অবিলম্বে সকল সরকারী শিল্প-কারখানা বেসরকারীকরণ করা উচিৎ।
আমাদের যত সরকারী শিল্প-কারখানা আছে তার সবই কোটি কোটি টাকা লোকশান দিয়ে টিকে আছে অথবা লোকশান দিতে দিতে বন্ধ হয়ে গেছে। উদাহরণস্বরুপ পাটকল, কাগজকল, চিনিকল, রেলওয়ে, বিমান ইত্যাদি। এগুলো লোকশান দেয়ার কারণ কি? প্রয়োজনের অতিরিক্ত জনবল? আমার তা মনে হয় না। জনবল অধিক হলে ছাঁটাই করা হোক। তা কিন্তু হয় না। আবার সরকারী অনেক প্রতিষ্ঠানেরই পদ খালি আছে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো লোকশান দেয় কেন? আমার মনে হয় লোকশানের জন্য দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা দায়ী। যে প্রতিষ্ঠানগুলো লোকশান দিচ্ছে সেই একই প্রতিষ্ঠান বেসরকারী করে দিন দেখবেন পরের বছরই লাভ করবে।
কিভাবে দুর্নীতি হয় দেখুন। ধরুন, সরকারী একটা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটা কম্পিউটার কিনতে হবে। যত টাকা দিয়েই কেনা হোক, ওরা বাজার দরের চেয়ে দ্বিগুন বা তিনগুন বেশী দাম দেখাবে। অফিসে কাজে ফাঁকি দেয়া বা সরকারী সম্পদের অবহেলা করাও লোকশানের জন্য দায়ী। কোন গার্মেন্টস কর্মী বা কর্পোরেট অফিসারকে আজ পর্যন্ত অফিসে ঘুমোতে দেখা যায় নাই। নয়টা থেকে পাঁচটা অফিস করার কথা থাকলেও তারা আটটা-টু-আটটা অফিস করেও বাসায় ফিরে অফিসের কাজের মধ্যেই থাকে। ঐ একই অফিসের কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সরকারী অফিসে নিয়োগ দিলে অফিসে যাবে ১০টার পরে, তারপর চা খাবে আর খোশ গল্প করে ১২ টা বাজাবে, এবং আধ-ঘন্টা কাজ করে সাড়ে ১২টার দিকে লাঞ্চ করতে যাবে, দেড়টা বা দুইটায় ফেরার কথা থাকলেও সে লাঞ্চ সারতে এবং রাজনৈতিক (পছন্দের) আলাপ করতে করতে আড়াইটা বাজাবে এবং পাঁচটা পর্যন্ত অফিস করার থাকলেও অফিসের বাসে যাওয়ার জন্য সাড়ে তিনটা থেকে গোছ-গাছ শুরু করবে, পাবলিক বাসে গেলেও একই সময়ে বের হবে। ঠিক একই কথা পাটকল, চিনিকল, কাগজকল, রেলওয়ে, বিমান ইত্যাদির জন্যও প্রযোজ্য।
প্রাইভেট ব্যাঙ্ক প্রতিবছর নতুন নতুন শাখা খোলে, সরকাররী ব্যাঙ্কের শাখা প্রতি থানায় আছে, অবকাঠামো তৈরির যাবতীয় খরচ সরকার দেয়, তারপরও লোকশান। পক্ষান্তরে, প্রাইভেট ব্যাঙ্কগুলো অবকাঠামো তৈরিতে সব খরচ নিজে যোগায় তারপরও লাভ করে, লোকশানের উদাহরণ বিরল। আমি বুঝি না, আমি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিলে সুদ দিতে হবে ১৬ টাকা হারে আর আমি ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে আমাকে সুদ দেবে ৬ টাকা হারে। জায়গায় বসে ব্যাঙ্কের স্বচ্ছ লাভ ১০ টাকা। তারপরও কেন লোকশান দেবে!!
অবিলম্বে সকল সরকারী শিল্প-কারখানা বেসরকারীকরণ করা হোক। সরকারের অবশ্য কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, ভোট একটা কারণ। বেসরকারী করতে পারে না সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এবং ট্রেড/শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর জন্য। সরকারের কিছু পোষা কুত্তা থাকে ট্রেড/শ্রমিক ইউনিয়নে। এই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগুলো প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তারা লেজুরবৃত্তি করে রাজনীতি করে। শ্রমিক নেতার (যিনি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) দাপটে প্রথমশ্রেণীর কর্মকর্তা তটস্থ থাকেন, বদলি নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে শ্রমিক নেতার সুপারিশে। ঐ যে সেই লেজে কুত্তা নাড়ানোর মত অবস্থা আর কি।
যাইহোক, দল/ভোটের কথা চিন্তা না করে দেশের কথা ভেবে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান বেসরকারী করা হোক, প্রয়োজনে সরকারকেই বেসরকারী করে দেয়া হোক।
ধন্যবাদ সবাইকে।