নতুন গাড়ির শুল্কায়নে কঠোর নির্দেশনা

Picture

যাযাদি রিপোর্ট শুল্ককর ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় নতুন গাড়ির শুল্কমূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাস্টমস হাউসগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআরের মতে, নতুন গাড়ির শুল্কমূল্য নির্ধারণে অসৎ পন্থা অবলম্বন করছেন আমদানিকারকরা। এ ধরনের নতুন গাড়ি আমদানিতে উৎপাদকের রপ্তানি মূল্যের সনদ জমা না দিয়ে লিয়াজোঁ অফিস অথবা তৃতীয় পক্ষের সনদ দিচ্ছে। এসব তৃতীয় পক্ষের আমদানিকারকের চাহিদা মোতাবেক মূল্য সনদ দিয়ে থাকে। ফলে গাড়ির সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে শুল্কায়ন সম্ভব হয় না। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে নতুন গাড়ির শুল্কমূল্য নির্ধারণ করতে একটি আদেশ জারি করে সব কাস্টমস হাউসে পাঠিয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, কিছুসংখ্যক আমদানিকারক শুল্ককর ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে জাল-জালিয়াতি করে প্রস্তুতকারক রপ্তানিকারকের পরিবর্তে বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকের সম্পর্ক দেখিয়ে কিংবা প্রকৃত রপ্তানিকারকের সঙ্গে সম্পর্ক গোপন করে আন্ডার ইনভয়েস দাখিল করে থাকে। এতে সরকার শুধু তার ন্যায়সঙ্গত রাজস্ব থেকেই বঞ্চিত হয় না, আমদানিকারকদের মধ্যে বৈষম্যও সৃষ্টি হয় এবং অবৈধ পথে মুদ্রা পাচারও ঘটে। এ ধরনের জাল-জালিয়াতি এখন শুল্ক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি উচ্চ ঝুঁকির বিষয়।
গাড়ি আমদানির সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশে যেসব নতুন ব্যক্তিগত গাড়ি আমদানি হয়, সেগুলোর বেশিরভাগই প্রস্তুতকারক দেশের পরিবর্তে অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়। এসব গাড়ির মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একই মডেলের গাড়ির দাম জাপানে চেয়ে বাংলাদেশে কম। এক কথায়, যেটা অবিশ্বাস্য। লিয়াজোঁ অফিসের মাধ্যমে এসব আমদানি করা হয়। এসব লিয়াজোঁ অফিসই গাড়ির মূল্য নির্ধারণের সনদ দিয়ে থাকে। এ কারণে শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা বাড়ছে। অপরদিকে, ক্রেতারা না জেনেশুনেই ঠকছেন।
সূত্র জানায়, গুলশানে টয়োটা সুসো কর্পোরেশনের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে টয়োটা গাড়ি আমদানি করা হয়। অথচ এই গাড়ির উৎপাদক দেশ হচ্ছে জাপান। কিংসু মাটাইচি কর্পোরেশনের মাধ্যমে মিটসুবিশি গাড়ি আমদানি করা হয় থাইল্যান্ড থেকে। একই অবস্থা হুন্দাই, নিশান এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডের নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে।
এনবিআরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, গাড়ি আমদানিকারক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ডিলার হিসেবে গাড়ি আমদানি করলে রপ্তানিকারকের ইস্যু করা ইনভয়েস দাখিল করতে হবে। এই ইনভয়েস মূল্য সঠিক পাওয়া গেলে প্রাপ্ত মূল্যের ওপর শুল্কায়ন হবে। প্রয়োজনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মূল্য তালিকা বা অন্যান্য নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে শুল্কায়ন করতে হবে।
অপরদিকে, তৃতীয় পক্ষ থেকে গাড়ি আমদানি করলে জাপানে প্রস্তুত করা একই ব্র্যান্ড, মডেল ও ক্যাপাসিটির গাড়ির ক্ষেত্রে ইয়োলো বুকের গড় মূল্য শুল্কায়নের জন্য গ্রহণ করা যাবে। জাপান ছাড়া অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হলে হালনাগাদ ম্যাগাজিন অটোমোবাইল বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো জার্নালে প্রকাশিত মূল্যে শুল্কায়ন করা যাবে। প্রয়োজনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মূল্য তালিকা বা অন্যান্য নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে শুল্কায়ন করতে হবে।
এসবের পাশাপাশি কূটনীতিক, দূতাবাস, বিশেষ সুবিধাভোগী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা একই ব্র্যান্ড, মডেল ও ক্যাপাসিটির গাড়ির ঘোষিত মূল্যকেও বিকল্প হিসেবে শুল্কায়নের ভিত্তিমূল্য ধরে শুল্কায়নের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্য গাড়ি খালাস করে পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট করতে হবে।
আদেশে আরো বলা হয়েছে, একই উৎস দেশে তৈরি একই ব্র্যান্ড, মডেল এবং সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির নতুন গাড়ির দাম পুরনো গাড়ির চেয়ে কম হবে না। অর্থাৎ, নতুন গাড়ির দাম পুরনো গাড়ির চেয়ে কম দেখানো যাবে না।

তথ্যসূত্র: যায়যায়দিন

About Author

Profile Picture

Golden Bangladesh

Golden Bangladesh is a point of access to information.We present information from diverse sources in a unified way. It is the leading web portal, e-Directory and business guide in Bangladesh.

Leave a Comment