Business News

Displaying 111-120 of 172 results.

প্রবাসী-আয় চার মাসে কমেছে ১০ শতাংশ

প্রবাসী-আয় চার মাসে কমেছে ১০ শতাংশ

অক্টোবর মাসে ঈদ ছিল। তার পরও আগের বছরের তুলনায় প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স কমেছে। এ সময় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১২৩ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন।
আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৪৫ কোটি ৩৭ লাখ। তবে চলতি বছরের আগের মাস অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় সামান্য বেড়েছে।
আবার, আগের অর্থবছরের প্রথম চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর) তুলনায় এবার দেশে রেমিট্যান্স কম এসেছে। কমের পরিমাণ প্রায় ৫১ কোটি ডলার, যা ১০ দশমিক ১২ শতাংশ। মূলত জনশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়া এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের সঙ্গে খোলাবাজারে ডলারের দরে বড় ব্যবধান থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৪৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৫০১ কোটি ২৩ লাখ ডলার।
গত অক্টোবর মাসে ঈদ ছিল। ঈদের মাসে সাধারণভাবে প্রবাসী-আয় বেশি আসে। তারপর প্রবাসী-আয় তেমন একটা বাড়েনি। অক্টোবরে প্রবাসীরা দেশে পাঠান ১২৩ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। আগের মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে আসে ১০২ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
প্রবাসী আয়ের উচ্চ প্রবাহ চলতি হিসাবের ভারসাম্য অনুকূলে ধরে রাখতে বরাবরই সহায়তা করে আসছে।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/71413


খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে

খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে

ব্যাংক খাতে বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে। তবে আগের চেয়ে বৃদ্ধির গতি খানিকটা কম। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, এতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, গত জুনের তুলনায় সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়েছে দশমিক ৮৮ শতাংশ। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে যার পরিমাণ ৫৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
জুন মাস শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৫২ হাজার ৩০৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এটি সে সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা চার লাখ ৩৯ হাজার ২১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ঋণের ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ ছিল।
সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিশেষত রাষ্ট্র খাতের অগ্রণী, জনতা, সোনালী ও বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির বড় অবনতি হয়েছে। অন্যদিকে দেশি ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে। আর বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকটাই এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রস্তুত করা সেপ্টেম্বরভিত্তিক ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশন-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে জুনের প্রতিবেদনের তুলনায় এসব তথ্য মিলেছে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ও বেসিক এবং কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে (রাকাব) বড় ধরনের ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও দেশের ন্যাশনাল ব্যাংকেও বড় সঞ্চিতি ঘাটতি রয়েছে। বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের সঞ্চিতি ঘাটতিও বিরাট। এ ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোতে সঞ্চিতি ঘাটতি না থাকলে সার্বিক ঘাটতি গিয়ে ঠেকেছে তিন হাজার ২৮১ কোটি টাকায়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ কমে যাওয়ার তথ্যও মিলেছে এই দফা ঋণ শ্রেণীকরণ ও সঞ্চিতি প্রতিবেদনে। দেখা যাচ্ছে, গত তিন মাসে সার্বিক ঋণ বেড়েছে মাত্র চার হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণ বেড়েছে চার হাজার ৪১০ কোটি টাকা।

গত ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ঋণ শ্রেণীকরণ ও সঞ্চিতির বিধান কার্যকর হয়েছে। এতে করেও কিছু ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান বাস্তবায়িত হওয়ায় দেশের ব্যাংক খাত আরও একটি মানদণ্ডে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।

ব্যাংক খাতের সংরক্ষিত এই প্রভিশন ও স্থগিত সুদ আয়কে (খেলাপি চিহ্নিত করা ঋণের সুদ ব্যাংক আয় খাতে নিতে পারে না) সমন্বয় করা হলে খেলাপি ঋণ বর্তমানের চেয়ে অর্ধেকের নিচে নেমে আসে। এই হিসাবে খেলাপি ঋণ দাঁড়াবে ২০ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন বিধান অনুসারে নিম্নমান পর্যায়ে শ্রেণীকৃত ঋণকে এখন খেলাপি বলা হচ্ছে না এই অর্থে যে, এতে গ্রাহকের নতুন ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অন্তরায় নেই। তবে এ পর্যায়ে ব্যাংককে ঠিকই সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও আগের মতো এই পর্যায়ের ঋণকে বিরূপভাবে শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যেই রাখছে, অশ্রেণীকৃত হিসাবে দেখাচ্ছে না। এই প্রতিবেদনে খেলাপি বলতে পুরো শ্রেণীকৃত ঋণকেই বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৫৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকার বিরূপ শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যে নিম্নমানের ঋণ হচ্ছে ১০ হাজার ১২৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, সেপ্টেম্বরে এসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হয়েছে ২৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জুনে ছিল ২৩ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/69658


৫ বছরে বৈদেশিক সহায়তার অর্ধেকও মেলেনি : দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা ফিরিয়ে নিচ্ছে দাতারা

৫ বছরে বৈদেশিক সহায়তার অর্ধেকও মেলেনি : দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা ফিরিয়ে নিচ্ছে দাতারা

দুর্নীতি, অনিয়ম, অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা ফিরিয়ে নিচ্ছেন দাতারা। গত পাঁচ বছরে প্রতিশ্রুত ঋণ-সহায়তার অর্ধেকও পাওয়া যায়নি দাতাদের কাছ থেকে। এতে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে দাতাগোষ্ঠী ১৯৫৮ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু গত অর্থবছরের হিসাব অনুসারে সরকার পেয়েছে মাত্র ৮৮৭ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ সহায়তা। এজন্য পাইপলাইনে যুক্ত হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে একবার সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেলে তা স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। সরকারের সঙ্গে দাতাদের সম্পর্কে ভাটা পড়ার পর স্বাভাবিক করতে ব্যাপক তত্পরতা চালানো হয়। কিন্তু এ বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তায় অর্থছাড়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে দাতারা। এ অবস্থায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা জরুরি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় না হওয়ায় দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানমুখী চাপ পড়ছে। প্রায় তিনগুণ অর্থ পাইপলাইনে পড়ে থাকলেও অর্থের অভাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন করতে পারছে না সরকার। বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে এরই মধ্যে এডিপি কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় হলে এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থ সহায়তা ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আমার দেশকে বলেন, কোনো প্রকল্পের অনুকূলে অর্থ সহায়তা ফিরিয়ে নিলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অবকাঠামো, স্বাস্থ্য খাত বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে দাতারা অর্থায়ন বন্ধ করে দিলে দেশীয় তহবিল থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়। ফলে বাজেট ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়ে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সরকার ব্যাংকিং খাতে হাত বাড়ায়। যার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের পাঁচ বছরে দাতাগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ১ হাজার ৯৫৮ কোটি মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া যায়। কিন্তু ২০১২-১৩ অর্থবছরের হিসাব অনুসারে সরকার পেয়েছে মাত্র ৮৮৭ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ সহায়তা।
হিসাব করলে দেখা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২৯৮ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে অর্থছাড় হয় ২২২ কোটি ডলার। পরের অর্থবছরে ৫৯৬ কোটির বিপরীতে ছাড় হয় মাত্র ১৭৭ কোটি ডলার। ২০১১-১২ অর্থবছরে ৪৭৬ কোটির প্রতিশ্রুতি থাকলেও পাওয়া যায় মাত্র ২১২ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রতিশ্রুতির অর্ধেকেরও কম অর্থ ছাড় করেছে দাতারা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫৯০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। এর মধ্যে পাওয়া গেছে ২৭৬ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা। সহায়তার আশ্বাস এবং সেই অনুসারে সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করার পরও অর্থ ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এসব কারণে পাইপলাইনে রেকর্ড পরিমাণ ১৮৫৬ কোটি ডলার আটকে রয়েছে।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই মহাজোট সরকারের সঙ্গে দাতাদের বিরোধ শুরু হয় সরকারি ক্রয় আইন সংশোধন নিয়ে। সে সময় ২ কোটি টাকার কম অর্থের সরকারি কেনাকাটায় কিছুটা ছাড় দিতে চায় সরকার। বিষয়টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে দাতারা অভিযোগ করেন, এর মাধ্যমে সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতির সুযোগ বাড়বে। বিষয়টি ঘিরে দু-পক্ষের দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় ৩৬টি প্রকল্পে তিন মাসের জন্য অর্থছাড় বন্ধ করে দেয় শীর্ষ দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কেনাকাটায় ছাড় দেয়া হবে না এমন শর্তে বাংলাদেশ রাজি হলে পরবর্তী সময়ে অর্থছাড় শুরু করে সংস্থাটি। এরপর দাতাদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় আঘাত আসে পদ্মা সেতু প্রকল্পকে ঘিরে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্পর্কের অবনতিসহ বিভিন্ন কারণে এতদিন অর্থছাড় কম হলেও চলতি বছরে আলাদা একটি কারণে সহায়তা কমে যেতে পারে। কেননা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতীয় নির্বাচনের অনিশ্চয়তা দূর করতে বলছে দাতারা। এজন্য চলতি অর্থবছরের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়ে তারা খুবই সতর্ক। অর্থবছরের তিন মাসের চিত্র দেখলে এটা বোঝা যায়। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে দাতা সংস্থাগুলোর প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি ৮৯ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল ৬৫ কোটি ৭১ লাখ ডলার। এ হিসাবে প্রথম প্রান্তিকে অর্থছাড়ের পরিমাণ কমেছে ৪৭ কোটি ৮২ লাখ ডলার। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দাতাদের প্রতিশ্রতির মধ্যে অনুদানের পরিমাণ ছিল ৮৯ লাখ ডলার। আর ঋণের পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ।
ইআরডি’র নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় করতে আওয়ামী লীগের সফলতা বরাবরই কম। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ৮৯ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার সহায়তা প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ১০৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার অর্থছাড় হয়। ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর পর্যন্ত সময়কালে ৮৪৯ কোটি ২১ লাখ ২৯ হাজার ডলার প্রতিশুতির বিপরীতে অর্থ আদায় হয়েছে ৮০২ কোটি ৭৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ সময়ে মাত্র ৪৬ কোটি ৪১ লাখ ৬৯ হাজার ডলার অনাদায়ী থাকে। প্রতিশ্রুতির বিপরীতে বৈদেশিক সহায়তা এসেছিল প্রায় ৯৪ শতাংশ।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই বৈদেশিক সহায়তায় আবার নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। ২০০০-০১ অর্থবছর পর্যন্ত সময়কালের পাঁচ বছরে প্রতিশ্রুতির মাত্র ৭৫ শতাংশ অর্থ ছাড় হয়েছে। ৯৬২ কোটি ৮২ লাখ ১৫ হাজার ডলার প্রতিশ্রুতির মধ্যে এ সময় ২৪০ কোটি ২৮ লাখ ৩ হাজার ডলার অনাদায়ী থাকে।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আবার প্রতিশ্রুতির চাইতে বেশি সহায়তা আসে। ২০০১-০২ অর্থবছরে ৮৭ কোটি ৮৭ লাখ ৪৪ হাজার ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ১৪৪ কোটি ২২ লাখ ৩৪ হাজার ডরার ছাড় হয়। প্রতিশ্রুতির চাইতে ৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বেশি সহায়তা আসে ওই বছরে। ২০০৫-০৬ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ বছরে ৭৮৬ কোটি ২৫ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ৭১১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার ছাড় হয়। এ সময়ে সহায়তা প্রাপ্তিতে সফলতার হার ৯০ শতাংশের বেশি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরে ৫০৯ কোটি ৮৬ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে অর্থছাড় হয়েছে ৩৬৯ কোটি ২১ লাখ ডলার। অর্থপ্রাপ্তিতে সফলতা প্রায় ৭২ ভাগ। আর চলতি সরকারের মেয়াদে বৈদেশিক অর্থ ছাড়ে সফলতার হার ৪৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

 

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/10/223985#.Un_JeSfjWcw


ইটিআইএন নিতে চরম ভোগান্তিতে করদাতারা চার মাসে মাত্র ছয় লাখ নিবন্ধিত

ইটিআইএন নিতে চরম ভোগান্তিতে করদাতারা চার মাসে মাত্র ছয় লাখ নিবন্ধিত

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব নিবন্ধিত করদাতাকে পুনরায় অনলাইনে নিবন্ধন করে ইলেকট্রনিকস কর শনাক্তকরণ নম্বর (ইটিআইএন) গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু অনলাইনে নানা ভোগান্তির কারণে করদাতারা রেজিস্ট্রেশন বা পুনঃরেজিস্ট্রেশন করতে পারছে না। নির্ধারিত সময়ের ৪ মাস অতিবাহিত হলেও ইটিআইএন গ্রহণ করেছেন মাত্র ৬ লাখ করদাতা। গত অর্থবছরের হিসেবে দেশে ৩৬ লাখ টিআইএনধারী করদাতা রয়েছেন। আগামী ২ মাস অর্থাত্ ডিসেম্বরের মধ্যে সব করদাতাকে ইটিআইএন গ্রহণ বাধ্যতামূলক। বিভিন্ন কারণে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইটিআইএন রেজিস্ট্রেশন হবে বলে মনে করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইটিআইএন গ্রহণ করেছেন ছয় লাখ করদাতা। এর মধ্যে নতুন ও বিদ্যমান করদাতাদের পুনর্নিবন্ধনকারী উভয়ই আছেন। সব করদাতা ইটিআইএন নিচ্ছে না বা নিতে পারছে না এমনটি মনে করেছে স্বয়ং এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটির ধারণা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ লাখ ইটিআইএনধারী হবে। প্রচার-প্রচারণার ঘাটতি রয়েছে বলে ইটিআইএন গ্রহণে তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছে খোদ এনবিআর।
এখনও টিআইএন নিবন্ধন করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন করদাতারা। এ নিয়ে এনবিআরে অভিযোগের শেষ নেই। সমস্যা সমাধানের জন্য একটি সহায়তা কেন্দ্র করলেও সমাধান হচ্ছে না। এ বিষয়ে এনবিআরের সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, আগামী ডিসেম্বরে ২০ লাখ ইটিআইএন নিবন্ধন হবে। এছাড়া ই-টিআইএনের কারণে এ বছর রিটার্ন জমার পরিমাণও বাড়বে। তবে প্রচারণার অভাবে আরও অনেকে আসছেন না বলে মনে করেন এই সদস্য।
তিনি বলেন, আরও প্রচারণা বাড়ানো উচিত। অনেকে এখনও জানেনই না যে ই-টিআইএন নিতে হবে। কেউ কেউ রিটার্ন জমা দিতে এসে জানছেন। এজন্য আরও প্রচারণা প্রয়োজন বলে মনে করেন আমিনুল করিম।
টিআইএন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে অনলাইনভিত্তিক এই পদ্ধতিতে বিপত্তিতেও পড়েছেন করদাতারা। প্রতিদিনই অনেক অভিযোগ এনবিআরে জমা হচ্ছে। যেসব করদাতার বর্তমানে টিআইএন রয়েছে তাদের পুনর্নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু কেউ যদি ভুলক্রমে নতুনভাবে টিআইএন নিবন্ধন করে থাকেন তা আর সংশোধনের সুযোগ নেই। আবার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে তারাও টিআইএন নিবন্ধন করতে পারছেন না। এনবিআরে এখন পর্যন্ত ই-মেইলে এরকম প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ এসেছে।
জানা গেছে, অনলাইনে টিআইএন গ্রহণ ও পুনর্নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ভুল সংশোধনের সুযোগ রাখা হয়নি। তবে এসব ভুল সংশোধনের উপায় বের করার চিন্তা করছে এনবিআরের এ বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকর উপায় বের করা হবে। সেক্ষেত্রে ভুল সংশোধনের ব্যবস্থাও রাখা হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়া ও ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস দেয়ার কথাও চিন্তা করছে এনবিআর।
সংশিল্গষ্টরা বলছেন, ই-টিআইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে করদাতাদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য। এতে করদাতার সময়, অর্থ- দুটিই সাশ্রয় হবে। ঘরে বসেই নিজের টিআইএন নিবন্ধন করতে পারবেন। কারও কাছে ধরনা দিতে হবে না। তবে নতুন এই ব্যবস্থায় টিআইএনে নিবন্ধনে করতে আসা করদাতারা বিপত্তিতে পড়ছেন এমনটি স্বীকার করে তিনি বলেন, এটি একটি বড় ধরনের সংস্কার কার্যক্রম। যে কোনো সংস্কার কার্যক্রমে একদল মানুষকে বিপত্তি স্বীকার করতে হয়। এই সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ৩৬ লাখ টিআইএনধারী আছেন। এনবিআর মনে করে এদের অন্তত অর্ধেকই ভুয়া অথবা কার্যকর নয়। গত বছর মাত্র ১৩ লাখ আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে। অর্থাত্ এই সংখ্যক করদাতারা ন্যুনতম পরিমাণে হলেও কর দিয়েছেন। বাকি টিআইএনধারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। নতুন এই পদ্ধতিতে যে কেউ টিআইএন নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে রক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করে। অর্থাত্ এই প্রক্রিয়ায় ভুয়া টিআইএন নেয়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে কোম্পানির ক্ষেত্রেও নতুন টিআইএন নিবন্ধন করতে হবে। যাদের টিআইএন আছে তাদের ক্ষেত্রে পুনর্নিবন্ধন করতে হবে। এক্ষেত্রে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদফতরে (আরজেএসসি) রক্ষিত তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করা হবে। পুরনো টিআইএনধারীদের ১০ অঙ্কবিশিষ্ট টিআইএন রয়েছে। পুনর্নিবন্ধনের পর নতুন ১২ অঙ্কবিশিষ্ট টিআইএন নম্বর প্রদান করা হয়। আগামী জানুয়ারি থেকে পুরনো টিআইএন চলবে না।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/03/223085#.UnZ_qFNV9aQ


অস্বস্তিতে দেশের রফতানি খাত

অস্বস্তিতে দেশের রফতানি খাত

ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই অস্বস্তিতে রয়েছে দেশের রফতানি খাত। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে রফতানি আয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও টাকার মান বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি সঙ্কটের সম্মুখীন রফতানিমুখী পোশাক খাত। এ খাতের প্রতিযোগী অন্য দেশের মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দর কম থাকায় সেসব দেশ তুলনামূলক কম দামে পোশাক সরবরাহ করছে। ফলে ক্রেতারা বাংলাদেশ ছাড়া বিকল্প দিকে ঝুঁকছেন।
একদিকে রেমিট্যান্স আয় কমলেও বাংলাদেশ ব্যাংক অব্যাহতভাবে ডলার কিনে কিনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়েছে। সর্বশেষ হিসাবে চলতি মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৭ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। অথচ রেমিট্যান্স প্রবাহের হিসাবে দেখা যায়, চলতি বছরে জুলাই-সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২৭ কোটি ৩ লাখ ডলার। গত বছর এ সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩৫৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৮ কোটি ডলার কমেছে।
কিন্তু অন্যদিকে রেমিট্যান্স কমলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে গিয়ে অব্যাহতভাবে ডলার কেনায় টাকার মান শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে রফতানি বাণিজ্যে বাংলাদেশের পণ্যের দাম বিদেশের বাজারে বেড়ে যায়। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত এবং প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য রাষ্ট্র যেমন ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি দেশে ডলারের মান বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এসব দেশের পণ্য বিদেশের বাজারে সস্তা হয়েছে। বিশেষ করে পোশাক শিল্প খাতে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশ কারেন্সি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসের তুলনায় চলতি মাসে টাকার বিপরীতে ডলারের মান ৫ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। জানুয়ারি মাসে এক ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল ৭৯ টাকা থেকে ৮০ টাকা। এর আগে টাকার বিনিময় হার সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। গতকালের হিসাব মতে ৭৭ টাকা।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে পোশাক শিল্পের মালিক ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, গত জুলাইয়ের পর এ পর্যন্ত পোশাকের রফতানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গত কয়েক মাসে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির অবমূল্যায়ন হয়েছে ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। অন্যদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। এটা বাংলাদেশের পোশাকের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জ তেমনি ভারতের জন্য বড় সুবিধা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, টাকার মান শক্তিশালী হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত পোশাক আমদানিকারকদের রফতানি আদেশ এখন ভারত ও ভিয়েতনামে চলে যাচ্ছে। এছাড়া রফতানিকারকদের জন্য পৃথক হারে বৈদেশিক মুদ্রার ্তুবিশেষ বিনিময় হার্থ নির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে জটিলতার কারণে শুধু পোশাক খাতেই ২৫ শতাংশ রফতানি আদেশ কমেছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাত চামড়া শিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অস্থিরতার কারণে কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন ও প্রক্রিয়াকরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, রফতানি খাতের প্রায় প্রতিটি শাখায় গতি থেমে যাচ্ছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক, চামড়া ও পাদুকা, হিমায়িত খাদ্য এবং প্লাস্টিক খাতসহ অন্য খাতের রফতানি কমেছে।
জানা গেছে, তৈরি পোশাক খাতে রফতানিতে গত দুই মাসে (আগস্ট-সেপ্টেম্ব্বর) ক্রয়াদেশ কমেছে ২৫ শতাংশ। এই পোশাক খাত থেকে রফতানি আয়ের ৯০ শতাংশই আসে, যার পরিমাণ সাড়ে ২১ বিলিয়ন ডলার। হরতালের কারণে একদিনে এ খাতের ক্ষতি হয় ২০০ কোটি টাকা। অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান রফতানি আদেশ বন্ধ করে দিয়েছে। যারা আদেশ দিচ্ছে তারাও আগের চেয়ে কম দিচ্ছে। এ অবস্থায় এ খাতের উদ্যোক্তারা হতাশ।
তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলেন, পোশাক খাত হরতালের আওতামুক্ত থাকলেও এর সুফল পান না তারা। পরিবহন বন্ধ থাকায় পণ্য রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। প্রচুর আদেশ বাতিল ও ডেফার হয়।
রফতানিকারকদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ব্যবসায়ীরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। দুই দলের মধ্যে একটি সমঝোতা না হলে এদেশের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এর দায়ভার দুই দল বা জোটকেই নিতে হবে। এমনিতেই বিশ্বমন্দার কারণে বাংলাদেশের রফতানি খাত কিছুটা স্থবির। তারপর এভাবে অস্থিরতা চলতে থাকলে কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহিদুলল্গাহ আজিম বলেন, সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে এরই মধ্যে ২৫ শতাংশ রফতানি আদেশ কমেছে। এছাড়া আদেশ বাতিল ও জাহাজীকরণ বাতিল হচ্ছে প্রায়ই। বাটেক্সপোতে প্রধান দুই দলের নেতাদের কাছে রাজনৈতিকভাবে ব্যবসায় সহযোগিতা চাওয়া হলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন নেই।
চামড়া রফতানিকারকরা বলেন, কোরবানির ঈদের দুই সপ্তাহ পর ঢাকার বাইরে থেকে চামড়া আসতে শুরু করে। পুরো দুই থেকে তিন সপ্তাহ ঢাকার ট্যানারিগুলোতে আসে। এবার প্রায় দেড় কোটি চামড়া প্রক্রিয়া করতে হবে। এর মধ্যে গরু ও মহিষের চামড়া আছে ৬০ লাখ। সাধারণত লবণ দিয়ে দুই সপ্তাহের কিছু বেশি সময় চামড়া রাখা যায়। এরপর ট্যানারিতে নিয়ে আসতে না পারলে চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই চলমান এই রাজনৈতিক অস্থিরতায় এ খাতের ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) চেয়্যারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, এ সপ্তাহ থেকেই ঢাকার বাইরের চামড়া আসার কথা রয়েছে। পরিবহন ধর্মঘট বা হরতালের কারণে চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এবারের ঈদে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার চামড়া ক্রয় হয়েছে।
এদিকে, দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান না হলে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের মতো রফতানি খাতও চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। গত অর্থবছরের রফতানি খাত বেশ ভালো করেছে। জিডিপিতে রফতানি খাতের অগ্রগতি ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। কিন্তু চলতি অর্থবছরের নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার কারণে তা কমে গিয়ে ১১ শতাংশ হতে পারে বলে ভবিদ্বাণী করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, পোশাক খাতের অস্থিরতা লাঘব করা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর শর্তাবলী পূরণ না করতে পারলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করতে পারে। আর এটি বাতিল করলে শুধু পোশাক খাতের রফতানি আয় কমবে ৪ থেকে ৮.১ শতাংশ পর্যন্ত। দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সমাধান না হলে রফতানি খাত বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)সহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক সংস্থা ভবিষ্যদ্বাণী করেছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/11/03/223084#.UnZ_UlNV9aQ


নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তেই সুদহার কমানো সম্ভব

নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তেই সুদহার কমানো সম্ভব

ব্যাংকের আমানত ও ঋণের সুদহারের মধ্যকার পার্থক্য (স্প্রেড) ৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।

সংগঠনটি বলেছে, দেশে এখন এই স্প্রেডের হার ৫ শতাংশ। ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, সঞ্চিতির পরিমাণ, করপোরেট কর ও মুনাফা কমিয়ে আনলে স্প্রেডও কমবে, সুদহারও কমে আসবে।

শুধু তা-ই নয়, নীতিনির্ধারণী কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েই ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার কমিয়ে আনা সম্ভব। সুদের হার যৌক্তিকীকরণ করতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশও রয়েছে এফবিসিসিআইয়ের।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দেওয়া ঋণের সুদহারের ওপর লিখিত প্রস্তাবে এফবিসিসিআই এমন সুপারিশ করেছে। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরামউদ্দিন আহ্মদের সই করা প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

সম্প্রতি এফবিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে সুদহার বিষয়ে এফবিসিসিআইকে একটি প্রস্তাব দিতে বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী। এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ২০১২ সালে সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়ার পর থেকে ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়ছে। দীর্ঘমেয়াদি মূলধনের ক্ষেত্রে এ দেশে সুদহার বর্তমানে ১৬ থেকে ১৯ শতাংশ। আবার উচ্চ সুদের পাশাপাশি বিভিন্ন নামে আদায় করা হচ্ছে সেবা মাশুল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্প্রেড ৫ শতাংশের মধ্যে থাকার কথা থাকলেও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের স্প্রেড এখনো এর ওপরে।

এফবিসিসিআইয়ের সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে খাতভিত্তিক ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। 

দুই বছরের জন্য প্রকল্প ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ নির্ধারণ, খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনা এবং প্রয়োজনে নীতিমালা কিছুটা শিথিল করা, নতুন ঋণ শ্রেণীবিন্যাসকরণ নীতিমালার পরিবর্তে আগের নীতিমালাটি বহাল রাখার সুপারিশ করেছে এফবিসিসিআই।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/63874/


১১৮ বছর পর মাত্র ১ শতাংশ পণ্য পরিবহন!

১১৮ বছর পর মাত্র ১ শতাংশ পণ্য পরিবহন!

চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য আনা-নেওয়ার কার্যক্রম শুরুর ১১৮তম বর্ষপূর্তি আজ।

পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ১৮৯৫ সালের ঠিক এই দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে রেলওয়ের সংযোগ চালু করা হয়েছিল। তাও আবার পণ্য ওঠানো-নামানোর জেটি নির্মাণেরও তিন বছর আট মাস আগের কথা। অথচ সুদীর্ঘ এই সময়েও রেলের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের হার বাড়েনি। নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী হলেও তা এখন মাত্র ১ শতাংশে এসে ঠেকেছে!

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৮৯৫ সালের ৩ নভেম্বর বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম স্টেশনের রেল যোগাযোগ চালু করে তৎকালীন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে। সিলেট ও আসাম প্রদেশের চা-ব্যবসায়ীদের অনুরোধে এ রেললাইন চালু হয়। এরপর বন্দর থেকে রেলের অনেক নতুন নতুন গন্তব্য  যোগ হয়। এখনো বন্দরের সিংহভাগ জেটি ও শেডের সঙ্গে যুক্ত থাকা রেললাইন পুরোনো সেই ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

রেলওয়ে ও বন্দরের কর্মকর্তারা এবং ব্যবসায়ীরা জানান, গত শতকের আশির দশক পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে রেলপথই ছিল প্রধান মাধ্যম। এরই মধ্যে সড়কপথের উন্নতি ও নৌপথে পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি পাওয়ায় রেল গৌণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সরকারি আমদানির পণ্য ও জ্বালানি তেল এবং বেসরকারি খাতের শুধু কনটেইনারই পরিবহন হচ্ছে।

তবে ব্যবসায়ীদের রেলকে এড়িয়ে চলার কারণও রয়েছে। যেমন—পণ্যবাহী কনটেইনার রেলে তুলতে যেখানে এক-দুই সপ্তাহ সময় লেগে যায়, সেখানে সড়কপথে এক-দুই দিনের মধ্যেই বন্দর থেকে কারখানায় পণ্য নেওয়া যায়। তাই খরচ বেশি হলেও সড়কপথে পণ্য পরিবহনে ব্যবসায়ীদের ঝোঁক বেশি।

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক বেলাল উদ্দিন মনে করেন, সড়কপথের ব্যাপক উন্নতি, নৌপথে কম খরচে দূর-দূরান্তে পণ্য পরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি এবং রেলওয়েরও যাত্রী পরিবহনকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই মূলত রেলে পণ্য পরিবহন কমেছে।

বন্দরের হিসাবমতে, গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে  মোট চার কোটি ৩৩ লাখ টন পণ্য পরিবহন হয়। এর মাত্র এক শতাংশের সামান্য বেশি বা চার লাখ ৫৭ হাজার টন পরিবহন হয় রেলপথে। 

http://www.prothom-alo.com/economy/article/63868


পুঁজিবাজারে লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত

পুঁজিবাজারে লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত

পুঁজিবাজারগুলোতে মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের দুই পুঁজিবাজার সূচকের উন্নতি ধরে রাখে। গতকাল দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ডিএসই-৩০ সূচক বাড়ে ৪ দশমিক ৪১ পয়েন্ট। চট্টগ্রামে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের যথাক্রমে ১১১ দশমিক ৫৬ ও ৭৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট উন্নতি ঘটে। বৃদ্ধি পেয়েছে দুই বাজারের লেনদেনও। ঢাকায় রোববারের ২৪৯ কোটির স্থলে গতকাল লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক দিনের ব্যবধানে দেশের শীর্ষ পুঁজিবাজারটির লেনদেন বেড়েছে ১১৯ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে ২৩ কোটি টাকা থেকে ৪১ কোটি টাকায় উন্নীত হয় লেনদেন। রোববারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর গতকাল ব্রোকার হাউজগুলোতে ছিল বিনিয়োগকারীদের বেশ ভিড়। ক’দিন আগেও যেখানে বিনিয়োগকারীদের খুব একটা উপস্থিতি দেখা যায়নি সেখানে গতকাল সবগুলো হাউজ ছিল বেশ কর্মচঞ্চল। লেনদেনে অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। অপর দিকে টেলিফোনে যারা নিয়মিত লেনদেন করেন তারাও ছিলেন বেশ সক্রিয়। হাউজগুলোতে ট্রেডারদের সময় কেটেছে বেশ ব্যস্ততার মধ্যে। একটি প্রথম সারির মার্চেন্ট ব্যাংকের ট্রেডিং ফোরে গিয়ে উপস্থিত গ্রাহকদের মধ্যে বেশ স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা যায়। ক’দিন আগেও বাজার নিয়ে প্রচণ্ড হতাশা ছিল তাদের মধ্যে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তাদের কয়েকজন বলেন, এতদিন পুঁজিবাজার নিয়ে সবাই বেশ হতাশ ছিলেন। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আজ না হয় কাল সমঝোতার একটা পথ বেরিয়ে আসবেই। তাই যত কম মূল্যস্তরে বাজারে ঢোকা যায় ততই মঙ্গল। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হলে বাজার তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে পারে। মূলত এ প্রত্যাশা থেকেই তাদের সক্রিয় হওয়ার এ উদ্যোগ। বাজার এখন যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে সঙ্কট নিরসন হলে হয়তো এ বিনিয়োগ থেকে তারা লাভবান হতে পারবেন। তবে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশকে দেখা গেছে যারা এখনো ধীরে চলো নীতিতে বিশ্বাসী। এ অংশটি মনে করে, পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে তা নিশ্চিত হলেই কেবল তারা বিনিয়োগে ফিরবে। কারণ অতীতে বারবার এ ধরনের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি হলেও তা টিকে থাকেনি। অথচ সে সময় ভালো বাজারের প্রত্যাশায় বিনিয়োগে ফিরে এখন লোকসানের ঘানি টানছেন। তাই ভেবেচিন্তেই এগোনোর চিন্তা তাদের। এ দিকে গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো মূল্যবৃদ্ধি ধরে রেখেছে ব্যাংকিং খাত। গতকালও দুই বাজারের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় এ খাতের স্পষ্ট প্রাধান্য ছিল। পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কয়েকটিও জায়গা করে নেয় এ তালিকায়। বিপর্যয়ের পর গত তিন বছরে এ দু’টি খাতেই সবচেয়ে বেশি দরপতন ঘটে। এ দু’টি খাতের মূল ব্যবসায় কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিপর্যয়ের আগে পুঁজিবাজারে করা বিনিয়োগের লোকসানের প্রভিশনের ঘানি টানতে গিয়ে প্রায় প্রতি বছরই মুনাফার স্থলে লোকসান টানতে হচ্ছে। আর এরই ফলে এ দুই খাতে আগ্রহ হারান বিনিয়োগকারীরা। রোববারের ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে লেনদেনের শুরুতেই দুই পুঁজিবাজার ছিল বেশ ঊর্ধ্বমুখী। ঢাকা স্টকে মাত্র এক ঘণ্টার লেনদেনে সূচক বেড়ে যায় ১০০ পয়েন্টের বেশি। আগের দিন লেনদেন শেষ করা ডিএসইএক্স সূচকের ৩ হাজার ৯০৯ পয়েন্ট থেকে লেনদেন শুরু করা ডিএসইএক্স সূচক বেলা সাড়ে ১১টায় পৌঁছে যায় ৪ হাজার ১২ পয়েন্টে। এ সময় লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি বাদে সবগুলোই ছিল মূল্যবৃদ্ধির তালিকায়। তবে বেলা যত বাড়তে থাকে কমতে থাকে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা। এ পর্যায়ে সূচক হয়ে ওঠে নি¤œমুখী। কমতে থাকে মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা। দিনশেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় সমানে। অপর দিকে বেড়ে যাওয়া সূচক থেকে ৪১ পয়েন্ট উন্নতি ধরে লেনদেন শেষ করে ঢাকা পুঁজিবাজার। লেনদেনে গতকালও প্রাধান্য ধরে রাখে টেক্সটাইল খাত। দিনের লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির প্রথম দু’টিই ছিল এ খাতের। এর মধ্যে ৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকায় ৫১ লাখ ৬৩ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে আগের দিন দ্বিতীয় স্থানে থাকা এনভয় টেক্সটাইল উঠে আসে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে। ২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনদেন করে আগের দিন শীর্ষে থাকা একই খাতের জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন্স নেমে আসে দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় আরো ছিল ইউসিবিএল, আরগন ডেনিমস, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, আর এন স্পিনিং, বেক্সিমকো লি. ও আইএফআইসি ব্যাংক। মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাতের বেঙ্গল থার্মোপ্লাস্টিকস। ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ দাম বাড়ে কোম্পানিটির। এ ছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ৮.৮৪, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৮.০৪, বেক্সিমকো লি. ৭.৮৩, আইএফআইসি ব্যাংক ৭.৭২, ব্যাংক এশিয়া ৬.৯৫, এবি ব্যাংক ৬.০২, ফার্স্ট লিজ ফিন্যান্স ৬.০০ ও লঙ্কা বাংলা ফিন্যান্সের ৫.৮৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অপর দিকে দর হারানোর তালিকার শীর্ষে ছিল দেশ গার্মেন্টস। ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি। অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে লিগেসি ফুটওয়্যার ৮.২১, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট ৭.৯৫, ফাইন ফুড ৭.৮৬, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ৭.৮১, হাক্কানি পেপার ৬.৭৭ ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক ৬.৪১ শতাংশ দর হারায়। এর বেশিরভাগই নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্ত তালিকায় থাকা কোম্পানি।

http://www.dailynayadiganta.com/welcome/post/27474#.Um_k2FNV9aQ


কাঁচাবাজারে যেন আগুন

কাঁচাবাজারে যেন আগুন

দুই দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। করলা, টমেটো, শিমসহ প্রায় সব সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
হরতালের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর নয়াবাজার, নারিন্দা, কাজীপাড়া ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে তরিতরকারি নিয়ে ট্রাক আসছে না। আর এ কারণেই শাকসবজির দাম বেড়ে গেছে—এমনটাই জানালেন কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী।
তবে কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, হরতালে সরবরাহের পাশাপাশি চাহিদাও কম। খুচরা বিক্রেতারা হরতালের সুযোগ নিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাইকারি বাজারে খুব বেশি দাম বাড়েনি বলে দাবি করেন তিনি।
তাঁর কথার সত্যতা কিছুটা হলেও পাওয়া গেল কারওয়ান বাজারেই। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাজারটিতে গিয়ে দেখা গেল, কাঁচা মরিচের কেজি ৮০ টাকা। আবার ২০-২৫ হাত দূরের ফুটপাতের ওপর বসা বেশির ভাগ ব্যবসায়ী একই মরিচের দাম হাঁকছেন ১২০ টাকা। অবশ্য নারিন্দা বাজারে ১৬০ ও নয়াবাজারে ১২০ আর মিরপুরের কাজীপাড়া বাজারে ১৫০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়।
সবজির দাম বেশি: নারিন্দা বাজারে গতকাল সকালে করলা ১০০ টাকা কেজি শুনে আঁতকে উঠলেন ভাঙারি ব্যবসায়ী শরীফ হোসেন। অন্য শাকসবজির কী অবস্থা, জানতে চাইলে বিক্রেতা বলেন, মরিচ ১৬০, টমেটো ১০০, শিম ৭০ আর পেঁয়াজ ১১৫ টাকা কেজি।
সবজির এমন লাগামছাড়া দামের কারণ জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতা তরুণটির ঝটপট উত্তর, ‘সব ডাবল ডাবল হরতালের কারণে তরকারি আসে নাই। তাই দাম বেশি।’
ক্রেতা শরীফ হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সবজির দাম শুইন্যা কী করব, বুঝতাছি না। শুক্রবার ৬০ টাকায় কাঁচা মরিচ কিনছি।’ তিনি আরও জানালেন, পেঁয়াজ ৯৫, করলা ৪৮, টমেটো ৮০ ও ৪০ টাকা কেজি দরে শিম কিনেছিলেন। ক্ষুব্ধ শরীফ বলেন, ‘হ্যারা হরতাল দেয় আর আমরা মাশুল গুনি।’
কারওয়ান বাজারে গত দুই দিনের ব্যবধানে ২০-৬০ টাকা বেড়ে কাঁচা মরিচ ৮০-১২০, ৪০ টাকার করলা ৬০, ২০ টাকার পটোল ৩০-৩৫, ৬০ টাকার গাজর ৮০, ৩০ টাকার বেগুন ৫০-৬০ টাকা, ১২-১৫ টাকার ঝিঙা ৩০, ৮০ টাকার টমেটো হয়েছে ১১০ টাকা। এ ছাড়া ঈদের পর ব্রয়লার মুরগির দাম কম থাকলেও হরতালে আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত শুক্রবার ১১৫-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল নারিন্দায় ১৩০ ও নয়াবাজারে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে কারওয়ান বাজারে এখনো ১১৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি মিলছে।
১০০ টাকা ছাড়াল পেঁয়াজ: হরতালে পেঁয়াজের দর ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তবে একেক বাজারে একের দামে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে দুই দিনের ব্যবধানে ৯৫ টাকার দেশি পেঁয়াজ ১০৫ ও ৮০ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয় গতকাল। তবে নারিন্দা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম ১১৫ টাকা। অন্যদিকে নয়াবাজারে দেশি ১১০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা।
শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম বলেন, দেশি পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষ। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে একটি জাতের পেঁয়াজ উঠলেও আমদানি কম হচ্ছে। তাই গ্রামাঞ্চলের বড় কৃষকদের মজুত করা পেঁয়াজই সারা দেশে যাচ্ছে। তবে হরতালে তা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশি পেঁয়াজ আসতে আরও দুই মাস সময় লাগবে। তবে আগামী মাসে মুড়িকাটা পেঁয়াজ এলে দাম একটু কমতে পারে।
বিপাকে নরসিংদীর চাষিরা: আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, হরতালের কারণে নরসিংদীর সবজিচাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারেরা কম আসায় জমি থেকে বেশি পরিমাণে সবজি তুলছেন না তাঁরা। জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর নরসিংদীর ছয় উপজেলায় প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ করা হয়েছে।
গতকাল সকালে সবজিরহাট বারৈচায় গিয়ে দেখা যায়, অল্প কয়েকজন চাষি ভ্যান, রিকশা ও মাথায় করে বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি নিয়ে বাজারে আসছেন। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে খুব কম। বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের সবজিচাষি রুবেল মিয়া নিয়ে এসেছেন লালশাক ও শিম। তিনি বলেন, ‘হরতালের কারণে বেশি সবজি আনি নাই। যদি বেইচতে না পারি।’
বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৩৫-৪০, করলা ৩৫-৪০, পেঁপে ছয়-আট, বরবটি ২০-২৫, শসা ১৫-২০, লালশাক ১৮-২২, শিম ২৫-৩০, লাউ ২৫-৩০, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কয়েকজন চাষি জানালেন, তিন দিন আগেও অর্ধেক দামে এসব সবজি বিক্রি হয়েছিল।
ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে বারৈচা বাজারে আসা পাইকার ইয়াকুব আলী বলেন, ‘হরতালের জন্য আমি গত শনিবার রাতে চলে আসছি। এখন বিভিন্ন হাট থেকে অল্প অল্প করে সবজি কিনে সিএনজি দিয়ে রাতে ঢাকা পাঠাই। মনে করছিলাম হরতালে অল্প হলেও গাড়ি চলব। কিন্তু কোনো গাড়ি ঢাকায় যেতে রাজি হচ্ছে না। বড় বিপদে আছি।’

http://www.prothom-alo.com/economy/article/59617


সরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটাতে ১৩ শর্ত

সরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটাতে ১৩ শর্ত

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা বর্তমান সরকারের আমলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না-ও হতে পারে। এ বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দেওয়া ১৩ শর্ত নির্দিষ্ট সময়ে পূরণ করা ব্যাংকগুলোর পক্ষে সম্ভব কি-না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে শর্ত পূরণ করে একটি প্রতিবেদন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ১৩ শর্তে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণ করা হবে। এসব শর্ত পরিপালন করার জন্য সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে।
মূলধন ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোর শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কীভাবে অর্থ আদায় করা যায় তার পরিকল্পনা জানাতে বলা হয়েছে। ব্যাংকগুলো শর্ত পূরণে যৌক্তিক কর্মপরিকল্পনা জমা দেওয়ার পরই মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য চার ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে বড় অঙ্কের ঘাটতিতে রয়েছে। এই মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দও রাখা হয়েছে। তবে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের অর্থ বরাদ্দের আগে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই কর্মপরিকল্পনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) প্রতিপালন, ব্যাংকগুলোর অটোমেশন, শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছ থেকে নগদ আদায়, স্ট্রেস টেস্টিং, তারল্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট গঠনসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কোর রিস্ক ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন পরিপালন, পেন্ডিং মামলা ও অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিকরণ, এনপিএলের (নন-পারফর্মিং লোন) পরিমাণ কমানো, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, ঋণ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা যথাযথভাবে পরিপালন এবং ডকুমেন্টেশন বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন বা সম্ভাব্য করণীয় ও সংশ্লিষ্ট তথ্যসহ জমা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। ব্যাংকগুলো এক বছর ধরে মূলধন ঘাটতিতে ভুগছে। বিশেষ করে সোনালী ব্যাংকের সংকট বেশি। মূলধন ঘাটতির কারণে তাদের দৈনন্দিন কাজেও সমস্যা হচ্ছে। বাজেটের আগে গত মে মাসে মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য এই ব্যাংকগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চেয়েছিল। এ জন্য চলতি বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এখন এই টাকা যাতে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা হয় তার জন্য কিছু করণীয় বা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) চার ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জুন শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকের মোট মূলধন ঘাটতি ছিল ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ৪ হাজার ৫৪৪ কোটি, জনতা ১ হাজার ৬২৩ কোটি, অগ্রণী ২ হাজার ৪৮১ কোটি ও রূপালী ব্যাংকের ৪১৪ কোটি টাকা। এ সময়ে ব্যাংকগুলোয় খেলাপি ঋণও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
.২০১৩ সালের জুন শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই ব্যাংকের মোট ঋণের ৩৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। জনতা ব্যাংকে ৪ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যা ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ। অগ্রণী ব্যাংকে ৪ হাজার ৬০৬ কোটি, যা ২২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। রূপালী ব্যাংকে ২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা, যা ওই ব্যাংকের মোট ঋণের ২৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
হলমার্কসহ আরও তিনটি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে জালিয়াতি করে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছে। অন্যদিকে, বিসমিল্লাহ গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে লোপাট করেছে এক হাজার তিনশ' কোটি টাকা। এসব কারণে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোর এই মূলধন ঘাটতি।

http://www.samakal.net/2013/10/29/16634