Business Blog

Displaying 51-60 of 98 results.

করমুক্ত সীমার ঊর্ধ্বের আয়ের ক্ষেত্রে প্রদেয় ন্যূনতম আয়করের পরিমাণ এলাকাভেদে

এলাকার বিবরণ    ন্যূনতম করের হার

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা ৫,০০০/-টাকা
অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা  ৪,০০০/-টাকা
সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতা ৩,০০০/-টাকা

 

  • ন্যূনতম আয়করের এ বিধানের ফলে একজন করদাতার আয় যে কোন স্থানেই অর্জিত হউক না কেন তিনি যেখানে অবস্থান করবেন তাঁর সে অবস্থানের ভিত্তিতেই ন্যূনতম করের হার নির্ধারণ হবে। তবে কোন করদাতা যদি একই আয় বছরে একাধিক স্থানে অবস্থান করে থাকেন তাহলে যে স্থানে তিনি সর্বাধিককাল অবস্থান করেছেন সে অবস্থানস্থলের জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম কর হার তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
  • ব্যবসা আয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার মূখ্য স্থানই ন্যূনতম করের জন্য একজন করদাতার অবস্থানস্থল হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • একজন চাকুরীজীবি করদাতা আয়বছরে একাধিক স্থানে কর্মরত থাকলে যে স্থানে তিনি অধিক কাল কর্মরত ছিলেন ন্যূনতম করের জন্য সে স্থানই তাঁর অবস্থানস্থল বলে বিবেচিত হবে।
  • করদাতা অনিবাসী হলে বাংলাদেশে তিনি যে ঠিকানা ব্যবহার করেন সে ঠিকানাই তাঁর অবস্থানস্থল হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • করমুক্ত সীমার উর্ধ্বে আয় আছে এমন করদাতার প্রদেয় আয়করের পরিমাণ হিসাব অনুযায়ী তাঁর জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম আয়করের পরিমাণ অপেক্ষা কম হলে বা বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত বিবেচনার পর প্রদেয় আয়করের পরিমাণ প্রযোজ্য ন্যূনতম আয়করের কম বা ঋণাত্মক হলেও তাঁকে তাঁর জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম আয়কর পরিশোধ করতে হবে।

২০১৬-২০১৭ কর বছরের জন্য প্রযোজ্য আয়কর হার

(ক) ব্যক্তি করদাতাসহ অন্যান্য করদাতার  (কোম্পানী ব্যতীত) জন্য সাধারণ করহারঃ
(১)    অর্থ আইন, ২০১৬ তে বর্ণিত করহারের তফসিল অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তি করদাতা (অনিবাসী বাংলাদেশীসহ), হিন্দু যৌথ পরিবার, অংশিদারী ফার্ম, ব্যক্তি সংঘ এবং আইনের দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তিসহ অন্যান্য করদাতার ক্ষেত্রে মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য কর হার হবে নিম্নরূপঃ


প্রথম ২,৫০,০০০/ -টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর
শূন্য
পরবর্তী  ৪,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১০%
পরবর্তী ৫,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১৫%
পরবর্তী ৬,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০%
পরবর্তী ৩০,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২৫%
অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর...... ৩০%

   
তবে, উপরোল্লিখিত কর হার করদাতার মর্যাদা নির্বিশেষে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারক করদাতার উক্ত ব্যবসায় হতে অর্জিত আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
(২) মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছর বা তদুর্ধ বয়সের পুরুষ করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা  ৩,০০,০০০/-টাকা।
(৩) প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩,৭৫,০০০/-টাকা।
(৪) গেজেটভূক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার আয়ের সীমা ৪,২৫,০০০/- টাকা।
কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাত বা আইনানূগ অভিভাবকের জন্য করমুক্ত সীমা ২৫,০০০/- টাকা বেশি হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হলে যেকোন একজন এ সুবিধা পাবেন। 

নিবাসী/অনিবাসী কিভাবে নির্ধারিত হয়?

করদাতা যদি একটি আয় বছরে  (Income Year)  একটানা বা অনিয়মিতভাবে কমপক্ষে ১৮২ দিন বাংলাদেশে থাকেন, তাহলে তিনি ’নিবাসী’ ঘরে টিক (√) দেবেন; তা নাহলে ’অনিবাসী’ ঘরে টিক (√) দিতে হবে। তবে কোন ব্যক্তি যদি আয় বছরে একটানা বা অনিয়মিতভাবে কমপক্ষে ৯০ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করেন এবং এর পূর্ববর্তী ৪ বছরে একটানা বা অনিয়মিতভাবে সর্বমোট কমপক্ষে ৩৬৫ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করেন তাহলেও তিনি নিবাসী হিসেবে গণ্য হবেন বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের সকল কর্মকর্তাকর্মচারী  কিংবা বিদেশে কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তাকর্মচারী  নিবাসী হিসাবে রিটার্ন দাখিল করবেন।

কর বছর বলতে কি বুঝায়?

করদাতা যে বছরে আয় করেন তার পরের বছর হলো কর বছর। যেমন, ১ জুলাই ২০১৫ থেকে ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত  সময়ে করদাতা যে আয় করেন তাঁর কর বছর হবে  ২০১৬-২০১৭।  আবার  পঞ্জিকা  বছর  অনুযায়ী  অর্থাৎ  ১  জানুয়ারী  ২০১৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত  কোন করদাতা হিসাবের খাতা রাখলে তাঁরও কর বছর হবে  ২০১৬-২০১৭।  যদি  বাংলা  বছর অনুযায়ী  হিসাবের খাতাপত্র  রাখেন অর্থাৎ তার আয় বছর যদি ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে শেষ হয় তাহলেও কর বছর হবে ২০১৬-২০১৭।

TIN (টিআইএন) সনদ এর প্রয়োজনীয়তা, ধারা 184A

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 184A ধারার মাধ্যমে বিদ্যমান বিধান অনুসারে ২৭টি ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নিকট টিআইএন সনদ দাখিলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ১২ ডিজিটের টিআইএন সনদ দাখিল করার বিধান করা হয়েছে।
(১)    আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র (এলসি) খেলার সময়;
(২)    আমদানি রেজিষ্ট্রেশন সার্র্টিফিকেট পাওয়ার উদ্দেশ্যে আবেদনের সময়;
(৩)    সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভা এলাকা বা বিভাগীয় সদর দপ্তর এর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করারর ক্ষেত্রে;
(৪)    চুক্তিকার্যকর, পণ্য সরবরাহ বা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দরপত্র দাখিলের সময়;
(৫)    কোম্পানী আইন ১৯৯৪-এর আওতায় নিবন্ধনকৃত কোন ক্লাবের সদস্য হবার জন্য আবেদন দাখিল করার সময়;    
(৬)    সাধারন বীমার সার্ভেয়ার হিসেবে তালিকাভুক্তি বা লাইসেন্স প্রাপ্তি বা নবায়নের সময়;
(৭)    কোন সিটি করর্পোরেশন অথবা কোন জেলা সদর দপ্তরস্থ পৌরসভা এলাকার মধ্যে অবস্থিত কোন ভূমি, ইমারত বা কোন ফ্লাটের চুক্তিমূল্য যদি এক লক্ষ টাকার উর্ধ্বে হয় সে ক্ষেত্রে ঐ ভূমি ভবন বা ফ্লাটের ক্রয়ের রেজিষ্ট্রেশনের সময়। তবে সিটি করর্পোরেশন এলাকার মধ্যে অবস্থিত কোন  ভূমি ভবন বা কোন ফ্লাটের ক্রেতা বাংলাদেশের অনিবাসী হইলে তার ক্রয়ের রেজিষ্ট্রেশনের সময় এর বিধান কার্যকর  হইবে না;
(৮)    কার, জিপ বা মাইক্রোবাসের নিবন্ধন, মালিকানা বদল বা ফিটনেস রেজিষ্ট্রেশন নবায়নের সময়;
(৯)    কোন বাণিজ্যিক ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানী কর্তৃক কোন ব্যাক্তিকে পাঁচ লক্ষ টাকার অধিক ঋণ বরাদ্দ দানের সময়;
(১০)    ক্রেডিট কার্ড ইস্যুর সময়;
(১১)    ডাক্তার, চার্টার্ড একাউনন্ট্যান্ট, কষ্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট একাউনন্ট্যান্ট, আইনজীবি বা আয়কর পেশাজীবির পেশাদারীর লাইসেন্স অনুমোদনের সময়;
(১২)     কোম্পানি আইন ১৯৯৪ (১৯৯৪ সন এর ১৮নং আইন) এর আওতায় কোম্পানীর স্পন্সর ডাইরেক্টদের রেজিষ্ট্রেশনের  সময় এবং যেকোন শেয়ারহোল্ডারের সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর পরিচালক হওয়ার ক্ষেত্রে। অনিবাসী বিদেশী নাগরিকের ক্ষেত্রে কোম্পানীর পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ার হোল্ডারের জন্য টিআইএন প্রযোজ্য নয়;
(১৩)    মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন ১৯৭৪ এর আওতায় নিকাহ রেজিষ্টারের লাইসেন্স প্রদানের সময়। তবে শর্ত থাকে যে, যে ব্যক্তি ইতোমধ্যে নিকাহ রেজিষ্টার হিসাবে লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছে, তার ক্ষেত্রে অত্র বিধান কার্যকর হওয়ার  তিন মাসের মধ্যে টি.আই.এন সনদ সংগ্রহ করতে হবে;
(১৪)    কোন ব্যবসা সংস্থার সদস্য পদের জন্য আবেদন বা উহা নবায়নের সময়;  
(১৫)    ইমারত নির্মানের নিমিত্তে  রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(রাজউক), চট্রগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), খুলনা  উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)  অনুমোদনের সময় টিআইএন সনদ দাখিল করতে হবে।
(১৬)    ড্রাগ লাইসেন্স ইস্যুর সময়;
(১৭)    সিটি করর্পোরেশন, পৌরসভা  বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর আওতাধীন এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে ;
(১৮)    সিটি করর্পোরেশন, পৌরসভা  বা ক্যান্টমেন্ট বোর্ড এর আওতাধীন এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে ;
(১৯)    ভাড়ায় চালিত বাস, ট্রাক, প্রাইমমুভার, লরী বা এরূপ পরিবহনের রেজিষ্ট্রেশন বা ফিটনেস নবায়নের সময় বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ;
(২০)    ভাড়ায় চালিত লঞ্চ, ষ্টীমার, মৎস শিকারের ট্রলার, কার্গো, কোষ্টার, ডাম্প বার্জ ইত্যাদির সার্ভে সার্টিফিকেট ইস্যু বা নবায়ন;
(২১)    ইন্সুরেন্স কোম্পানীর এজেন্টের সার্টিফিকেট রেজিষ্ট্রেশন বা নবায়ন;
(২২)    উপ কর কমিশনারের কার্যালয় বা পরিবেশ দপ্তর কর্তৃক ইট উৎপাদনের জন্য ক্ষেত্র অনুসারে অনুমোতি প্রদান বা প্রদত্ত অনুমতি নবায়নের সময়;
(২৩)    উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ক্ষেত্রে;
(২৪)    সিটি কর্পোরেশন অথবা জেলা সদরের পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষাদানরত কোন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে উক্ত শিক্ষার্থীর মাতা বা পিতা বা অভিভাবকের ক্ষেত্রে।
(২৫)    চাকরি (বেতন ভাতাদি আদেশ, ২০১৫ অথবা ২০১৫ সালে প্রবর্তিত অন্যান্য পে-স্কেল এ দশম বা সমতুল্য গ্রেড বেতন ভাতা প্রাপ্ত Emplyee;
(২৬)    সরকারি উৎস থেকে এমপিও ভুক্তির আওতায় ১৬,০০০/- টাকা বা তদূর্ধ্ব বেতন ভাতা প্রকৃতির কোন অর্থ প্রাপ্ত হলে;
(২৭)    ব্যবস্থাপনা ও প্রাশাসনিক পদে বা উৎপাদনের সুপারভাইজার পদে নিয়জিত সকল Emplyee।

 

জাল করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ব্যবহারের জন্য জরিমানা/শাস্তির বিধান

জাল করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীর উপর আর্থিক জরিমানা আরোপসহ কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। এ লক্ষ্যে অধ্যাদেশে নতুন তিনটি ধারা রয়েছে, যা নিম্নরূপঃ
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের Section 124A অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গতকারন ছাড়া যদি কোন ব্যক্তি অন্যের টিআইএন ব্যবহার করেন অথবা জাল টিআইএন ব্যবহার করেন বা আয়কর আইন অনূযায়ী যে সব ক্ষেত্রে টিআইএন ব্যবহার বাধ্যতামূলক, সেসব ক্ষেত্রে জাল প্রমান পত্র ব্যবহার করলে, জাল টিআইএন ব্যবহারকারীর উপর সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনার কর্তৃক সর্বোচ্চ ২০,০০০/-টাকা জরিমানা আরোপের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। তবে জরিমানা আরোপের পূর্বে Section 130 এর বিধান পরিপালন করতে হবে।
(খ) আয়কর অধ্যাদেশের Section 124AA অনুযায়ী 184A ধারায় উল্লেখিত কর্তৃপক্ষ করদাতাকে  সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান কালে টিআইএন সনদ যাচাই না করলে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে।
(গ) আয়কর অধ্যাদেশের Section 165A অনুযায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে (Deliberately) যদি কোন ব্যক্তি জাল টিআইএন ব্যবহার করেন বা অন্যের টিআইএন ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদন্ড বা ৫০,০০০/-টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে।

TIN (টিআইএন) বলিতে কি বুঝায়?

TIN (টিআইএন) বলিতে Tax Payer’s Identification Number বা করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর বুঝায়। টিআইএন ১২ অংকের একটি  কম্পিউটার জেনারেট নম্বর।

রিটার্ন দাখিল না করলে কি হয়?

কোন করদাতা আয়কর অধ্যাদেশের ৭৫ ধারানুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার উপর আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরলসুদ এবং ৭৩এ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ (delay interest) আরোপযোগ্য হবে। যে ক্ষেত্রে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করে উপ কর কমিশনার কর্তৃক মঞ্জুরকৃত বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন, সে ক্ষেত্রে করদাতার উপর জরিমানা আরোপিত হবে না, তবে অতিরিক্ত সরলসুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপিত হবে।

রিটার্ন কোথায় দাখিল করতে হবে?

প্রত্যেক শ্রেণীর করদাতার রিটার্ন দাখিলের জন্য আয়কর সার্কেল ঠিক করা আছে। করদাতারা তাঁদের নাম, চাকুরীস্থল বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানার ভিত্তিতে নির্ধারিত  আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন।
এই ক্ষেত্রে গোল্ডেন বাংলাদেশের A  টু Z Business Solution এর Portal www.goldenbusinessbd.com এর
Juridiction এ আপনার সার্কেল খুজে বের করতে পারবেন। এবং বই এর অধিক্ষেত্র দেখুন।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে কি ধরণের বিলম্ব সুদ আরোপ হবে?

একজন করদাতা  ৩০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখের মধ্যে, অর্থাৎ Tax Day এর মধ্যে ২০১৬-১৭ কর বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হলে করদাতার উপর মাসিক ২% হারে বিলম্ব সুদ (delay interest) আরোপযোগ্য হবে। করদাতা উপ কর কমিশনারের নিকট হতে রিটার্ন দাখিলের জন্য সময় নিলেও বিলম্ব সুদ পরিশোধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে বিলম্ব সুদ ছাড়াও অতিরিক্ত সরল সুদ ও জরিমানা আরোপসহ অধ্যাদেশের অধীন  অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের বিধানও যথারীতি প্রয়োগযোগ্য হবে।
বিলম্ব সুদ পরিগণনা করা হবে সংশ্লিষ্ট কর বছরের করদাতার মোট আয়ের উপর নিরূপিত করে (tax assessed on total income) এবং উৎস করসহ অগ্রিম করের পার্থক্যের উপর।
মোট আয়ের উপর নিরূপিত কর (tax assessed on total income) বলতে বুঝাবে-
(ক) ধারা 82BB এর আওতায় দাখিলকৃত এবং উক্ত ধারার আওতায় নিষ্পত্তিকৃত রিটার্নের ক্ষেত্রে, উক্ত ধারার উপধারা (1) এর অধীন প্রদেয় করদায়, উপধারা (2) এর অধীন পরিগণনাকৃত করদায় বা উপধারা (3) এর অধীন নিরূপিত মোট আয়ের ভিত্তিতে নিরূপিত করদায়- এ তিনটির মধ্যে যেটি বেশি হয়, তা;
(খ) ধারা 82BB এর আওতায় নিষ্পত্তিকৃত নয় এরূপ রিটার্নের ক্ষেত্রে, উপ কর কমিশনার কর্তৃক নিরূপিত মোট আয়ের ভিত্তিতে পরিগণনাকৃত করদায়।
বিলম্ব সুদ পরিগণনার সময়কাল হবে Tax Day এর পরবর্তী দিবস থেকে শুরু করে-
(ক) যেক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের দিন পর্যন্ত;
(খ) যেক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল করা হয়নি, সেক্ষেত্রে নিয়মিত কর নির্ধারণের দিন পর্যন্ত।
বিলম্ব সুদ পরিগণনার সর্বোচ্চ সময়কাল হবে ১ বছর।
যে সকল ক্ষেত্রে ধারা 75 এর উপধারা (5) এর proviso এর বিধান প্রযোজ্য সে সকল ক্ষেত্রে এ ধারায় বর্ণিত সুদ প্রদেয় হবে না।
বিলম্ব সুদ কিভাবে হিসেব করা হবে তা নীচের উদাহরণের সাহায্যে দেখানো হলো:
উদাহরণঃ
৩০ জুন ২০১৬ তারিখে সমাপ্ত আয় বছরে মিজ্ মৌলি হাসানের মোট আয় ছিল ৬,০০,০০০/- টাকা। তিনি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১২,০০০/- টাকা অগ্রিম কর ও ৪,০০০/- টাকা উৎসে কর প্রদান করেছেন। মিজ্ হাসান আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করলে উপ কর কমিশনার দুই মাস সময় মঞ্জুর করেন। মিজ্ মৌল হাসান ১৫ জানুয়ারী ২০১৭ তারিখে ১৪,০০০/- টাকার পে-অর্ডারসহ ৮২বিবি ধারায় আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। উপ কর কমিশনার ৩০ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে  ৮২বিবি(২) ধারায় রিটার্নটি process করেন, যাতে কোন গাণিতিক ত্রুটি পওয়া যায়নি। রিটার্নটি ৮২বিবি(২) ধারায় অডিটের জন্য নির্বাচিত হয়নি।
এক্ষেত্রে,
মোট আয়ের উপর নিরূপিত কর ৩০,০০০/- টাকা
অগ্রিম কর ও উৎস করের সমষ্টি: (১২,০০০+৪,০০০) = ১৬,০০০/- টাকা
পার্থক্য: ৩০,০০০-১৬,০০০ = ১৪,০০০ টাকা।
বিলম্ব সুদ পরিগণনার সময়: ১ ডিসেম্বর ২০১৬ হতে ১৫ জানুয়ারী ২০১৭ = ১ মাস ১৫ দিন।
ফলে, মাসিক ২% হারে বিলম্ব সুদ হবে,
[১৪,০০০x ২%x ১] + [১৪,০০০x ২%x (১৫/৩১)] = ৪১৫/- টাকা।
কোন করদাতার ক্ষেত্রে বিলম্ব সুদ প্রযোজ্য হলে করদাতা বিলম্ব সুদ ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। উপ কর কমিশনার রিটার্ন ঢ়ৎড়পবংং বা কর নির্ধারণের সময় বিলম্ব সুদ অন্তর্ভুক্ত করে দাবীনামা জারী করবেন।