসেবে থাকছে গ্লোবাল ব্র্যান্ড।

তথ্যসূত্র : অর্থসূচক

‌‌’বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে কমবে মন্দ আইপিও’

Picture

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এলে ওভার সাবসক্রিপশন কমবে। এই পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দিলে দুর্বল মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির বাজারে আসার প্রবণতাও অনেকটা দূর হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা এ কথা বলেছেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টন্স অব বাংলাদেশ-আইসিএমএবি এর ঢাকা ব্রাঞ্চ কাউন্সিল আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই কথা বলেন।

স্বপন কুমার বালা বলেন, বাজারে সব কোম্পানি আইপিওতেই কয়েকগুণ বেশী আবেদন জমা পড়ে। কোম্পানি দুর্বল মৌলভিত্তির হলে আবেদন আরও বেশি আবেদন পড়ে। কারণ এসব কোম্পানির আইপিওতে কোনো প্রিমিয়াম থাকে না।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারী যদি অসচেতনভাবে বাজারে শেয়ার কিনতে চায়, তবে তাতে কারো কিছু করার থাকে না।

তবে আগামীতে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিও আনার ব্যাপারে কাজ চলছে। শিগগিরই পাবলিক ইস্যু রুলসে সংশোধনী আসছে। এই সংশোধনী হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ভালো মানের কোস্পানিগুলো বাজারে আসতে আগ্রহী হবে।

বিনিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, ঝুঁকি কমানোর সক্ষমতা বিনিয়োগকারীর থাকতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এটাকে শুধু প্রতিদিনের আয় মনে করলে হবে না।

অনুষ্ঠানে রিস্ক ম্যানেজমেন্টের ওপরে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত পাশা। তিনি পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ পদ্ধতি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, একটি কোম্পানির শেয়ার সম্পর্কে সঠিক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেন না। এমনকি কোনো কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ না করে তারা বিনিয়োগ করেন না। কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের ওপর আস্থা পেলেই কেবল তারা বিনিয়োগ করেন।

এএফসি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী মাহবুব এইচ মজুমদার বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বাজারে আসতে হলে একটু বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে আমাদের মার্কেটে তেমনটাই হচ্ছে না। কিছু টাকা থাকলেই অনেকে চলে আসে বিনিয়োগ করতে। এ ধরণের বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

তথ্যসূত্র : অর্থসূচক

বিনিয়োগ পরিবেশের আরও অবনতি

Picture

এমসিসিআইয়ের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ

অর্থনীতি ভালো করলেও সম্ভাবনার তুলনায় পিছিয়ে বাংলাদেশ। এই সম্ভাবনাকে ব্যবহার করা যাচ্ছে না মূলত চারটি কারণে। যেমন অবকাঠামোর সমস্যা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির স্বল্পতা, বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশের অভাব এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) গতকাল বৃহস্পতিবার চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এ কথা বলেছে। এমসিসিআই মনে করে, বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশের কথা বলা হলেও উল্টো দেশে গত এক বছরে বিনিয়োগ পরিবেশ আরও খারাপ হয়েছে।
এমসিসিআই প্রতিবেদনে এ বিষয়ে আরও বলেছে, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর প্রধান শর্ত হচ্ছে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। কিন্তু অনেক বিষয় বিনিয়োগকে নিম্ন মাত্রায় রেখে দিয়েছে। তা ছাড়া দেখে মনে হচ্ছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ২০১৩ সাল থেকে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছেন। যদিও এ সময় সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে। তবে তা কখনোই বেসরকারি বিনিয়োগের বিকল্প হতে পারে না। আর অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি বিনিয়োগ।
এমসিসিআই মনে করে, গত এক বছরে বিনিয়োগ পরিবেশ আরও খারাপ হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার পরিবেশ-বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ দুই ধাপ পিছিয়েছে। ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭৪তম। আগের বছরে বাংলাদেশ ছিল ১৭২তম স্থানে। বাংলাদেশ মোট ১০ সূচকের মধ্যে ৫টিতে পিছিয়েছে, বাকি ৫টিতে আগের অবস্থানেই আছে। এমনকি বিদ্যুৎ-সংযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন সর্বনিম্ন অবস্থানে, ১৮৯তম। এখন বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে এখানে ৪০৪ দিনের প্রয়োজন হয়, যা ব্যবসা পরিচালনার ব্যয়কে বাড়িয়ে দেয়। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপাল এখন ৯৯তম স্থানে, শ্রীলঙ্কা ১০৭তম, মালদ্বীপ ১২৮তম, ভারত ১৩০তম এবং পাকিস্তান ১৩৮তম স্থানে।
এমসিসিআই তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সামগ্রিক পরিস্থিতিতে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ ও বিনিয়োগকারীরা মনে করে, দ্রুত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণের বিষয় সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে একটি সহায়ক ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ তৈরিতে এই কাজটি করা জরুরি।
অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেশের প্রভাবশালী এই চেম্বার বলেছে, গত ১২ বছরে বাংলাদেশ গড়ে ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সদ্য প্রণীত সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রতি অর্থবছর গড়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে, যাতে ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতে পারে। আর তা করতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে, রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে এবং সামগ্রিক অবকাঠামোর মান ভালো করতে হবে।
এমসিসিআইয়ের মতে, বাংলাদেশকে অবশ্যই সড়ক ও রেল খাতের অবকাঠামো উন্নত করতে হবে, বন্দর সুবিধা বাড়াতে হবে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং অবকাঠামোর বাধাগুলো দূর করতে হবে। দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই সরকারকে এসব কাজ করতে হবে।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস নিয়ে এমসিসিআই বলছে, দেশের কৃষি খাত ভালো করলেও এই খাতকে টেকসই রাখতে উপকরণ ও অর্থায়নে সরকারের সমর্থন ও সহায়তা প্রয়োজন। অন্যদিকে অবকাঠামোর ঘাটতি এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ সমস্যা উৎপাদন খাতকে পিছিয়ে দিচ্ছে। সেবা খাতও ভালো করছে, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় এই খাতের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিয়ে সরকারের সমর্থনের দরকার পড়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, সরকারের প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ঠিক রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি। আর পর্যাপ্ত অবকাঠামো, দক্ষ মানবসম্পদ এবং বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশ হচ্ছে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মূল বিষয়।
সবশেষে এমসিসিআই চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) জন্য প্রাক্কলনও করেছে। তারা মনে করছে, এই তিন মাসে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্তই থাকবে। ফলে রপ্তানি, আমদানি এবং প্রবাসী-আয় আরও বাড়বে। তবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) আমদানির অর্থ পরিশোধ করায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কিছুটা কমতে পারে। অবশ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়তে পারে।

তথ্যসূত্র : প্রথমআলো