Paripatra- 2010-2011

Displaying 1-2 of 2 results.

Paripatra-1 2010-2011

রিপত্র-১ অর্থ বছর ২০১০-২০১১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
রাজস্ব ভবন
সেগুনবাগিচা, ঢাকা।
নথি নং জারাবো/আঃআঃবিঃ/কর-৭/আয়কর বাজেট/২০১০(অংশ-১) তারিখঃ ০১/০৮/২০১০

পরিপত্র-১

বিষয়ঃ অর্থ বছর ২০১০-২০১১ এর বাজেট কার্যক্রমের আওতায় আয়কর আইন ও বিধির পরিবর্তনসম-হের ব্যাখ্যা।
অর্থ আইন, ২০১০ এবং প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়কর আইন ও বিধির কতিপয় পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া ৫টি এসআরও সংশোধন এবং ৩টি নতুন এসআরও জারি করা হয়েছে। নতুন প্রবর্তিত ও সংশোধিত আইন, বিধি ও প্রজ্ঞাপনসমূহের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকল্পে নিম্নরূপ ব্যাখ্যা প্রদান করা হলোঃ
১। ২০১০-২০১১ কর বছরের জন্য প্রযোজ্য আয়কর হারঃ
সকল শ্রেণীর করদাতাদের জন্য বিদ্যমান আয়কর হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে অর্থাৎ ২০০৯-২০১০ কর বছরের জন্য প্রযোজ্য আয়করের হার ২০১০-২০১১ কর বছরের জন্য বহাল থাকবে (পরিশিষ্ট-১) । নিম্নে সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করা হলো:
(ক) ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর হারঃ
২০১০-২০১১ কর বছরের জন্য ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের আয়ের উপর প্রযোজ্য করহার নিম্নরূপঃ

মোট আয় হার
(ক) প্রথম ১,৬৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর শূন্য
(খ) পরবর্তী ২,৭৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১০%
(গ) পরবর্তী ৩,২৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১৫%
(ঘ) পরবর্তী ৩,৭৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০%
(ঙ) অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর ২৫%:

তবে মহিলা এবং ৬৫ বৎসর বা তদুর্ধ বয়সের করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হবে ১,৮০,০০০/- টাকা। এতদ্ব্যতীত প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হবে ২,০০,০০০/-টাকা।
যে সকল করদাতা ২০০৯-২০১০ করবর্ষে সর্বোচ্চ ২৫% হারে কর প্রদান করেছেন, তাঁরা ২০১০-২০১১ করবর্ষে কমপক্ষে ১০% অধিক হারে আয় প্রদর্শন করলে সেক্ষেত্রে প্রদর্শিত অতিরিক্ত আয়ের জন্য পরিশোধযোগ্য করের উপর ১০% কর রেয়াত প্রাপ্ত হবেন।
করমুক্ত সীমার উর্ধের আয়ের বেলায় প্রদেয় আয়করের পরিমাণ কোনভাবেই ২,০০০/- টাকার কম হবে না।
(খ) কোম্পানী নহে, বাংলাদেশে অনিবাসী (অনিবাসী বাংলাদেশী ব্যতীত) এরূপ ব্যক্তি শ্রেণীভুক্ত করদাতার ক্ষেত্রে আয়ের উপর প্রযোজ্য কর ------------- ২৫%
(গ) কোম্পনী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ করদাতার আয়কর হার-
(অ) লভ্যাংশ আয়ের ক্ষেত্রে লভ্যাংশের ২০%
(আ) লভ্যাংশ ব্যতীত অন্যান্য আয়ের উপর
(১) মোবাইল ফোন কোম্পানী (স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ব্যতীত) ৪৫%
(২) স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল ফোন কোম্পানী------৩৫%
(৩) ব্যাংক,বীমা,লিজিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান (স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হোক বা না হোক) --------------------৪২.৫%
(৪) স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানী---------------২৭.৫%
(৫) অন্যান্য কোম্পানী----------------------------৩৭.৫%
উপরোক্ত (গ)(আ) (৪)উপ-অনুচ্ছেদে বর্ণিত স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানী যদি ২০% এর চেয়ে বেশী লভ্যাংশ প্রদান করে তাহলে প্রযোজ্য আয়করের উপর ১০% হারে আয়কর রেয়াত পাবে। তবে এরূপ কোম্পানী যদি ১০% এর কম লভ্যাংশ ঘোষণা করে অথবা সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ
কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘোষিত লভ্যাংশ প্রদান না করে তাহলে তাদের কর হার হবে ৩৭.৫%
তবে লাভ-ক্ষতি নির্বিশেষে সকল কোম্পানীর ক্ষেত্রে ন্যুনতম করের পরিমাণ হবে ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা।
২। প্রশাসনিক সংস্কারঃ
আয়কর আইনে কতিপয় বিধান সংশোধনের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল এবং কর আপীলাত ট্রাইব্যুনাল এর প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পর্কিত আইনে পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশের পরিবর্তন সমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) Section 2এর clause (25AA) সংশোধনের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল এর মহাপরিচালকের সংজ্ঞায় অতিরিক্ত মহাপরিচালককে অনত্মর্ভুক্ত করা হয়েছে।
(খ) section 4 এর sub-section (2)সংশোধনের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল এর মহাপরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিকট অর্পন করা হয়েছে।
(গ) section 4A এ নতুন clause (c) সংযোজনের মাধ্যমে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল এর অতিরিক্ত/যুগ্ম মহাপরিচালককে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক উক্ত সেলের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনের জন্য ক্ষমতা অর্পনের বিধান করা হয়েছে। এ সংশোধনের ফলে মহাপরিচালকের অনুপস্থিতিতে এ সেলের কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল এর অতিরিক্ত/যুগ্ম মহাপরিচালককে উক্ত দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা অর্পন করতে পারবে।
(ঘ) section 11 এর sub-section (3) তে নতুন sub-section (3) সংযোজনের ফলে বিচার বিভাগে জেলা জজ হিসেবে কর্মরত আছেন বা ছিলেন এমন কর্মকর্তা কর আপীলাত ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য হবেন।
(ঙ) section 11 এর sub-section (4) সংশোধনের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য বা চলতি দায়িত্বে সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন এরূপ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে কর আপীলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদানের বিধান করা হয়েছে।
৩। কোম্পানীর শেয়ার অভিহিত মূল্যের চেয়ে বেশী মূল্যে (প্রিমিয়াম) বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম মূল্যের উপর আয়কর আরোপের বিধান [section 16E সংযোজন]:
আয়কর অধ্যাদেশে নতুন section 16E সংযোজনের মাধ্যমে কোন কোম্পানীর মূলধন share capital) বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শেয়ারের অভিহিত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্যে (প্রিমিয়াম) শেয়ার বিক্রয় করলে গৃহীত অতিরিক্ত মূল্য বা প্রিমিয়ামের উপর আয়কর আরোপের বিধান করা হয়েছে। Book building বা public offering বা rights offering বা placement বা preference share বা অন্য যে কোন পদ্ধতিতে শেয়ার ক্যাপিটাল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শেয়ারের অভিহিত মুল্যের অতিরিক্ত হিসেবে প্রাপ্ত মূল্যের উপর কর আরোপের বিধান করা হয়েছে। এরূপ কর কোম্পানীর মোট আয়ের উপর প্রদেয় আয়করের অতিরিক্ত হবে। ১ জুলাই, ২০১০ হতে এ বিধান কার্যকর হবে।
৪। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয় এরূপ কোম্পানীর পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শেয়ার মূল্য বাবদ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে পরিশোধের বিধান [section 19(24) সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 19 এর sub-section (24) সংশোধনের মাধ্যমে বিদ্যমান পাবলিক বা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী কর্তৃক শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যতীত নগদে বা অন্য কোনভাবে শেয়ারহোল্ডারদের নিকট থেকে অর্থ গ্রহণ করলে উক্ত গৃহীত অর্থ সংশ্লিষ্ট আয় বছরে উক্ত কোম্পানীর অন্যান্য সূত্রের আয় হিসেবে গণ্য করার বিধান করা হয়েছে। নতুন কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন বাবদ প্রদত্ত অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে বা বিদ্যমান কোম্পানী কর্তৃক বোনাস শেয়ার এর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত কোম্পানীর ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।
৫। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর section 19A বিলোপঃ
আয়কর অধ্যাদেশের section 19A বিলোপ করা হয়েছে। এ ধারায় ১ জুলাই, ২০০৯ থেকে ৩০ জুন, ২০১০ পর্যন্ত সময়কালে নতুন শিল্প স্থাপন বা ভৌত অবকাঠামো নির্মান সংশ্লিষ্ট কোন কোম্পানীতে বিনিয়োগ করলে এবং ১০% হারে কর প্রদান সাপেক্ষে ঘোষণা করলে তা কোন প্রশ্ন ব্যতিরেকে গ্রহন করার বিধান ছিল। এ ধারাটি বিলুপ্ত হওয়ায় ৩০ জুন, ২০১০ এর পরে এ আইনের আর কার্যকারিতা থাকবে না। তবে, এ ধারায় নির্দিষ্টকৃত সময়সীমার মধ্যে বিনিয়োগ করলে এবং সংশ্লিষ্ট কর বৎসরে রিটার্ণ দাখিলের পূর্বে নির্ধারিত মধ্যে বিনিয়োগ করলে এবং সংশ্লিষ্ট কর বৎসরে রিটার্ণ দাখিলের পূর্বে নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ করলে, এরূপ ঘোষিত বিনিয়োগ কোন প্রশ্ন ব্যতীরেকে আয়কর বিভাগ কর্তৃক গৃহিত হবে। যেহেতু বিনিয়োগের সর্বশেষ তারিখ নির্ধারিত ছিল ৩০/৬/২০১০, সেহেতু করদাতার এরূপ ঘোষণা ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে ৩০/৬/২০১০ সংশ্লিষ্ট কর বছরের রিটার্ণে প্রদর্শন করতে হবে। বিলুপ্ত এ ধারার proviso অনুযায়ী বিধি 25AA এর আওতায় প্রদত্ত ঘোষণা বাস্তবায়িত না হলে এ ধারার সুবিধা প্রযোজ্য হবে না এবং এ ধারার শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে গণ্য করে প্রদত্ত সুবিধা প্রত্যাহারযোগ্য এবং আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণযোগ্য হবে।
৬। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর section 19AA বিলোপঃ
আয়কর অধ্যাদেশের section 19AA বিলোপ করা হয়েছে। ১ জুলাই, ২০০৯ থেকে ৩০ জুন, ২০১০ পর্যন্ত সময়কালে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন বা সংস্কার কাজে বিনিয়োগ করলে এবং ১০% হারে কর প্রদান সাপেক্ষে ঘোষণা করলে, তা কোন প্রশ্ন ব্যতিরেকে গ্রহন করার বিধান ছিল। এ ধারাটি বিলুপ্ত হওয়ায় ৩০ জুন, ২০১০ এর পরে এ আইনের আর কার্যকারিতা থাকবে না। তবে,এ ধারায় নির্দিষ্টকৃত সময়সীমার মধ্যে বিনিয়োগ করলে এবং রিটার্ণ দাখিলের পূর্বে নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ সাপেক্ষে এরূপ ঘোষিত বিনিয়োগ কোন প্রশ্ন ব্যতীরেকে আয়কর বিভাগ কর্তৃক গৃহিত হবে। যেহেতু বিনিয়োগের সর্বশেষ তারিখ নির্ধারিত ছিল ৩০/৬/২০১০, সেহেতু করদাতার এরূপ ঘোষণা ও কর পরিশোধ ৩০/৬/২০১০ সংশ্লিষ্ট করবছরের রিটার্ণে প্রতিফলিত হতে হবে।
৭। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর section 19AAA বিলোপঃ
আয়কর অধ্যাদেশের section 19AAA বিলোপ করা হয়েছে। এ বিধান অনুযায়ী ১ জুলাই, ২০০৯ থেকে ৩০ জুন, ২০১০ পর্যন্ত সময়কালে ১০% হারে আয়কর পরিশোধ সাপেক্ষে ব্যক্তি, ফার্ম, ব্যক্তি সংঘ বা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীকর্তৃক স্টক এক্সেচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানীর স্টক ও শেয়ার ক্রয়ে বিনিয়োগ ঘোষণা করলে তা কোন প্রশ্ন ব্যতিরেকে গ্রহন করার বিধান ছিল। এ ধারাটি বিলুপ্ত হওয়ায় ৩০ জুন, ২০১০ এর পরে এই আইনের আর কার্যকারিতা থাকবে না। তবে,এ ধারায় নির্দিষ্টকৃত সময়সীমার মধ্যে বিনিয়োগ করলে এবং রিটার্ণ দাখিলের পূর্বে নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ করলে,এরূপ ঘোষিত বিনিয়োগ কোন প্রশ্ন ব্যতীরেকে আয়কর বিভাগ কর্তৃক গৃহিত হবে। যেহেতু বিনিয়োগের সর্বশেষ তারিখ নির্ধারিত ছিল ৩০/৬/২০১০, সেহেতু করদাতার এরূপ ঘোষণা ও কর পরিশোধ ৩০/৬/২০১০ সংশ্লিষ্ট করবছরের রিটার্ণে প্রতিফলিত হতে হবে। এ বিধান অনুযায়ী ঘোষিত বিনিয়োগ দুই বছরের মধ্যে উত্তোলন বা স্থানান্তর না করার শর্তটি সংশ্লিষ্ট করদাতার জন্য বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ বিলুপ্ত এ ধারার শর্ত অনুযায়ী বিনিয়োগকৃত মূল অংক দুই বছরের মধ্যে উত্তোলন বা স্থানান্তর করা যাবে না। তবে মুনাফা উত্তোলনে কোন বাধা নেই। নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে বিনিয়োগকৃত অর্থ উত্তোলন বা স্থানান্তর করা হলে এ ধারার শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে গণ্য করে এ ধারার আওতায় প্রদত্ত সুবিধা প্রত্যাহার পূর্বক আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণযোগ্য হবে।
৮। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর section 19BBBB বিলোপঃ
আয়কর অধ্যাদেশের section 19BBBB বিলোপ করা হয়েছে। এ বিধান অনুযায়ী ১ জুলাই, ২০০৯ থেকে ৩০ জুন, ২০১০ পর্যন্ত সময়কালে বাড়ী বা এ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় বা নির্মাণে বিনিয়োগ প্রতি বর্গফুট অনুযায়ী নির্ধারিত হারে আয়কর প্রদান সাপেক্ষে ঘোষণা প্রদান করলে তা কোন প্রশ্ন ব্যতিরেকে গ্রহন করার বিধান ছিল। এ ধারাটি বিলুপ্ত হওয়ায় ৩০ জুন, ২০১০ এর পরে এ আইনের আর কার্যকারিতা থাকবে না। তবে, এ ধারায় নির্দিষ্টকৃত সময়সীমার মধ্যে বিনিয়োগ করলে এবং রিটার্ণ দাখিলের পূর্বে নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ করলে এরূপ ঘোষিত বিনিয়োগ কোন প্রশ্ন ব্যতীরেকে আয়কর বিভাগ কর্তৃক গৃহিত হবে। তবে যেহেতু বিনিয়োগের সর্বশেষ তারিখ নির্ধারিত ছিল ৩০/৬/২০১০, সেহেতু করদাতার এরূপ ঘোষণা ও কর পরিশোধ ৩০/৬/২০১০ সংশ্লিষ্ট কর বছরের রিটার্ণে প্রতিফলিত হতে হবে।
৯। Bangladesh Infrastructure Finance Fund এর আওতায় ইস্যুকৃত বন্ডে বিনিয়োগ ঘোষণার সুযোগ প্রদান সংক্রান্ত [section 19C সংযোজন]:
আয়কর অধ্যাদেশে নতুন section 19C সংযোজনের মাধ্যমে Bangladesh Infrastructure Finance Fund এর আওতায় ইস্যুকৃত বন্ডে বিনিয়োগ করলে এবং ১০% হারে আয়কর প্রদান সাপেক্ষে ঘোষণা করলে তা কোন প্রশ্ন ব্যতিরেকে গ্রহন করার বিধান করা হয়েছে। এ বিধান অনুযায়ী ১ জুলাই, ২০১০ থেকে ৩০ জুন, ২০১২ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে এ ফান্ডের আওতায় ইস্যুকৃত বন্ডে বিনিয়োগ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর বছরে রিটার্ণ দাখিলের পূর্বে বিনিয়োগের উপর ১০% হারে আয়কর প্রদান করতে হবে। যে কোন ব্যক্তি (person) এরূপ বিনিয়োগ ঘোষণা করতে পারবে।
১০। Physical Infrastructure যথাঃ সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভার থেকে অর্জিত আয় হতে অবচয় ভাতা অনুমোদনের বিধান [section 29(viii) সংশোধন এবং ৩য় তফসিলের paragraph 3 এ নতুন আইটেম (e) সংযোজন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 29(viii) সংশোধন করে ভৌত অবকাঠামো প্রতিষ্ঠান বা physical infrastructure undertaking এর সেতু বা সড়ক ও ফ্লাইওভারের আয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভারের জন্য অবচয় (depreciation) ভাতা অনুমোদনের বিধান করা হয়েছে। সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভার হতে আয় আছে এরূপ physical infrastructure undertaking এর ব্যবসায়ের আয় নিরূপণের ক্ষেত্রে নতুন বিধান অনুযায়ী অবচয় অনুমোদনযোগ্য হবে। physical infrastructure undertaking ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি (person) যার সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভার হতে প্রত্যক্ষভাবে অর্জিত আয় নেই অথচ স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে এরূপ সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভার রয়েছে, সেসকল করদাতার সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভারের জন্য কোন অবচয় ভাতা অনুমোদন যোগ্য হবে না। যেমন- এক্স টি এস্টেট লিঃ চা উৎপাদন ও বিক্রয় ব্যবসায় নিযোজিত। এ কোম্পানীর চা বাগানের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি সড়ক রয়েছে। এ সড়ক চা বাগানের অংশ হলেও চা বাগানের আয় হতে এরূপ সড়কের জন্য অবচয় ভাতা অনুমোদনযোগ্য হবে না।
১১। ব্যবসা বা পেশার আয়ের ক্ষেত্রে পারকুইজিট বাবদ অনুমোদনযোগ্য খরচের সর্বোচ্চ সীমা বৃদ্ধি [section 30(e) সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 30(e) সংশোধনের মাধ্যমে প্রতি কর্মকর্তা/ কর্মচারীর জন্য পারকুইজিট বাবদ নিয়োগকারীর হাতে অনুমোদনযোগ্য ব্যয় সীমা ২,০০,০০০/- টাকা হতে বৃদ্ধি করে ২,৫০,০০০/- টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে নিয়োগকারী তার নির্দিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী প্রতি সর্বোচ্চ ২,৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত পারকুইজিট প্রদান করলে তা অনুমোদনযোগ্য খরচ হিসেবে বিবেচিত হবে। ২,৫০,০০০/- টাকার অতিরিক্ত দাবীকৃত অংক নিয়োগকারীর হাতে করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হবে। ২০১০-২০১১ কর বছর থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
১২। পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিধানঃ
স্টকস এবং শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয়ের উপর করারোপনের লক্ষ্যে আয়কর আধ্যাদেশে আনীত সংশোধনী ও জারিকৃত এসআরও এর ব্যাখ্যা নিম্নরূপঃ
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের section 32(7) সংশোধনের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর সিকিউরিটিজ,স্টকস বা শেয়ার লেনদেন হতে মূলধনী আয় সাধারণভাবে কর আরোপযোগ্য করা হয়েছে। পূর্ববর্তী বিধান অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর স্টকস ও শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয় করমুক্ত ছিল। সংশ্লিষ্ট ধারার এ সম্পর্কিত অংশ বিলোপ করায় স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন হতে উদ্ভূত আয় করযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে সরকারী সিকিউরিটিজ হতে অর্জিত মূলধনী আয় পূর্বের ন্যায় করমুক্ত থাকবে। এ বিধান ১ জুলাই, ২০১০ হতে লেনদেনকৃত সিকিউরিটিজ স্টকস বা শেয়ারের বেলায় প্রযোজ্য হবে।
(খ) আয়কর অধ্যাদেশে নতুন section 53L সংযোজনের মাধ্যমে অভিহিত মূল্যের (face value) চেয়ে বেশী মূল্যে কোন কোম্পানীর শেয়ার বিক্রয় করা হলে উক্ত অতিরিক্ত মূল্যের (প্রিমিয়াম) উপর ৩% হারে উৎসে আয়কর সংগ্রহের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। কোন কোম্পানী book building বা public offering বা rights offering বা placement বা preference share বা অন্য যে কোন পদ্ধতিতে শেয়ার বিক্রয়কালে অভিহিত মূল্যের চেয়ে বেশী মূল্য (প্রিমিয়াম) গ্রহণ করলে, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত মূল্যের উপর ৩% হারে উৎসে আয়কর সংগ্রহ করা হবে। সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন প্রিমিয়ামের উপর এ উৎসে আয়কর সংগ্রহ করবে এবং এরূপ সংগৃহীত উৎসে আয়কর সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর জন্য বর্ণিত খাতের আয়ের উপর চূড়ান্ত করদায় পরিশোধ হিসেবে গণ্য হবে। ১ জুলাই, ২০১০ হতে এ বিধান কার্যকর হবে।
(গ) আয়কর অধ্যাদেশে নতুন section 53M সংযোজনের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার বা পরিচালক বা প্লেসমেন্ট হোল্ডার অথবা মিউচুয়াল ফান্ডের স্পন্সর বা প্লেসমেন্ট হোল্ডারদের সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট হস্তান্তর কালে অর্জিত আয়ের উপর ৫% হারে উৎসে আয়কর সংগ্রহের বিধান করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে করদাতা যে কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার বা ডিরেক্টর বা প্লেসমেন্ট হোল্ডার কেবলমাত্র সেই কোম্পানীর শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট হস্তান্তররের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে। তবে বর্ণিত করদাতাগণ যে কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট হোল্ডার বা ডিরেক্টর, সেই কোম্পানী ব্যতীত স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অন্য কোন কোম্পানীর শেয়ার বা সিকিউরিটিজ লেনদেন করলে সেক্ষেত্রে এরূপ অর্জিত আয়ের উপর উপ-অনুচ্ছেদ (ঙ) তে বর্ণিত এস আর ও অনুযায়ী কর আরোপিত হবে।
সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা ষ্টক এক্সচেঞ্জ সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট হস্তান্তরকালে বা হস্তান্তরর অনুমোদনকালে এরূপ উৎসে আয়কর সংগ্রহ করবে যা সংশ্লিষ্ট করদাতার চূড়ান্ত করদায় পরিশোধ হিসেবে গণ্য হবে। উল্লেখ্য যে, section 53M এ সংযোজিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট হস্তান্তরর বলতে এটির বিক্রয়সহ দান বা অন্য যে কোনভাবে হস্তান্তরকে বুঝাবে। সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট এর হস্তান্তর মূল্য’ বলতে নিম্নোক্ত তিনটির মধ্যে যেটি প্রযোজ্য সেটি বুঝাবে-
(১) সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট হস্তান্তরের দিনে সমাপনী মূল্য; বা
(২) সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক হস্তান্তরের অনুমোদনের দিনে অথবা হস্তান্তরকালে সমাপনী মূল্য; বা
(৩) সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট হস্তান্তর অনুমোদনের দিনে উক্ত সিকিউরিটজ লেনদেন না হয়ে থাকলে সর্বশেষ যেদিন উক্ত সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে সেদিনের সমাপনী মূল্য।
এ বিধান ১ জুলাই, ২০১০ হতে হস্তান্তরকৃত সিকিউরিটিজ বা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট এর বেলায় প্রযোজ্য হবে।
(ঘ) আয়কর অধ্যাদেশের section 64(2) সংশোধনের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন হতে উদ্ভূত আয়ের উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর প্রদানের বিধান করা হয়েছে।
(ঙ) এসআরও নং-২৬৯-আইন/আয়কর/২০১০, তারিখ ০১/০৭/২০১০ এর মাধ্যমে (পরিশিষ্ট-২) কতিপয় শ্রেণীর করদাতার শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয়ের উপর করারোপনের বিধান করা হয়েছে যা নিম্নরূপঃ
(১) কোম্পানী ও ফার্ম শ্রেণীর করদাতাদের ক্ষেত্রেঃ আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর section 2 এর clause (20) অনুযায়ী কোম্পানী বা clause (32) অনুযায়ী ফার্ম পর্যায়ভুক্ত করদাতাদের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর সিকিউরিটজ লেনদেন হতে উদ্ভূত আয়ের উপর ১০% হারে আয়কর আরোপিত হবে। ব্যাংক, বীমাসহ সকল কোম্পানী বা ফার্ম শ্রেণীর করদাতার সিকিউরিটিজ লেনদেন হতে অর্জিত মুনাফার উপর করারোপনের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র এ বিধান প্রযোজ্য হবে। আয়কর নির্ধারণী পর্যায়ে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর হিসেবে এরূপ কর পরিশোধ করতে হবে। তবে শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয় ব্যতীত অন্য উৎসের আয়ের উপর প্রযোজ্য হারে আয়কর আরোপিত হবে। এক্ষেত্রে যৌথনামে বিও (beneficiary owner's) এ্যাকাউন্ট ধারীগণ ফার্ম হিসেবে বিবেচিত হবে না।
করদাতা কোম্পানী যদি স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অন্য কোন কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হয় এবং যে কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার সে কোম্পানীর শেয়ার হস্তান্তর করে, সেক্ষেত্রে এরূপ হস্তান্তর হতে অর্জিত আয়ের উপর সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা স্টক এক্সচেঞ্জ আয়কর অধ্যাদেশের ধারা ৫৩গ অনুযায়ী ৫% হারে উৎসে আয়কর সংগ্রহ করবে এবং উক্ত সংগৃহীত আয়কর উক্ত কোম্পানীর এ খাতের জন্য চূড়ান্ত করদায় পরিশোধ হিসেবে গণ্য হবে।
(২) কতিপয় কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষেত্রেঃ যে সকল ব্যক্তি কোন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানী, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী, স্টক ডিলার বা স্টক ব্রোকার কোম্পানী এর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার বা পরিচালক, সে সকল ব্যক্তির ক্ষেত্রে শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয়ের উপর ৫% হারে আয়কর আরোপিত হবে। তবে এক্ষেত্রে উক্ত স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার যদি কোম্পানী বা ফার্ম শ্রেণীর করদাতা হয়, সেক্ষেত্রে তার এ খাতের অর্জিত আয়ের উপর ১০% হারে আয়কর আরোপিত হবে। আয়কর নির্ধারণী পর্যায়ে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর হিসেবে এরূপ কর প্রদান করতে হবে। সিকিউরিটজ লেনদেন হতে অর্জিত আয় ব্যতীত অন্যান্য উৎসের আয়ের উপর প্রযোজ্য/সাধারণ আয়কর হার আরোপিত হবে।
উপরে বর্ণিত শেয়ারহোল্ডার বা পরিচালকগণ যে কোম্পানীর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার বা পরিচালক সেই কোম্পানীর শেয়ার হস্তান্তর করলে সেক্ষেত্রে উক্ত হস্তান্তরিত শেয়ার হতে অর্জিত আয়ের উপর আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩গ অনুযায়ী কর আরোপিত হবে (উপ-অনুচ্ছেদ-গ দ্রষ্টব্য) ।
(৩) স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানীর ১০% এর অধিক সিকিউরিটেজের অধিকারী করদাতার ক্ষেত্রেঃ ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানী, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী, স্টক ডিলার বা স্টক ব্রোকার কোম্পানী এর স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার বা পরিচালক নন এরূপ করদাতা যদি স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন একটি কোম্পানীর ১০% এর অধিক পরিমাণ সিকিউরিটেজের অধিকারী হন, সেক্ষেত্রে বর্ণিত করদাতার উক্ত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয়ের উপর ৫% হারে আয়কর আরোপিত হবে। আয় বছরের যে কোন সময়ে যে কোন একটি কোম্পানীর ১০% এর অধিক শেয়ারের অধিকারী হলেই বর্ণিত করদাতার উক্ত সিকিউরিটজ লেনদেন (যে কোম্পানীর ১০% অধিক শেয়ারের অধিকারী) হতে অর্জিত আয়ের উপর কর আরোপিত হবে। আয়কর নির্ধারণী পর্যায়ে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর হিসেবে এরূপ কর প্রদান করতে হবে। সিকিউরিটজ লেনদেন হতে অর্জিত আয় ব্যতীত অন্যান্য উৎসের আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য/সাধারণ আয়কর হার আরোপিত হবে।
(৪) বর্ণিত এসআরও এর আওতায় আয়কর আরোপনের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ বলতে সরকারী সিকিউরিটিজ ব্যতীত বাংলাদেশের যে কোন স্টক এক্সেচেঞ্জে লেনদেনযোগ্য এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের স্টকস, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট, বন্ড, ডিবেঞ্চার বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ বুঝাবে।
(৫) উপরোক্ত উপ-অনুচ্ছেদ-(১), (২), (৩) ও (৪) ক্রমিকে বর্ণিত করদাতা ব্যতীত অন্যান্য সকল শ্রেণীর করদাতার শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয় পূর্বের মত আয়কর মুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।
(৬) এ এসআরও টি ১ জুলাই, ২০১০ হতে কার্যকর হবে। অর্থাৎ এ বিধান ১ জুলাই, ২০১০ হতে লেনদেনকৃত সিকিউরিটিজের বেলায় প্রযোজ্য হবে।
১৩। এনার্জি সেভিং বাল্ব, সোলার এনার্জি প্যানেল ও জন্ম নিরোধে ব্যবহার্য দ্রব্যাদি উৎপাদনে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানকে কর অবকাশ সুবিধা প্রদান [section 46B]:
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের section 46B এর sub-section (2) এর clause (a)(i) সংশোধনের মাধ্যমে কর অবকাশ সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শিল্পের পাশাপাশি নতুন তিনটি খাত- এনার্জী সেভিং বাল্ব, সোলার এনার্জী প্যানেল ও জন্ম নিরোধে ব্যবহার্য দ্রব্যাদি (barrier contraceptive or rubber latex) উৎপাদনে নিয়োজিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসম-হকে অনত্মর্ভুক্ত করা হয়েছে।
(খ) আয়কর অধ্যাদেশের section 46B এর sub-section (4) এ নতুন clause (f) সংযোজনের মাধ্যমে কর অবকাশ সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে করদাতা কোম্পানীকে প্রত্যেক বছরের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র সংগ্রহের শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
উপরোক্ত বিধানটি ১/৭/২০১০ বা তৎপরবর্তিতে দাখিলকৃত কর অবকাশের আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
১৪। কতিপয় ক্ষেত্রে উৎসে কর আহরণের হার বৃদ্ধি বা আওতা সম্প্রসারণ বা বিলোপঃ
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের Chapter VII এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এর সংশ্লিষ্ট বিধিতে বর্ণিত কতিপয় উৎসে আয়কর কর্তনের/সংগ্রহের বিধানসমূহ সংশোধন করে হার বৃদ্ধি বা আওতা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এছাড়া দু’টি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এ বিধানসমূহ ১ জুলাই, ২০১০ থেকে কার্যকর। নিম্নে অধ্যাদেশের সংশ্লিষ্ট ধারা, খাতসমূহের নাম ও উৎসে আয়কর কর্তনের/সংগ্রহের সংশোধিত হার সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা হলোঃ

ক্র:নং: সংশ্লিষ্ট ধারা ও বিধি খাত সংশোধিত হার
১। section 52/
rule 16
ঠিকাদার ও সরবরাহকারী ৫ লক্ষ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শূন্য। ২ লক্ষ টাকার বেশী থেকে ৫ লক্ষ পর্যন্ত ১%। টাকার বেশী থেকে ১৫ লক্ষ পর্যন্ত ২.৫% ১৫ লক্ষ টাকার বেশী থেকে ২৫ লক্ষ পর্যন্ত ৩.৫% ২৫লক্ষ টাকার বেশী থেকে ৩ কোটি পর্যন্ত ৪% ৩ কোটি টাকার উপরে ৫%
২। section 52(1) ইন্ডেন্টিং কমিশন ৭.৫%
৩। section 52AA স্টিভেডরিং এজেন্সি কমিশন ও প্রাইভেট সিকিউরিটি সার্ভিস ফিস ১০%
৪। section 52AAA সিএন্ডএফ এজেন্সি কমিশন ১০%
৫। section 52C সরকার কর্তৃক সম্পত্তি অধিগ্রহণ সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকার বাইরে ক্ষতিপুরণ মূল্যের উপর ১%। উলেস্নখ্য সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ক্ষতিপূরণ মূল্যের উপর ২% হারে উৎসে কর কর্তনের বিধান অপরিবর্তিত আছে।
৬। section 52D সঞ্চয়পত্র সুদ/মুনাফা যে কোন পরিমাণ সুদ প্রাপ্তির উপর ১০% হারে। পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য নয়। এছাড়া, অনুমোদিত সুপারএ্যানুয়েশন ফান্ড,পেনশন ফান্ড, গ্রাচুইটি ফান্ড, স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না।
৭। section 52F ইট ভাটা এক সেকশন-৩০,০০০/- টাকা, দুই সেকশন-৪৫,০০০/- টাকা এবং তিন সেকশন-৬০,০০০/-
৮। section 52M ফ্রেইট ফরোয়ার্ড এজেন্সি কমিশন ১৫%
৯। section 53/rule 17A আমদানী ৫% উৎসে আয়কর কর্তন মুক্ত পণ্যের তালিকা ও এ সংক্রান্ত বিধি সংশোধন করা হয়েছে।
১০। section 53BB গার্মেন্টস রপ্তানীকারকের রপ্তানী মূল্য ০.৫০%
১২। section 53BBBB গার্মেন্টস ব্যতীত অন্যান্য রপ্তানীকারকের রপ্তানী মূল্য ০.৫০%
১৩। section 53CC নন-রেসিডেন্টের কুরিয়ার ব্যবসা ১৫%
১৪। section 53EE ফরেন বায়ার্স এজেন্ট কমিশন ৭.৫%
১৫। section 53FF রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের বিল্ডিং/ এ্যাপার্টমেন্ট হস্তান্তর (ক) ঢাকার গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, ডিওএইচএস,ধানমন্ডি, লালমাটিয়া,উত্তরা, বসুন্ধরা, মতিঝিল,দিলকুশা,ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও কারওয়ান বাজার এবং চট্টগ্রামের খুলশী,আগ্রাবাদ ও পাঁচলাইশ এলাকার জন্য প্রতি বর্গমিটার ২,০০০/- টাকা। (খ) অন্যান্য সকল এলাকার জন্য প্রতি বর্গমিটার ৮০০/- টাকা।
১৬। section 53G ইন্স্যুরেন্স কমিশন ৫%
১৭। section 53GG জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সার্ভেয়ারের কমিশন ১৫%
১৮। section 53I পোষ্ট অফিস সেভিংস হিসাবের সুদ সুদের পরিমাণ নির্বিশেষে প্রাপ্তির উপর ১০% হারে।
১৯। section 53L (নতুন সংযোজিত) প্রিমিয়ামসহ শেয়ার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোম্পানীর নিকট থেকে প্রিমিয়ামের উপর ৩%
২০। section 53M (নতুন সংযোজিত) স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার বা ডিরেক্টরদের শেয়ার হস্তান্তর ৫%


(খ) section 49 Gi sub-section (1) এর clause (zn) Ges section 52L বিলোপের মাধ্যমে ট্রাস্টি ফিস হতে উৎসে আয়কর কর্তনের বিধান বাতিল করা হয়েছে। এ বিধান ১ জুলাই, ২০১০ থেকে কার্যকর হবে।

(গ) Income-tax (Amendment) Act, 2010:
অর্থ বছর ২০১০-২০১১ এর বাজেট কার্যক্রমের বাইরে বিগত ০২ জুন, ২০১০ তারিখে আয়কর অধ্যাদেশের section 53FF এবং section 53H সংশোধনের লক্ষ্যে উত্থাপিত বিল পরবর্তীতে জাতীয় সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং ১৬ জুন, ২০১০ তারিখে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। এ আইন Income-tax (Amendment) Act, 2010 (২০১০ সনের ২৭ নং আইন) নামে অভিহিত (পরিশিষ্ট-৩)। এ আইনের মাধ্যমে নিম্নরূপ বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে, যথা:-
(১) আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর Income-tax (Amendment) Act, 2010 সংশোধনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাইরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ে নিয়োজিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যে কোন মূল্যের অকৃষি জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে জমির দলিল মূল্যের উপর ১% হারে উৎসে কর সংগ্রহের বিধান করা হয়েছে।

(২) আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর section 53H এর-

  • sub-section (2) এর clause (e) বিলোপ করার মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের আওতা বহির্ভুত এলাকায় অবস্থিত যে কোন মূল্যের অকৃষি সম্পত্তি হস্তান্তর ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর সংগ্রহের বিধান করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি ১৭ও সংশোধন করা হয়েছে। ফলে যে কোন মূল্যের অকৃষি সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ১% হারে উৎসে কর প্রযোজ্য হবে।
  • ব্যাংক সহ যেকোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট সম্পত্তি বন্ধকের ক্ষেত্রে উৎসে কর সংগ্রহ প্রযোজ্য হবে না।
  • এ ধারার ব্যাখ্যায় “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” এর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক এবং বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা এর পরিবর্তে বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, section 53FF বা section 53H ধারার সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত জমি বা সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ২% হারে উৎসে আয়কর সংগ্রহের বিদ্যমান হার অপরিবর্তিত আছে।

১৫। অগ্রিম আয়কর প্রদানের জন্য সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের সীমা বৃদ্ধি [section 64]:

আয়কর অধ্যাদেশ এর section 64-

(ক) এর sub- section (1) সংশোধনের মাধ্যমে অগ্রিম কর প্রদানের জন্য ন্যুনতম আয়সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে;

(খ) এর sub- section (2) সংশোধনের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন জনিত আয়কে অগ্রিম করের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, পূর্ববর্তী বিধান অনুযায়ী কৃষি আয় বা মূলধনী মূনাফা হতে অর্জিত আয়ের জন্য অগ্রিম আয়কর প্রদেয় ছিল না। সংশোধিত আইন অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন হতে করযোগ্য আয়সহ যে কোন করদাতার সর্বশেষ নিরূপিত আয় ৪ লক্ষ টাকার বেশী হলে সেক্ষেত্রে উক্ত করদাতাকে শেয়ার লেনদেনের অর্জিত আয়ের ভিত্তিতে চার কিস্তিতে অগ্রিম আয়কর প্রদান করতে হবে। উল্লেখ্য,যে সকল করদাতার স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত কোম্পানীর শেয়ার লেনদেন হতে অর্জিত আয় কর অব্যাহতি প্রাপ্ত তাদের ক্ষেত্রে এ খাতের আয়ের উপর অগ্রিম আয়কর প্রযোজ্য হবে না।

১ জুলাই, ২০১০ বা তৎপরবর্তীতে প্রদেয় অগ্রিম আয়করের বেলায় এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৬। নতুন করদাতার ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যুনতম আয়সীমা বৃদ্ধি [section 68 সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 68 সংশোধনের মাধ্যমে নতুন করদাতাদের ক্ষেত্রেও অগ্রিম আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম আয়সীমা ৩ লক্ষ টাকা হতে ৪ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

১৭। প্রদেয় অগ্রিম আয়কর পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সরল সুদ গণনার নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন [section 73 সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 73(2) সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত বিধান অনুযায়ী প্রদেয় অগ্রিম আয়কর পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সরল সুদ গণনা শুরুর নির্ধারিত তারিখ আয় বছরের ‘১লা জুলাই’ এর পরিবর্তে ‘১লা এপ্রিল’ করা হয়েছে। ২০১০-২০১১ কর বছর থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৮। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ণ দাখিল সংক্রান্ত বিধান সংশোধন [section 75(3) এর দ্বিতীয় proviso বিলোপ এবং [section 82BB সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 75(3) এর দ্বিতীয় proviso বিলোপ এবং section 82BB এর sub-section (2) সংশোধনের মাধ্যমে নিম্নোক্ত বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে-
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের section 75(3) এর দ্বিতীয় proviso বিলোপের মাধ্যমে সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ণ দাখিলের নির্ধারিত সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য উপ কর কমিশনারকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ করদাতার আবেদনের প্রেক্ষিতে উপ কর কমিশনার নিজ ক্ষমতাবলে সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ণ দাখিলের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ৩ মাস পর্যন্ত এবং পরিদর্শী যুগ্ম/অতিরিক্ত কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে আরও ৩ মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবেন।

(খ) আয়কর অধ্যাদেশের section 82BB(2) সংশোধনপূর্বক section 75এর sub-section (3) অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে উপ কর কমিশনার কর্তৃক বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে দাখিলকৃত রিটার্ণ আয়কর অধ্যাদেশের section 74 এর শর্ত অনুযায়ী কর পরিশোধ সাপেক্ষে সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতির আওতায় রিটার্ণ হিসেবে গণ্য করার বিধান করা হয়েছে।

তবে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত তারিখ বা সরকার কর্তৃক বর্ধিত সময়ের মধ্যে করদাতা কর্তৃক সময় বৃদ্ধির আবেদন না করা হলে বা উপ কর কমিশনার কর্তৃক বর্ধিত সময়ের পর দাখিলকৃত রিটার্ণ সর্বজনীন স্বনির্ধারণী রিটার্ন বলে গণ্য হবে না।

উপরের বিধানাবলী ২০১০-২০১১ কর বছর থেকে প্রযোজ্য হবে।

১৯। তিনটি নতুন খাতে উৎসে কর্তিত বা সংগৃহীত আয়কর চুড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করার বিধান প্রবর্তন ও একটি খাত বিলোপ [section 82C সংশোধন]:
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের section 82C এর sub-section (2) এ নতুন ৩টি clause সংযোজন এবং sub-section (4) সংশোধনের মাধ্যমে চুড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করার জন্য নিম্নোক্ত তিনটি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যথা:-
(১) সরকার কর্তৃক ভূমি অধিগ্রহণের প্রেক্ষিতে প্রদত্ত ক্ষতিপুরণের উপর উৎসে কর্তিত কর [section 52C];

(২) প্রিমিয়ামসহ শেয়ার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম মূল্যের উপর উৎসে সংগৃহীত কর [section 53L]; এবং

(৩) স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত কোন কোম্পানীর শেয়ারহোল্ডারের/ মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট হোল্ডার/প্লেসমেন্ট হোল্ডার কর্তৃক শেয়ার/ মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট/প্লেসমেন্ট শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে হস্তান্তরজনিত আয়ের উপর উৎসে সংগৃহীত আয়কর [section 53M];

(খ) আয়কর অধ্যাদেশের section 82C এর sub-section (2) এর clause (e) বিলোপ এবং sub-section (4) সংশোধনের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র হতে প্রাপ্ত সুদ/মুনাফার বিপরীতে কর্তিত কর চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করার বিধান বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, বর্তমান আইন অনুযায়ী যে কোন সময়ে ক্রয়কৃত সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত সুদ/মুনাফার উপর সাধারণ হারে কর আরোপন হবে। আয়কর অধ্যাদেশের Sixth Schedule এর paragraph 31B অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের সুদ বাবদ প্রাপ্ত ২৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। তবে ২৫,০০০/- টাকার বেশী সুদ প্রাপ্ত হলে সম্পূর্ণ সুদ মোট আয়ের সাথে যুক্ত হবে এবং প্রযোজ্য হারে কর আরোপিত হবে।

২০১০-২০১১ কর বছর থেকে এ বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

২০। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে দাখিলকৃত রিটার্ণ নিরীক্ষাপূর্বক এ্যাসেসমেন্ট সম্পন্নের সময়সীমা সংক্রান্ত বিধান [section 94 সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 94 এর sub-section (1A) এর clause (b) বিলোপের মাধ্যমে সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে দাখিলকৃত রিটার্ণ কর বছর সমাপ্তির পরবর্তী সর্বোচ্চ ২ বছরের মধ্যে নিরীক্ষাপূর্বক এ্যাসেসমেন্ট কার্যক্রম সম্পন্নের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। পূর্বের আইন অনুযায়ী রিটার্ণ দাখিলের তারিখ হতে ১৫ মাসের মধ্যে নিরীক্ষাপূর্বক এ্যাসেসমেন্ট সম্পন্নের বিধানটি বিলোপ করা হয়েছে। ২০১০-২০১১ কর বছর থেকে এ বিধানটি প্রযোজ্য হবে।

২১। হিসাবের খাতাপত্রের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক রেকর্ড বা সিস্টেম তল্লাশী অথবা জব্দ করার ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধান [section 117 সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 117 এর sub-section (1), (2), (4), (5), (6), (7), (8) ও (9) সংশোধনের মাধ্যমে করদাতাদের হিসাবের খাতাপত্রের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক রেকর্ডস বা সিস্টেম তল্লাশী অথবা জব্দ করার ক্ষমতা আয়কর কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। ০১/০৭/২০১০ থেকে এ বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

২২। সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল এর সাক্ষ্য প্রমান গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান সংক্রান্ত বিধান [section 122 সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 122 সংশোধনের মাধ্যমে তথ্য উদ্‌ঘাটন ও পরিদর্শন, বক্তব্য বা ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য যে কোন ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, হিসাব ও প্রমানাদি উপস্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট করদাতা বা তার প্রতিনিধির শপথ গ্রহণপূর্বক বক্তব্য নেয়ার ক্ষমতা অন্যান্য আয়কর কর্তৃপক্ষের ন্যায় সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলকেও দেয়া হয়েছে। ০১/০৭/২০১০ থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

২৩। জাল করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ব্যবহারের জন্য জরিমানা/ শাস্তির বিধান [section 124A এবং section 165A]:
জাল করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীর উপর আর্থিক জরিমানা আরোপ সহ কারাদশের বিধান করা হয়েছে। এলক্ষ্যে অধ্যাদেশে নতুন দুটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে,যা নিম্নরূপঃ
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের section 124A সংযোজনের মাধ্যমে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া যদি কোন ব্যক্তি অন্যের টিআইএন ব্যবহার করেন অথবা জাল টিআইএন ব্যবহার করেন বা আয়কর আইন অনুযায়ী যে সব ক্ষেত্রে টিআইএন ব্যবহার বাধ্যতামূলক, সেসব ক্ষেত্রে জাল প্রমাণপত্র ব্যবহার করলে, জাল টিআইএন ব্যবহারকারীর উপর সংশ্লিষ্ট উপ কর কমিশনার কর্তৃক সর্বোচ্চ ২০,০০০/- টাকা জরিমানা আরোপের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। তবে জরিমানা আরোপের পূর্বে section 130 এর বিধান পরিপালন করতে হবে।

(খ) আয়কর অধ্যাদেশের section 165A সংযোজনের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে (deliberately) যদি কোন ব্যক্তি জাল টিআইএন ব্যবহার করেন বা অন্যের টিআইএন ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদন্ড বা ৫০,০০০/- টাকা অর্থন্দ বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে।

০১/০৭/২০১০ থেকে এ বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

২৪। টিআইএন সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক সংক্রান্ত তিনটি নতুন বিধান [section 184A]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 184A তে ৩টি নতুন clause সংযোজনের মাধ্যমে তিনটি ক্ষেত্রে টিআইএন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যা নিম্নরূপঃ
(ক) সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর আওতাধীন এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গ্যাস সংযোগের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে [clause (q)];

(খ) সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর আওতাধীন এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে [clause (r)]; এবং

(গ) ভাড়ায় চালিত বাস, ট্রাক, প্রাইম মুভার, লরী বা এরূপ পরিবহনের রেজিষ্ট্রেশন বা ফিটনেস নবায়নের সময় বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে [clause (s)]|
০১/০৭/২০১০ থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

২৫। Spot assessment সংক্রান্ত বিধান [section 184B এবং rule 24, rule 38B সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 82D অনুযায়ী spot assessment এর আওতাভুক্ত করদাতাদের জন্য বিদ্যমান বিধান সংশোধন করা হয়েছে, যা নিম্নরূপঃ
(ক) আয়কর অধ্যাদেশের section 184B তে নতুন proviso সংযোজনের মাধ্যমে section 82D অনুযায়ী spot assessment এর আওতাভূক্ত নতুন করদাতাদেরকে টিআইএন এর জন্য আলাদাভাবে আবেদন দাখিল বা ১,০০০/- টাকা আয়কর পরিশোধ হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে;

(খ) আয়কর বিধিমালার rule 24 G sub-rule (1aaa) সংযোজনের মাধ্যমে Spot assessment এর আওতাভুক্ত করদাতাদের জন্য দুই পৃষ্ঠার রিটার্ণ ফরম (IT-11GAGA) চালু করা হয়েছে।

(গ) আয়কর বিধিমালার rule 38B সংশোধন করে spot assessment এর আওতাভুক্ত করদাতাদের জন্য করহার ও ভিত্তি নিম্নরূপভাবে সংশোধন করা হয়েছেঃ
(১) ব্যবসায় নিয়োজিত করদাতাদের ক্ষেত্রেঃ
এলাকা নির্বিশেষে যাদের প্রারম্ভিক পুঁজি অনুর্দ্ধ ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তাদের জন্য প্রদেয় আয়কর ২,০০০/- টাকা এবং এলাকা নির্বিশেষে যাদের প্রারম্ভিক পুঁজি ৮ লক্ষ টাকার বেশী কিন্তু ১০ লক্ষ টাকার উর্দ্ধে নয় তাদের জন্য প্রদেয় আয়কর ৪,০০০/- টাকা।

(২) পেশার (ডাক্তার ও আইনজীবীদের জন্য প্রযোজ্য) ক্ষেত্রেঃ
এলাকা নির্বিশেষে যে সকল পেশাজীবী অনুর্ধ ৫ বছর পর্যন্ত পেশায় নিয়োজিত আছেন তাদের জন্য প্রদেয় আয়কর ২,০০০/- টাকা এবং এলাকা নির্বিশেষে যে সকল পেশাজীবী ৫ বছরের বেশী কিন্তু ১০ বছরের কম সময়কাল পেশায় নিয়োজিত আছেন তাদের জন্য প্রদেয় আয়কর ৪,০০০/- টাকা;

উভয় ক্ষেত্রে প্রদত্ত করের বিপরীতে সাধারণ পদ্ধতিতে আয় পরিগণনা করতে হবে। অর্থাৎ ৬৫ বছর বয়সের নীচের একজন পুরুষ করদাতা যদি ২,০০০/- টাকা আয়কর পরিশোধ করেন, তাহলে তার আয় প্রদর্শিত/নিরূপিত হবে (১,৬৫,০০০/- + ২০,০০০) ১,৮৫,০০০/- টাকা। কেননা ১,৬৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত পরবর্তী ধাপে ১০% হারে প্রদত্ত ২,০০০/- টাকা করের বিপরীতে আয় দাঁড়ায় ২০,০০০/- টাকা। তেমনিভাবে, একজন মহিলা করদাতা ২,০০০/- টাকা আয়কর পরিশোধ করলে তাঁর ক্ষেত্রে আয় প্রদর্শিত/নিরূপিত হবে (১,৮০,০০০/- + ২০,০০০) ২,০০,০০০/- টাকা। তেমনিভাবে ৬৫ বছরের নিচের একজন পুরুষ করদাতা বা ৬৫ বছরের উপরের পুরুষ করদাতা এবং মহিলা করদাতা ৪,০০০/- টাকা আয়কর প্রদান করলে তাদের ক্ষেত্রে মোট আয় প্রদর্শিত/নিরূপিত হবে যথাক্রমে ২,০৫,০০০/- এবং ২,২০,০০০/- টাকা।

(৩) এ পদ্ধতির আওতায় নির্ধারিত আয়করের পরিমাণ পরবর্তী ২টি কর বছরের জন্য একই থাকবে।

২০১০-২০১১ কর বছর থেকে এ বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

২৬। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার সংক্রান্ত [section 184D সংশোধন]:
আয়কর অধ্যাদেশের section 184D সংশোধনের মাধ্যমে নিম্নরূপভাবে আর্থিক পুরস্কার দেয়ার বিধান করা হয়েছে-
(ক) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এর অধীন আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর ফাঁকি উদঘাটন ও আদায়ের জন্য এবং অন্যান্য ব্যক্তিদেরকে আয়কর ফাঁকি সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহের জন্য;

(খ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এর অধীন আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সংশ্লিষ্ট অর্থ বছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের জন্য।

(গ) এ বিষয়ে প্রণীত বিধি দ্বারা উপরোক্ত পুরস্কার নির্ধারিত হবে।

২৭। আয়কর কর্তৃপক্ষকে আইন শৃংখলা বাহিনীসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সহায়তা প্রদানের নতুন বিধান [section 184E]:
আয়কর অধ্যাদেশে section 184E সংযোজনের মাধ্যমে আয়কর আইন অনুযায়ী কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য আয়কর কর্তৃপক্ষকে শুল্ক ও মূসক কর্তৃপক্ষ, দুর্ণীতি দমন কমিশন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, অন্যান্য সরকারী দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার সিকিউরিটি গার্ড, র‌্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সহ অন্যান্য বেসরকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান নিশ্চিতকল্পে বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে।

২৮। আয়কর অধ্যাদেশের Third Schedule এর সংশোধন:
আয়কর অধ্যাদেশের Third Schedule এর ক্ষেত্রে নিম্নরূপ সংশোধনী আনা হয়েছে-
(ক) paragraph (2) এর sub-paragraph (1), (2) ও (3) সংশোধনের মাধ্যমে ব্যবসায়/পেশার আয় নিরূপনের ক্ষেত্রে "physical infrastructure undertaking" এর সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভারের উপর অবচয় ভাতা প্রদানের বিধান করা হয়েছে;
(খ) paragraph (3) সংশোধনের মাধ্যমে physical infrastructure undertaking এর সেতু বা সড়ক বা ফ্লাইওভারের উপর প্রতিটির জন্য ১% হারে অবচয় ভাতা প্রদানের বিধান করা হয়েছে; এবং

(গ) paragraph (7) সংশোধনের মাধ্যমে মেশিনারী ও প্লান্টের উপর ত্বরায়িত অবচয় অনুমোদনের বিধান জুন, ২০১০ হতে বৃদ্ধি করে জুন, ২০১২ পর্যন্ত করা হয়েছে।

২০১০-২০১১ কর বছর থেকে এ বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

২৯। আয়কর অধ্যাদেশের Sixth Schedule এর Part-A সংশোধন:
আয়কর অধ্যাদেশের Sixth Schedule এর Part-A এর-
(ক) Paragraph (34) সংশোধনের মাধ্যমে নিম্নোক্ত বিধান করা হয়েছে-
(১) Pelleted poultry feed উৎপাদন থেকে উদ্ভূত আয় করমুক্ত রাখার বিধান বিলোপ করা হয়েছে। তবে ৩০ জুন, ২০১০ পর্যন্ত এ খাতের উদ্ভূত আয় করমুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।

(২) কোম্পানীশ্রেণীর করদাতাদের মৎস্য খামার হতে উদ্ভূত আয় করমুক্ত রাখার বিধান বিলোপ করা হয়েছে। তবে ৩০ জুন, ২০১০ পর্যন্ত এ খাতের উদ্ভূত আয় করমুক্ত হিসেবে গণ্য হবে। ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের এ খাতের আয় পূর্বের ন্যায় করমুক্ত থাকবে।

(খ) Paragraph (41) বিলোপের মাধ্যমে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের সুদ করমুক্তের বিধান বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ ১ জুলাই, ২০১০ বা তৎপরবর্তীতে প্রাপ্ত সুদ গ্রহীতার হাতে করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হবে।

৩০। আয়কর অধ্যাদেশের Eighth Schedule G এ সংশোধন:
আয়কর অধ্যাদেশের Chapter VII এবং এতদসংশ্লিষ্ট বিধিমালায় উৎসে আয়কর কর্তন সম্পর্কিত বিধি বিধানের পরিবর্তন অনুযায়ী আয়কর অধ্যাদেশের Eighth Schedule সংশোধন করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য,Eighth Schedule এর বিষয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হলে Chapter VII এ বর্ণিত ধারা বা আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এর সংশ্লিষ্ট বিধি প্রাধান্য পাবে।

(মোঃ রুহুল আমিন)
প্রথম সচিব (আয়কর নীতি)।

Paripatra-2 2010-2011

পরিপত্র-২ অর্থ বছর ২০১০-২০১১ 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
রাজস্ব ভবন
সেগুনবাগিচা, ঢাকা।
নথি নং-জারাবো/ কর-৭/আ:আ:বি:/৩/২০১০/১৬৪ তারিখ:২৩/০৯/২০১০।
পরিপত্র নং-২ (আয়কর)

বিষয়: আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর Sixth Schedule  এর  Part-A এর Paragraph ৩৪ এ বর্ণিত উৎসে আয়ের ১০% বন্ড বা সিকিউরিটি  ক্রয়ে বিনিয়োগ সংক্রান্ত।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর Sixth Schedule এর Part-A এর Paragraph ৩৪ এর বিধান অনুসারে নিম্নোক্ত খাতসমূহের আয়কে কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
(ক) মৎস্য খামার হতে আয়;
(খ) হাঁস-মুরগীর খামার;
(গ) pelleted poultry feed উৎপাদন;
(ঘ) বীজ উৎপাদন;
(ঙ) স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপনন;
(চ) গবাদি পশুর খামার;
(ছ) দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার;
(জ) ব্যাঙ উৎপাদন খামার;
(ঝ) উদ্যান খামার প্রকল্প (horticulture);
(ঞ) রেশম গুটিপোকা পালনের খামার;
(ট) ছত্রাক (mushroom) উৎপাদন; এবং
(ঠ) ফুল ও লতাপাতার চাষ।
তবে এখাত থেকে কোন করদাতার আয় ১, ৫০, ০০০/- (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকার বেশী হলে মোট আয়ের ১০% অর্থবছর শেষ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে বন্ড বা সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের শর্ত আছে।   

০২। উলেস্নখ্য, অর্থ আইন, ২০১০ এর মাধ্যমে ১/৭/২০১০ তারিখ থেকে production of pelleted poultry feed এবং কোম্পানী করদাতাদের মৎস্য চাষ হতে উদ্ভুত আয়কে হ্রাসকৃত হারে করারোপ করা হয়েছে।

০৩। উপরোক্ত Paragraph ৩৪ বা অধ্যাদেশের section ২ এ বন্ড বা সিকিউরিটির কোন সংজ্ঞা নেই। এ শ্রেনীর করদাতাগণ  সাধারনত: ৩-বছর মেয়াদী বিনিয়োগ বন্ডে বিনিয়োগ করতেন। অভ্যনত্মরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক ৩-বছর মেয়াদী বিনিয়োগ বন্ড বিক্রয় বন্ধ করে দেওয়ায় আয়কর আইনের শর্ত পরিপালনের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের উপর বাধ্যকতামূলক বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে  জটিলতা দেখা দিয়েছে।

০৪। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ মর্মে সঙষ্টীকরণ করছে যে, The Securities Act, ১৯২০ এবং The Public Debt Act, ১৯৪৪ অনুযায়ী “সঞ্চয়পত্র” সিকিউরিটিজ হিসাবে গণ্য হবে। Sanchayapatra Rules, ১৯৭৭  অনুযায়ী কেবল ব্যক্তিগণ (individual) “৩ মাস অনত্মর  মুনাফা  ভিত্তিক  সঞ্চয়পত্র” এবং “৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র” ক্রয় করতে পারতেন। ব্যক্তি ভিন্ন অংশিদারী ফার্ম, কোম্পানী বা অন্য শ্রেণীর করদাতাগণের ক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করার কোন সুযোগ ছিল না। অভ্যনত্মরীণ সম্পদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন নং অম/অসবি/সঞ্চয়-৮/২০০২/২২৭ তারিখ: ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০ এর মাধ্যমে Sanchayapatra Rules, ১৯৭৭ সংশোধন করেছে। সংশোধিত বিধান অনুযায়ী আয়কর অধ্যাদেশ এর Sixth Schedule এর  Part-A এর Paragraph ৩৪ এ বর্ণিত আয়ের জন্য “৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র” তে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে এজন্য সঞ্চয়পত্র ক্রয়কালে তাদের এরূপ উৎসের আয় আছে মর্মে সংশ্লিষ্ট উপ কর কমিশনারের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।

০৫। এমতাবস্থায়, আয়কর অধ্যাদেশ এর Sixth Schedule এর  Part-A এর Paragraph ৩৪ এর শর্তানুযায়ী ১,৫০,০০০/- টাকার বেশী করমুক্ত আয় আছে এরূপ করদাতাগণ (ব্যক্তি, অংশিদারী ফার্ম ও কোম্পানী নির্বিশেষে) তাদের মুনাফার ১০% “৫-বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র” বিনিয়োগ করতে পারবেন। সঞ্চয়পত্র ক্রয়কালে তাদের এরূপ উৎসের আয় আছে মর্মে সংশ্লিষ্ট উপ কর কমিশনারের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে।


(মোঃ রুহুল আমিন)
প্রথম সচিব (আয়কর নীতি)।
টেলিফোন: ৯৩৪ ১৫৪৮।