শেষ দিনে ব্যাপক ভিড় করদাতাদের

Picture

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় শেষ হলো। গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত করদাতারা রিটার্ন জমা দেন। তবে সকাল থেকেই মাঠপর্যায়ের কর কার্যালয়গুলোতে করদাতাদের বেশ ভিড় ছিল। সারা দিনই সেগুনবাগিচাসহ রাজধানীর বিভিন্ন কর কার্যালয়ে রিটার্ন জমা দিতে আসেন। অনেকে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে বসে রিটার্ন ফরম পূরণ করতে দেখা গেছে। ভিড় ঠেলে রিটার্ন জমার কাজ শেষ করতে অন্য দিনের চেয়ে বেশি সময় লেগেছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচার কর অঞ্চল-১, ৬, ৭, ৮ ও ১১-এর কার্যালয়গুলোতে সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে। গতকাল সরকারি কর্মকর্তাদের রিটার্ন জমা বেশি পড়েছে বলে এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত মোট কী পরিমাণ রিটার্ন জমা পড়েছে, সেই তথ্য হালনাগাদ করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
যাঁরা গতকালও রিটার্ন জমা দিতে পারেননি। ‘সব শেষ হয়ে গেছে’—এটা ভাবার কারণ নেই। নির্ধারিত করের ওপর মাসে ২ শতাংশ হারে সুদ দিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।
গতকাল জাতীয় আয়কর দিবস পালন করেছে এনবিআর। এ উপলক্ষে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে এনবিআর। এতে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, এনবিআরের সদস্য, ব্যবসায়ী, খেলোয়াড়, নাট্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাহিত্যিক, শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি সেগুনবাগিচার এনবিআর ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়। পরে মৎস্য ভবন, সুপ্রিম কোর্ট, জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে আবার এনবিআরের সামনে এসে শেষ হয়।
গতকাল দুপুরে সেগুনবাগিচার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনে সারিকা টাওয়ারে গিয়ে দেখা গেছে, করদাতারা বিভিন্ন বুথে লাইন ধরে রিটার্ন জমা দিচ্ছেন। কেউবা ফরম পূরণ করছেন। আবার কেউ সহায়তা কেন্দ্রে খোঁজ নিচ্ছেন কীভাবে রিটার্ন জমা দিতে হবে। সারা দিনই এমন ভিড় ছিল কর অঞ্চল-৭-এর কার্যালয়ে। সরকারি চাকরিজীবী নাহিদা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিড়ের কথা ভেবে বাসা থেকেই ফরম পূরণ করে এনেছি। ব্যাংকের চালানপত্রসহ রিটার্ন জমা দেওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই প্রাপ্তি রসিদ পেয়ে গেছি।’
সারিকা টাওয়ারের পাশের ভবনের কর অঞ্চল-১১ ও কর অঞ্চল-৮-এর কার্যালয়েও সারা দিনই করদাতাদের ভিড় ছিল।
এবার রিটার্ন জমার শেষ সময়ে বিভিন্ন কর কার্যালয় মেলার আমেজে করদাতাদের সেবা দিয়েছে। প্রতিটি কর কার্যালয়ে একাধিক বুথ তৈরি করে রিটার্ন জমা নেওয়া হয়েছে। আবার নতুন ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) দেওয়া হয়েছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে তিন লাখ নতুন টিআইএনধারীর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম চার মাসেই পাঁচ লাখের বেশি টিআইএন দেওয়া হয়েছে।
গতবার সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। এবার এ সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে এনবিআর কর্মকর্তারা জানান।
গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় পর্যন্ত ৯ লাখ ৭২ হাজার ৯৬৭ জন রিটার্ন জমা দিয়েছেন। তাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ হাজার ২৬ কোটি টাকা।
ই-টিআইএন: এনবিআরের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ই-টিআইএন নিতে সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ই-টিআইএনপ্রত্যাশী। কয়েক দিন ধরেই এ সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেছেন, একই সঙ্গে শত শত ই-টিআইএনপ্রত্যাশী ওয়েবসাইটে লগইন করায় সেবাটি দিতে সমস্যা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র : প্রথমআলো

About Author

Profile Picture

Md. Jahangir Alam

Leave a Comment